মোংলা বন্দর কর্মচারী সংঘ (সিবিএর) সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ
আলী আজীম,মোংলাঃ
মোংলা বন্দর কর্মচারী সংঘ(সিবিএ)’র খুলনা শাখা কমিটি গঠন নিয়ে চলমান দন্ধে বেরিয়ে আসছে সংগঠনটির সাধারন সম্পাদকের নানা অনিয়মের তথ্য। এনিয়ে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছি সাধারন কর্মচারীদের মধ্যে। একই সাথে সাধারন সম্পাদকের অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে কার্যনির্বাহী কমিটির ১১ সদস্য। ওইসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বন্দর চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন জৈনক রফিকুল ইসলাম নামের এক কর্মচারী।
অভিযোগে বলা হয়, বর্তমান সিবিএর সাধারন সম্পাদক মোঃ ফিরোজ কর্মচারী ইউনিয়ন ও ব্যবস্থাপনা নির্ভরশীল চুক্তি ভঙ্গ করে মোংলা বন্দরে চাকুরীতে প্রবেশ করেন। বিধি বহিঃভুত ভাবে তার আরো এক ভাই মোঃ শাহিনকে গ্রীজার পদে একই নিয়মে চাকুরীতে প্রবেশ করান। তবে আবেদনে শাহিন কে নির্ভরশীল কোটা দেখানো হলেও ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করানো হয় জেলা কোটায়। তখন সাতক্ষিরা এলাকার কোন জেলা কোটা ছিলোনা। বয়স ধামাচাপা দিয়ে জাল সনদ তৈরী করে চাকুরীতে প্রবেশ করানো হয় শাহিন কে। ফিরোজ ও শাহিনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম স্বপন পুর্ব থেকে বন্দরে কর্মরত থাকায় তৎকালীন নিয়ম অনুযায়ায়ী দুইজনের চাকুরী নিয়মানুসারে অবৈধ দাবী করা হয়।
২০০২-২০০৩ সালে ক্লিনহার্ট অভিযানের সময় ৬/৭ মাস ছুটি না নিয়ে আত্বগোপনে থাকেন ফিরোজ । পরে বন্দরের কয়েকজন দুর্ণীতিবাজ কর্মকর্তার সহায়তায় ভুয়া মেডিকেল দিয়ে চাকুরীতে বহালহন। সিবিএর সাধারন সম্পাদক ফিরোজ বন্দরের হারবার বিভাগে লাইসেন্স ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন। সেই সুবাধে বন্দর সিমানায় চলাচলকারী সকল নৌযানের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি দেখিয়ে বিপুল পরিমান নগদ অর্থ আদায় করে আসছেন বলে অভিযোগে বলা হয়।
কিছু দিন পুর্বে বন্দরের কিছু কর্মচারীর পদোন্নতি হয়। যেখানে একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে ফিরোজ বহু টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে দাবি করা হয়। সাধারন সম্পাদকের পদ ব্যবহার করে বন্দর কতৃপক্ষের গাড়ী রিকুইজিশনের মাধ্যমে তার বিভিন্ন আত্বীয় স্বজনদের চলাচল করতে দেয়া হয়েছিলো বলে অভিযোগে উল্ল্যেখ আছে। একই সাথে ২০১০ সালে তিনি জাহাজ চলাচল সহকারী পদে পদোন্নতী গ্রহন করেন। কিন্ত ওই পদের কোন কাজ না করে ফিরোজ পোষ্টিং নেন ভান্ডার রক্ষক পদে। সেখানে থাকা অবস্থায় আবারও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে লাইসেন্স পরিদর্শক পদে পদন্নোতিনেন। নিয়ম অনুযায়ী তিন বছরের বাস্তব অভিঙ্গতা থাকার কথা থাকলে সে নিয়মও মানা হয়নি বলে দাবি করা হয়। সাধারন সম্পাদক ফিরোজ এর ভায়রা লাইসেন্স ব্যবহার করে বন্দরের হিরন পয়েন্ট নীল কমল খালের ড্রেজিং কাজ করান। সেখানে মাটি বা পলি নিয়মানুসারে খনন না করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তখন খনন কাজে ব্যস্ত থাকায় অফিসে দির্ঘ দিন অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। হাজিরা খাতায় পরে এসে সাক্ষর করে দিয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হয়। অভিযোগকারী উল্লেখ করেন,সাধারন সম্পাদক ফিরোজ ও তার ওইসব অবৈধ অর্থ দিয়ে কোটি টাকা খরচ করে বুড়িরডাঙ্গা এলাকায় ভুমি কিনেছেন। সদ্য একটি বিলাশ বহুল গাড়ীও কিনেছেন।
গেল ৩ নভেম্বর সংঘঠনটির খুলনা শাখা কমিটি গঠন নিয়ে কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতিকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠে। কার্য নির্বাহী কমিটির ১১ সদস্য ওই সময় আলাদা সভা করতে গেলে সাধারন সম্পাদক কিছু উশৃংখল কর্মচারীদের নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায় এমন দাবি করেন, সংগঠনের সভাপতি সাইজুদ্দিন মাস্টার। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে শান্ত হয় পরিবেশ। তিনি বলেন পরে তারা মোংলা ইপিজেডএর গেটে ইউরোপিয়ন মলে সাইজুদ্দিন মাস্টারের সভাপতিত্বে জরুরী সভা করেন। সেখানে কার্যনির্বাহী কমিটির কার্যকরি সভাপতি মুশফিকুর রহমান,অতিরিক্ত সম্পাদক জামাল উদ্দিন জাহিদ,সহ-সভাপতি সওকত আলী,যুগ্ন সম্পাদক মতিয়ার রহমান সাকিব,সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব আলম,সহ সাংগঠনিক এফএম শাহিন,দপ্তর সম্পাদক আকিচ আলী,কোষাধ্যক্ষ একেএম ফারুকুজ্জামান বকুল,প্রচার সম্পাদক ফরহাদ হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য ফজলুল হক। সেখানে সংগঠনের সহ সাধারন সম্পাদক মোঃ মতিয়ার রহমান সাকিব বক্তব্য রাখেন। সভায় সাকিব বলেন,বন্দরের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বন্দর পরিচালনা বোর্ড ও বন্দর চেয়ারম্যান মহোদয়কে তারা সর্বাত্বক সহায়তা করে যাবেন। একই সাথে তাদের সিবিএর কর্মকান্ডে যেন বন্দরে পন্য বোঝাই- খালাশ করতে কোন সমস্যায় পড়তে না সে দিকে নজর রাখতে সবার প্রতি আহবান জানান। সভায় সিবিএর নিয়ম বহিভূত কর্মকান্ডের জন্য সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান সিবিএর সভাপতি সাইজুদ্দিন মাস্টার।
তবে এতসব অভিযোগের বিষয়ে সিবিএর সাধারন সম্পাদক মোঃ ফিরোজ বলেন, তিনি কোন অনিয়মের সাথে জড়িত নয়। নিয়ম মেনে তিনি সব কাজ করেছেন।