বিএনপিকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে নইলে রাজপথেই জবাব দেয়া হবে: এমপি হানিফ
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, যারা ‘৭৫’র হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ বলে স্লোগান দেয় তাতে প্রমাণিত ৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এই বাংলাদেশে জাতির পিতাকে হত্যাকারীদের কোনো ঠাঁই নেই। তিনি বিএনপিকে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খানের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে সোমবার ৬ জুন বিকেলে কুষ্টিয়া পৌর বিজয় উল্লাস চত্বরে শহর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, সারা দেশের মানুষ তাদের ওই বক্তব্যের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে। জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য প্রত্যাহার করা না হলে রাজপথেই সমুচিত জবাব দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন হানিফ।
বিক্ষোভ সমাবেশে হানিফ পদ্মা সেতু নিয়েও বিএনপি’র মিথ্যাচারের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর নাকি বিএনপি সরকার করেছিল। এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচারের জন্য জাতি কখনো বিএনপিকে ক্ষমা করবে না।
তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতু যাতে করে বাস্তবায়ন না হয় সেই লক্ষ্যে বিএনপি নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করেছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সরকার সব ষড়যন্ত্র, সব বাধা উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে সেই সেতু বাস্তবায়নের কাজ শেষ করেছেন। আগামী ২৫ জুন সেই স্বপ্নের সেতুর উদ্বোধন হবে।
তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের উন্নয়ন করেনি। দুর্নীতি আর লুটপাট করে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছিল। এতিমের টাকা আত্মসাতের দায়ে তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ দণ্ডপ্রাপ্ত। অর্থ লুটপাট আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ছেলে তারেক রহমানও লন্ডনে পলাতক। তাদের মুখে দেশ ও দেশের উন্নয়নের কথা একদমই বেমানান।
কুষ্টিয়ার রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আমরা চেয়েছিলাম কুষ্টিয়ার মানুষ দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে সহাবস্থান করতে। সামাজিক দ্বন্দ্ব সংঘাতের ঊর্ধ্বে থেকে বসবাস করতে। কিন্তু বিএনপির কিছু নেতা সেই সহাবস্থান চান না। সামাজিক দ্বন্দ্ব সংঘাত তৈরি করে জেলাকে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। তাদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, পিঠ চুলকায়ে ঘা বানাবেন না। এর পরিণাম ভালো হবে না বলেও জানান তিনি।
বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাংসদ ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ। বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসান মেহেদী, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা প্রমুখ।
পরবর্তীতে প্রধান অতিথি মাহবুব উল আলম হানিফের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বড়বাজার রেলগেটে গিয়ে শেষ হয়। এতে কুষ্টিয়া পৌর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মী অংশ নেয়। উল্লেখ্য কুষ্টিয়া শহরে তিল পরিমান জায়গা ফাঁকা ছিল না। এত পরিমান নেতাকর্মীর আগমন ঘটেছিল উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠানে।