রাজাকারের মেয়ে শারমিন পেল নৌকা প্রতীক

প্রকাশিত: ৮:২৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২১

কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ৯ নম্বর পোড়াদহ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছে শারমিন আক্তার নাসরিন। মনোনয়ন পাওয়া শারমিন আক্তার নাসরিনের বাবার নাম আব্দুল গফুর মণ্ডল। ২০১৬ সালে মিরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড স্বাধীনতাবিরোধীদের যে তালিকা করেছিল, তাতে তার নাম আছে শান্তি কমিটির সদস্য হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধের পরে তিনি জেল খেটেছেন বলেও উল্লেখ আছে। শারমিন বলেন, বাবার এই বিষয়টি তিনি জানেন না। আর তার জন্ম মুক্তিযুদ্ধের পরে।

বাবা ছিলেন স্বাধীনতাবিরোধী শান্তি কমিটির সদস্য। তার মেয়ের হাতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মার্কা নৌকা তুলে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সিলেটে জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাকে নৌকা দেয়ার পর এই ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ায়।

জেলার মিরপুর উপজেলার ৯ নম্বর পোড়াদহ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে বাছাই করেছে শারমিন আক্তার নাসরিনকে। তিনি মিরপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এর আগে পোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল।

তাকে মনোনয়ন দেয়ার পর নাসরিনের বাবার পরিচয় সামনে এনে সমালোচনা করছেন আওয়ামী লীগেরই একাংশের নেতারা। তারা এ মনোনয়ন বাতিল করার দাবি ‍তুলছেন। তবে নাসরিন বলছেন, স্বাধীনতার সময় তার জন্ম হয়নি। তার বাবার যে পরিচয় বিরোধীরা তুলে ধরছে, সে বিষয়ে তার কিছুই জানা নেই।

এ ব্যাপারে মিরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার নজরুল করিম তালিকাটি তার সময়ে করা বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘তালিকায় গফুরের নাম ছিল স্বাধীনতাবিরোধী পিস কমিটির সদস্য হিসেবে। দেশ স্বাধীনের পর তিনি এ কারণে জেলও খাটেন।’

শারমিন আক্তারকে দেয়া মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন পোড়াদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম সবেদ। গত ১১ অক্টোবর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সভাপতির বরাবর তিনি লিখিত আবেদনও করেন। এছাড়াও ২০১৬ সালের নির্বাচনে শারমিন আক্তার নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

পোড়াদহ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুজ্জামান মজনুও এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, ‘আমাকে নমিনেশন দিতে হবে এমন নয়। স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের মেয়েকে বাদ দিয়ে আওয়ামী পরিবারের যেকোনো ব্যক্তিকে দিলে ভালো হয়।’

তবে এসব ব্যাপারে নৌকার প্রার্থী শারমিন আক্তার বলেন, ‘স্বাধীনতাকালে আমার জন্মই হয়নি। সে সময়ের ঘটনা আমার জানা নেই।’ শারমিন দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে গিয়ে পোড়াদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম সবেদ নিজেই ফেঁসে গেছেন। তিনি নিজেও রাজাকার ছিলেন, এমন অভিযোগও করেন।

তবে শারমিনের এই বক্তব্যকে মিথ্যাচার অভিযোগ করে শহিদুল বলেন, ‘আমার পরিবার সব সময় আওয়ামী লীগ করে এসেছে। শারমিন তার বাবার পরিচয় সামনে আসার পর সে আবোলতাবোল বলছে।’ বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ারুজ্জামান মজনু মনোনয়ন না পেয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন বলেও দাবি করেন শারমিন আক্তার। শারমিন বলেন, ‘তার মাথা ঠিক নেই। তিনিই আমার বিরুদ্ধে এসব করাচ্ছেন।




error: Content is protected !!