রেলের টাকায় চলছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ , মাসে লক্ষাধিক টাকার বাণিজ্য করে নিচ্ছে অসাধু রেলওয়ে কর্মচারী চক্র
সৈয়দ আখলাক উদ্দিন মনসুর শায়েস্তাগঞ্জ ( হবিগঞ্জ ) প্রতিনিধি ঃ দেশের পূর্বাঞ্চলীয় আখাউড়া – সিলেট রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হবিগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন । এ জংশনের আওতায় ২৬ টি স্টেশনের মধ্যে ২২ টি রেল স্টেশন রয়েছে । এ রেল স্টেশন টি সাটিয়াজুরী হতে হরষপুর পর্যন্ত এবং শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশন হতে বা্ল্লা রেল স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন । এ জংশনের আওতা স্টেশন নিয়ন্ত্রণ করে আখাউড়া উর্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিভাগ ( বিদ্যুৎ ) । আখাউড়া রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের অসাধু লাইনম্যান গ্রেড – টু মোঃ রবিউল নামে এক কর্মচারী দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিটি স্টেশন এলাকা থেকে রেলের বিদ্যুৎ অবৈধ সংযোগ দিয়ে নানা কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা । তবে রেলওয়ে বিদ্যুৎ লাইন থেকে যে সব স্থানে অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয় , সে গুলোর বিদ্যুৎ বিলের টাকা বাংলাদেশ রেলওয়ে বহন করে আসছে দীর্ঘ বছর ধরে । শায়েস্তাগঞ্জ স্থানীয়দের অভিযোগ , আখাউড়া উর্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিভাগ ( বিদ্যুৎ ) জোন আওতাধীন অসাধু লাইনম্যান গ্রেড – টু মোঃ রবিউল নামে এক কর্মচারী দীর্ঘ দিন ধরে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন সহ প্রতিটি রেলস্টেশন এলাকায় অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের মূল হোতা । প্রতি মাসে তিনি নিজে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগদের কাছ থেকে মাসে ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল নেওয়া হয় । এ ভাবে প্রতি মাসে প্রতিটি স্টেশন এলাকা থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু রেল কর্মচারী চক্রের প্রধান লাইনম্যান মোঃ রবিউল । আর অতিরিক্ত ব্যবহৃত বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করছে খোদ রেল কর্তৃপক্ষ । শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন সহ প্রতিটি রেলস্টেশন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় , প্রতিটি রেলস্টেশন এলাকায় বিদ্যুৎতের মূল খুটি থেকে পাটফর্মের বিভিন্ন দোকান , হোটেল – রেস্তুরা, রেলওয়ে বস্তি , ভাড়াটিয়া রেল কোয়ার্টার (বাসা) , অবৈধ স্থাপনা অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে । রেলওয়ে উর্ধতন কর্মকর্তা আসলে বিদ্যুৎ সংযোগ খুলে রাখে এবং উর্ধতন কর্মকর্তা চলে গেলে আবার অবৈধ বিদ্যুৎ চলে । নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক নিরাপত্তা বিভাগের অবসর প্রাপ্ত এক কর্মচারী জানান , গ্রাহকরা রেলওয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারে পাশাপাশি তাদের বাসায় বৈদ্যুতিক চুলা ( হিটার ) ও বেটারী চালিত অটোরিকশা টমটম – রিক্সা বৈদ্যুতিক চার্জ ব্যবহার করে । রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকেরা এসব অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের সঙ্গে জড়িত । এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী বস্তি এলাকার ভিক্ষুক কুটুনী বেগম বলেন , আমার কোনো জায়গা জমি নেই কিন্তু রেলের বস্তি ঘর ভাড়া করে রেলের বিদ্যুৎ ব্যবহার করি । বিদ্যুৎ ছাড়া কি ভাবে চালবো ? তাই আখাউড়া রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের আওতাধীন অফিসার লাইনম্যান মোঃ রবিউল অন্য লোককে দিয়ে বস্তি , হোটেল – রেস্তুরা , বিভিন্ন দোকান , ভাড়া রেল কোয়ার্টসর ( বাসা) শত শত গ্রাহককে রেলের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে । ভিক্ষুক কুটুনি বেগম প্রতি মাসে ৫ শ টাকা দিয়ে যাচ্ছে অসাধু রেল কর্মচারী মোঃ রবিউল আহমেদকে । অনেক রেল কর্ম কর্তা – কর্মচারী বাসা বরাদ্দ থাকলে ও বিদ্যুৎ বিল বেতন হতে কর্তন করলে-ও অনেক পরিত্যক্ত বাসা দখল করে বহিরাগত লোককে ভাড়া দিয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে । অনুসন্ধানে জানা যায় , রেলওয়ে শায়েস্তাগঞ্জ – আখাউড়া জুনের বিদ্যুৎ বিভাগের মোঃ রবিউল রেলওয়ে শ্রমিকলীগের নেতা এবং উপরে অনেক বড় লোক আছে । আর রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রভাব ব্যবহার করেই বছরের পর বছর ধরে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের আওতাধীন সকল স্টেশন এলাকায় রেলের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তিনি । অথচ প্রতি মাসে রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি শায়েস্তাগঞ্জ সদর দপ্তরে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ । নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ে প্লাটফর্মের এক হোটেল দোকানদার এ প্রতিনিধিকে বলেন , আমি প্রতি মাসে মাসে বিদ্যুৎ জ্বালনীর বিল দেই এক হাজার টাকা । প্রতি মাসে লাইনম্যান মোঃ রবিউল শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশন এসে প্রতিটি দোকান থেকে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের বিল নেন । এ প্রসঙ্গে জানতে বিদ্যুৎ বিভাগের লাইনম্যান মোঃ রবিউল সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে এ প্রতিনিধি কাছে রেলের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা স্বীকার করেন । তবে প্রতি মাসে সকল স্টেশন থেকে লক্ষাধিক টাকা আয়ের কথা অস্বীকার করে বলেন , শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন আওতাধীন সকল স্টেশন এলাকা থেকে প্রতি মাসে ২০/২৫ হাজার টাকা পাই । সেই টাকা রেলের বিভিন্ন বসদের পেছনে খরচ করতে হয় ।