মহিলা কাউন্সিলরকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসের এডি’র বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে পৌর মেয়রের অভিযোগ
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক জাহিদুল হক এর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ এনে কুষ্টিয়া পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দ এবং পৌর মেয়র স্বাক্ষরিত অভিযোগ নিষ্পত্তি কর্মকর্তা ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে প্রেরণ করে।
ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২২ শে জুন বিকেল ৩ ঘটিকায় কুষ্টিয়া পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আনোয়ারা ইসলাম পাসপোর্ট আবেদন জমা দেয়ার জন্য কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক জাহিদুল হক এর চেম্বার এ যান।
তিনি সুকৌশলে তার চেম্বারে কাউন্সিলরকে বসিয়ে রেখে ৩য় তলায় চলে যান। অনেকক্ষণ অতিবাহিত হওয়ার পর উক্ত মহিলা কাউন্সিলর পৌর-ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা পরিচালক আরিফ নাজমুল হককে সাথে নিয়ে ৩য় তলায় গিয়ে সহকারী পরিচালকের রুমের দরজায় নক করে। এসময় তিনি দরজা খুলে বেরিয়ে এসে ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন উক্ত মহিলা কাউন্সিলর ও উদ্যোক্তা পরিচালককে। এর এক পর্যায়ে অফিসের অন্যান্য স্টাফদের দ্বারা লাঞ্ছিত করে অফিস থেকে বের করে দেন।
পরবর্তীতে উক্ত বিষয়টি নিয়ে পৌর-ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা পরিচালক মোঃ আরিফ নাজমুল হক মেয়র মহোদয়ের কাছে লিখিতভাবে বিষয়টি অবগত করেন। সেখানে কুষ্টিয়া পৌরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলরদের স্বাক্ষর ছিল।
কুষ্টিয়ার পৌর মেয়র আনোয়ার আলী বিষয়টি অবগত হওয়ার পর ২৩ জুন স্মারক সংখ্যা-কুপৌ ২০২২/৩০২৯ অনুযায়ী কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের, সহকারী পরিচালক মো : জাহিদুল হক কর্তৃক কুষ্টিয়া পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬ নং সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর আনোয়ারা ইসলাম এর সাথে অসদাচরনের বিষয়টি সুষ্ঠুতদন্ত স্বাপেক্ষে মো: জাহিদুল হক এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
অভিযোগ পত্রটি পৌর মেয়র সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকা। অতিরিক্ত সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকা। মহাপরিচালক, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, ই/৭ আগারগাঁও, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭। পুলিশ সুপার, কুষ্টিয়া। নির্বাহী প্রকৌশলী, কুষ্টিয়া পৌরসভা। পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা, কুষ্টিয়া পৌরসভা। উদ্যোক্তা পরিচালক, পৌর ডিজিটাল সেন্টার, কুষ্টিয়া পৌরসভা ও অফিস নথি, কুষ্টিয়া পৌরসভাকে প্রেরণ করেন।
এদিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার নারী কাউন্সিলর আনোয়ারা ইসলামের সাথে দুর্ব্যবহারের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন পৌরসভার একাধিক কাউন্সিলর। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ জাহিদুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সেদিন কি ঘটেছিল আপনারা অফিসে এসে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে যেয়েন। মূলত তৃতীয় তলায় কোন সিসিটিভি ফুটেজ নেই যে কারণে তিনি এ কথাগুলো বলেছেন।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ জাহিদুর হকের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। জনমনে একটাই প্রশ্ন জেগেছে তাঁর খুটির জোর কোথায় ? একাধিক সেবা প্রত্যাশী ভুক্তভোগীরা বলেন, তিনি শুধু কাউন্সিলরকেই লাঞ্ছিত করেন নাই । আমরা তার কাছ থেকে বারংবার লাঞ্চিত হয়েছি। এই সহকারী পরিচালক বিভিন্ন দপ্তরকে ম্যানেজ করে অর্থ-বাণিজ্য করে যাচ্ছেন। তাকে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।