আলাউদ্দিন হোসেন,পাবনা: অবশেষে পরিবারে আশংকাই সত্য হলো। পাবনায় নিখোঁজ কৃষক খালেকের সন্ধানে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করার পর বিকালে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৫ দিন নিখোঁজ থাকার পর মঙ্গলবার (২১ জুলাই) বিকেলে জেলার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের চৌকিবাড়ি গ্রামের ইছামতি নদী থেকে কৃষক খালেক খাঁনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত খালেক পাবনা সদর উপজেলার বরামপুর হাজিরহাট এলাকার শামসুদ্দিন খাঁনের ছেলে। সাবেক স্ত্রী বীনা পরিকল্পিত ভাবে খালেককে ডেকে নিয়ে হত্যা বা গুম করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে আশংকা করা হয়েছিল।
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিক জানান, মঙ্গলবার (২১ জুলাই) বিকেলে একদন্ত ইউনিয়নের চৌকিবাড়ি গ্রামে ইছামতি নদীতে একটি মৃতদেহ পানিতে ভাসতে দেখে এলাকাবাসী থানায় জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে নিহতের ভাই খলিলুর রহমান লাশটি সনাক্ত করেন। তিনি আরো জানান, পুলিশ প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছে কয়েক দিন আগে কে বা কারা তাকে হত্যার পর নদীতে ফেলে রেখে গেছে। এ ঘটনায় আটঘরিয়া থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলোনায়তনে নিখোঁজ খালেকের সন্ধানে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করা হয়। এসময় তারা জানান, বলরামপুর হাজিরহাট এলাকার শামসুদ্দিন খাঁনের মেঝ ছেলে কৃষক মোঃ খালেক খাঁন (৪৮) ৫ দিন যাবত নিখোঁজ রয়েছে। তিনি দীর্ঘ দিন কুয়েত প্রবাসী ছিলেন। দেশে এসে কৃষি কাজ করছিলেন। তার নিখোঁজের রহস্য উদঘাটনের দাবী জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, গত ১৭ জুলাই বিকেলে নিখোঁজ খালেকের সাবেক স্ত্রী উম্মে কুলসুম বীনার মোবাইল ফোন পেয়ে খালেক বাড়ি থেকে বেড় হন। এসময় তিনি বর্তমান স্ত্রীকে বলে যান সাবেক স্ত্রীর কাছে থাকা তার ছোট সন্তানকে আনতে যাচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘ ৫দিন অতিবাহিত হলেও খালেক আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। নিখোঁজ খালেককে খুজে না পাওয়ায় চরম উৎকন্ঠ আর দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে পরিবার সদস্যরা। পরিবারের অভিযোগ নিখোঁজ খালেকের প্রথম তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী উম্মে কুলসুম বীনা ও তার স্বামী মোঃ শাহিদুল ইসলাম আসিফ পরিকল্পিত ভাবে খালেককে ডেকে নিয়ে হত্যা বা গুম করেছে। খালেক নিখোঁজের বিষয়ে ১৮ জুলাই পাবনা সদর থানায় জিডি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিবারে পক্ষে নিখোঁজের ছোট ভাই মোঃ আব্দুস ছালাম খাঁন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নিখোঁজ খালেকের বড় ভাই মোঃ খলিলুর রহমান খাঁন, স্ত্রী মোছাঃ সাদিয়া খাতুন ও চাচা মোঃ আলমগীর হোসেন খাঁন।
এব্যাপারে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আটঘরিয়া থানা এলাকায় উদ্ধারকৃত লাশটি নিখোঁজ খালেক খানের বলে তার ভাই খলিলুর রহমান সনাক্ত করেছেন। তবে অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই পুলিশ নিখোঁজ খালেককে উদ্ধারের জন্য তৎপর ছিল। থানায় দায়েরকৃত অভিযোগটি এখন নিয়মিত মামলায় রুপান্তর হবে।