মিঠুন গোস্বামীঃ
১১পারার হাফেজ সাব্বির মাত্র ১১বছর বয়সেই চলে গেলো না ফেরার দেশে। কিন্তু কেন এমন অসময়ে যেতে হলো সাব্বিরকে কে দায়ী তার এমন মৃত্যুর জন্য?
করোনা মহামারীতে পুরো দেশে চলছে লক ডাউন। লক ডাউন চলাকালীন সময়ে এমন বেপোরা ভাবে রাস্তায় মোটরসাইকেল চালায় কি করে এমন প্রশ্ন আজ রাজবাড়ীর অধিকআংশ মানুষের মুখে। এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে রাজবাড়ী পৌর শহরের ভাজনচালা রতন সরকারের বাড়ির সামেনে।
গত ১৬ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বেপোরয়া মোটরসাকেলের চাপায় জয়েনউদ্দিন হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানার ছাত্র সাব্বির (১১) মারাত্বক ভাবে আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভার্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনোতি হলে ৮টা ৪৫মিনিট এ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৬টার দিকে সাব্বিরের মৃত্যু হয়।
নিহত সাব্বির শহীদওয়াবপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের সৌদী প্রবাসী মোঃ মাহবুব খানের ছেলে রাজবাড়ী শহরের নতুন মসজিদ এলাকার জয়েনউদ্দিন হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র।
জয়েনউদ্দিন হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানার তত্ত্ববধায়ক হাফেজ মোঃ জহুরুল ইসলাম জানান, সাব্বির শেখ খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল, সে গত ৩বছর যাবত মাদ্রসায় পড়ালেখা করে। কিন্তু সে মাঝে মধ্যে কাউকে কিছু না বলে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে চলে যেতো। এমন ঘটনা কয়েক বার ঘটিয়েছে সে। গতকালও সে কাউকে কিছু না বলে হয়তো বাড়িতে যাচ্ছিল। পথের মধ্যে এমন দুর্ঘটনার শিকার হয়। সাব্বিরের এমন মৃত্যুতে মাদ্রসার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সাব্বির এর চাচা মোঃ নিজাম উদ্দিন শেখ জানান, সাব্বির খুবই মেধাবী ছিল, মাদ্রাসার শিক্ষকরা খুব ভালো ভাবে গাইট করেছিল সে কারনেই সে মাত্র ১১বছর বয়সে ১১পারার হাফেজ হয়েছিল। যে ঘটনা টি ঘটেছে এটা ওর নিয়তি ছিল। তাই পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মামলা করবে না। কারন মামলা করলেই লাশের ময়না তদন্ত করতে হবে আবার লাশ কাটা ছেড়া করবে সে কারনেই মূলত মামলা করবো না।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, গতকাল মোটরসাকেল চাপায় সাব্বির নামে একটি ছেলে আহত হয়। এঘটনায় মোটরসাকেইলটি আটক করা হয়েছে। কিন্তু চালক পলাতক রয়েছে। শুনেছি আহত ছেলেটি মারা গেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন মোটরসাকেল চালকের পরিচয় পাওয়া গেছে সে রাজ্জাক কশাই এর ছেলে।
সাব্বির কে চাপা দেওয়া মোটরসাকেলটি হলো এপাসি ৪বি-যার মালিক ধুঞ্চিগ্রামের সিলিমপুর স্কুল এলাকার রাজ্জাক কশাই এর ছেলে শিখন (২০)।
প্রত্যক্ষদোশী মোঃ ফারুক খান জানান, সন্ধ্যার পরে মাসহাঠা লেকের পাশে বসে ছিলাম হঠাৎ একটি বিকট শব্দ পেলাম তাকিয়ে দেখি একটি মোটরসাইকেল একটি বাচ্চা ছেলেকে চাপা দিল। দৌড়ে গিয়ে দেখি বাচ্চা ছেলেটি একটি মাদ্রাসার ছাত্র পরে আছে মাটিতে। আর মোটরসাইকেল আরোহী গাড়ি ফেলেই পালিয়ে যায়।পরে চঞ্চল রহমান সহ কয়েকজন মিলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল। তিনি আরো বলেন, ২জন মাদ্রাসার ছাত্র রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিল ঐ মুহুর্তে কিছু কুকুর তাদের ধাওয়া দেয় এসময় একটি দ্রুতগামী মোটরসাকেল এসে তাদের চাপা দেয় এসময় সাব্বির নামের ছেলেটি মারত্বক ভাবে আহত হয়।
নিহত সাব্বির ২ভাই এক বোন এর মধ্যে সাব্বির ছোট ছিল। জয়েনউদ্দিন মাদ্রাসায় মোট-৩১৭জন ছাত্র-ছাত্রী। বর্তমানে আছে ১৮০জন। বাকীরা ছুটিতে আছেন। ১৮০জনের মধ্যে ১২০জন এতিম শিশু রয়েছে। ৩১৭জন ছাত্র-ছাত্রীর বিপরীদে ২৩জন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে ১১জন মিহলা শিক্ষিকা ও ১২জন পুরুষ শিক্ষক।