বন্যার পানিতে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের ব্রিজসহ রাস্তাঘাট ভেঙে যাচ্ছে
রুহুল আমিন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মেঘনার নদী ভাঙনের মুখে কদমচাল ও লাউরার দু’টি গ্রাম সহ নির্মাণাধীন রাস্তা বর্তমানে বন্যার পানিতে ৪টি ব্রিজের এপ্রোচ সহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে, একটি লাউরার ব্রিজ, অন্যটি শান্তিনগরের ব্রিজ। এছাড়াও মসজিদজাম ব্রিজটি গত সোমবার ভোরে একপাশে গর্ত হয়ে পানি চলাচল শুরু করেছে। এসব রাস্তায় যান চলাচল সহ সাধারণ লোকজনের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
অন্যদিকে বন্যার পানিতে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের কদমচাল ও বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নের লাউরা, নাজিরপুর এলাকায় নদীভাঙন সহ রাস্তা ভেঙে চুরমার। বিগত কয়েকবছর ধরে এই দু’টি এলাকায় ব্যাপক ভাঙনের ফলে স্থানীয় সংসদ রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক তাৎক্ষণিক ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিলেও ভাঙ্গন চলমান রয়েছে। এদিকে বাঙ্গালপাড়া হতে চাতলপাড় পর্যন্ত নদীর তীর ঘেঁষে ৩২ ফুট উচ্চতা ও ২৪ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট ৭ কিলোমিটার রাস্তা এলজিইডি নির্মাণ করে। রাস্তাটি ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডি কর্তৃক বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে দু’টি ব্রিজ ও রোড বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে গেছে।
অষ্টগ্রাম হাওরের সঙ্গে ঢাকা রাজধানী শহরের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে চাতলপাড় হয়ে নাসিরনগর, বি-বাড়িয়ার রাস্তাটি। এই রাস্তাটি বাঙ্গালপাড়া হতে নদীর পাড় ঘেঁষে চাতলপাড় পর্যস্ত যাওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে জিসি রোড সহ কয়েকটি গ্রাম। নদী হতে কোথাও ১০ ফিট আবার কোথাও ৫ ফিট আবার কোথাও কোথাও নদী ভেঙে পাড়ের সংলগ্ন এসে যায়। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদারের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, নদীভাঙন রোধে গতবছর ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। এবারও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে ।
গত ১৭/১৮/১৯ অর্থবছরে আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের কদমচাল বাজার ঘিরে সাড়ে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে ৫শ’ মিটার ভাঙন রোধে পিআইসি’র মাধ্যমে ডলি কন্সট্রাকশন কাজ করেছে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের আগেই দায়সারাভাবে কাজ করে চলে যান। কদমচাল এলাকার মো: কাইয়ুম খান জানান, ঠিকাদারের কাজের গুণগত মান ভালো না হওয়ায় মাস যেতে না যেতেই আবারও ভাঙন শুরু হয়। আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোক্তার খাঁ জানান, নদীভাঙন রোধে কাজ হয়েছিল তবে ভাঙন কমছে না। এভাবে ভাঙতে থাকলে হয়তো ডুবন্তবাঁধ সহ আব্দুল্লাহপুর বাজার পর্যন্ত ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন সাবডিভিশন সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান জানান, ২৫০ কেজি জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করেছি। তা কতটা টেকসই হবে বলা যাচ্ছে না।
কদমচাল এলাকার সাধারণ মানুষের দাবি কদমচাল আনোয়ারপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর বাড়ি হতে আবদুল্লাহপুর বাজার পর্যন্ত দ্রুতগতিতে ভাঙন রোধ করতে হবে। নতুবা ডুবন্ত বাঁধ সহ নদীর পাড়ের স্কুল কবরস্থান ও কয়েকটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান নদী তীরবর্তী ভাঙন রোধে মেগা প্রজেষ্ট তৈরি করছিলাম। অচিরেই এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। এভাবে নদী ভাঙনের ফলে হাওরে নির্মিত যোগাযোগ ব্যবস্থা আবারো সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।