রাজবাড়ীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’জন সহকারী শিক্ষক দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত

প্রকাশিত: ৬:১৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২২
মিঠুন গোস্বামী রাজবাড়ীঃ

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’জন সহকারী শিক্ষক দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় শিক্ষক সংকটে বিপাকে পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

অনুপস্থিত শিক্ষকরা হলেন- খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমাইয়া সুলতানা এবং দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোজিনা খাতুন। তারা এখন দু’জনই আমেরিকায় আছেন।
 
এদের মধ্যে দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোজিনা খাতুন দুই দিনের ছুটি নিয়ে ছিলেন , অন্যজন কোন প্রকার ছুটি ছাড়াই বছরের পর বছর অনুপস্থিত রয়েছেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সুমাইয়া সুলতানা ১৭ মার্চ, ২০২০ তারিখের পর থেকে তিনি ছুটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন। অপর দিকে রোজিনা খাতুন ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ৮ এবং ৯ তারিখ দুই দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে যান নাই।
উভয় বিদ্যালয়ের মনিটরিং বোর্ড এর দেওয়া তথ্য মতে, খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমাইয়া সুলতানা ১৮ জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখে চাকরিতে যোগদান করেন। অপরদিকে দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোজিনা খাতুন গত ০৩ আগস্ট, ২০১৬ তারিখে চাকরিতে যোগদান করেন।
খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, কোনো প্রকার ছুটি ছাড়াই সুমাইয়া সুলতানা ১৭ মার্চ, ২০২০ তারিখ থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন। পরিবার সূত্রে জানতে পেরেছি তিনি আমেরিকা আছেন, তিনি আর চাকরি করবেন না। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসকে অবগত করা হয়েছে, পদ শূন্য হওয়ার অপেক্ষা মাত্র।
দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ২ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে আসে নাই। পরবর্তীতে জানতে পারি তিনি আমেরিকা গেছেন। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসকে অবগত করা হয়েছে, একাধিকবার তদন্তও হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিদ্যালয় দুটির একাধিক শিক্ষক বলেন, চাকরি থেকে অব্যাহতি না দিয়ে কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকা গুরুতর অন্যায়। শুধু বিদ্যালয়ই নয়, এটা শিক্ষার্থীদেরও ক্ষতি করা। অব্যাহতি নিলে দ্রুতই পদ শূন্য হলে শিক্ষক পাওয়া যায়, কিন্তু বিধিমোতাবেক বরখাস্ত হতে তো দীর্ঘমেয়াদী বিষয়। শুধু চাকরি থেকে বরখাস্ত নয়, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফুল হক বলেন, ছুটি ছাড়াই সুমাইয়া সুলতানা এবং রোজিনা খাতুন নামে দু’জন শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবত কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এরই মধ্যে একাধিক তদন্তও হয়েছে। জানতে পেরেছি তারা আমেরিকা রয়েছেন। খুব শিগগিরই পদ দুটি শূন্য ঘোষনা করা হবে এবং শিক্ষক পদায়নের ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি জানান।
রাজবাড়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী বলেন, সহকারী শিক্ষক সুমাইয়ার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে চুড়ান্ত বরখাস্ত হবে। রোজিনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষা অফিসার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন, এখনো প্রতিবেদন পাইনি। প্রতিবেদন পেলেই বিধিমোতাবেক ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।



error: Content is protected !!