নিজস্বতা
ইন্টারনেটের দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে ‘নিজস্বতা’। ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম ও টিকটকের এই যুগে সবাই চেষ্টা করছেন ভিন্ন কিছু দেখাতে ও নতুন কিছু নিয়ে হাজির হতে। এ দশকে প্রযুক্তিপ্রেমীরা শিখেছেন কিভাবে নিজেকে খুঁজে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে হয়, গণআন্দোলন ও সমাজ সংস্কারে শামিল হতে হয়।
গোপনীয়তা
সামাজিক মাধ্যম ও হরেক রকম ইন্টারনেট সেবার ভিড়ে গোপনীয়তা ঠিক রাখা বড় দায়। অনলাইনে গোপনীয়তা ফাঁসের মাশুল দিতে হয়েছে খ্যাতনামা তারকা থেকে শুরু করে অনেককেই। এ দশকে গোপনীয়তা নিয়ে হয়েছে ব্যবসা, বিশ্ব রাজনীতিতে পড়েছে প্রভাব এবং পরিবর্তন হয়েছে গতানুগতিক অনেক ধ্যান-ধারণার। সবমিলিয়ে এ দশক আমাদের গোপনতার প্রকৃত মূল্য সম্পর্কে ভাবতে শিখিয়েছে।
নতুন বন্ধু
আগের দশকে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকলেও তা এতো উন্নত ছিল না। গত দশ বছরে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন এসেছে ভয়েস অ্যাসিস্টেন্টে। এখন গাড়ি থেকে শুরু করে শোবার ঘরে পর্যন্ত দেখা মিলছে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের। ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়ার মতো কাজ থেকে শুরু করে টিভি চালু করে দেয়া, গাড়ি চালানোর সময় টেক্সট পড়ে শোনানো, আপনার হয়ে অনলাইনে পণ্য অর্ডার করার মতো কাজ করে দিতে পারে। সব মিলিয়ে এ দশকে আমরা ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের কার্যকরী ব্যবহার শিখেছি।
স্বাস্থ্য আপনার হাতে
স্বাস্থ্য এখন আক্ষরিক অর্থেই আপনার হাতে। জরুরি সব স্বাস্থ্য ডেটায় এখন চাইলেই নজর বুলিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে। সার্বক্ষণিক নজরে থাকছে হৃৎস্পন্দনের গতিসহ আরো অনেক কিছু। এ সবই সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্মিত নানা জাতের স্মার্টওয়াচের কল্যাণে।
অনলাইনের বিশ্বাস নেই
অতীতে এমন একটি সময় ছিল যখন মানুষ অনলাইন তথ্যের ওপর আস্থা রাখতেন। এখন আর ওই অবস্থা নেই। ইন্টারনেটজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে নানাবিধ ভুয়া ও ভ্রান্ত তথ্য। এরকম ভুয়া তথ্যের জালে পা দিয়েছেন অনেকেই। বিতর্কিত ঘটনাও ঘটেছে অনেক, ইন্টারনেটের ভুয়া তথ্যেরে কারণে মানুষের প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটেছে।
বাস্তবতা নিয়ে খেলা
এই দশকে আমরা দেখেছি ভার্চুয়াল জগতে চাইলেই বাস্তবতা নিয়ে খেলা সম্ভব। বদলে দেয়া সম্ভব নিজের বয়স, লিঙ্গ ও আরো অনেক কিছু। দেখে নেয়া সম্ভব ঠিক কীরকম লাগবে বুড়িয়ে গেলে বা অন্য লিঙ্গের অধিকারী হলে। এই দশক আমাদের শিখিয়েছে বাস্তবতার রূপ ‘তরল’। ভার্চুয়াল জগতের সাহায্যে বাসতবতা পুরোপুরি পরিবর্তন না করা গেলেও, নানাভাবে ও নানা ভঙ্গিতে দেখে নেয়া সম্ভব।
ভরসা রাখুন ক্লাউডে
আমরা এখন কম-বেশি সবাই ক্লাউডের ওপর নির্ভরশীল। ভেবে দেখুন তো, শেষ গানটি ডিভাইসের স্টোরেজ থেকে বাজিয়ে শুনেছিলেন না ইউটিউব বা এ জাতীয় কোনো সেবা থেকে। আপনার উত্তর যা-ই হোক না কেন, ঘুরেফিরে কিন্তু ওই ক্লাউডের উপরেই নির্ভরশীল আপনি। তবে, ক্লাউডে হারিয়ে যাওয়া মানা। সংবেনশীল ও স্পর্শকাতর জিনিসগুলো না হয় মাটিতেই রাখুন। এতে গোপনতাও ঠিক থাকবে, আবার রেহাই মিলবে নানাবিধ ঝামেলার আশঙ্কা থেকেও।
ইন্টারনেট ‘যা খুশি তা নয়’
এই দশকে প্রযুক্তিপ্রেমীরা শিখেছেন ইন্টারনেট চিরস্থায়ী। অতীতের কমেন্ট, পোস্ট, ছবি বয়ে আনতে পারে অনাকাক্সিক্ষত বিপত্তি। আগের তুলনায় অনেক সতর্কও হয়েছে প্রযুক্তিপ্রেমীরা। ইন্টারনেটে যা খুশি তা-ই করা যে ঠিক নয়, সে বিষয়টি আমাদের বুঝতে শিখিয়েছে এ দশক।