শার্শা (যশোর) প্রতিনিধিঃ
যশোরের শার্শা বেলতলা বাজারে মিলন মেডিকেল হল এর মালিক দুই প্রতারক মিলন ও তুহিন বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে ও ফাঁদে ফেলে এলাকার সহজ- সরল ১৪ টি পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ওষধ ফার্মেসির ব্যবসা, ফ্লেক্সিলোড, বিকাশ, ও হুন্ডির ব্যবসার কথা বলে এ সকল পরিবারের কাছ থেকে, এক লক্ষ টাকায় বছরে বার (১২) হাজার টাকা জমির লিজ হিসাবে লাভ দিবে বলে তাদের কাছ থেকে সু’কৌশলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই দুই প্রতারক।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, শার্শা উপজেলার বাগুড়ী গ্রামের মৃত আজিয়ার রহমানের ছেলে ওহিদুলের কাছ থেকে পয়ষট্টি (৬৫) হাজার টাকা, মৃত আমির আলীর ছেলে আনিছুর রহমান মন্টুর কাছ থেকে এক (১) লক্ষ টাকা, মোঃ সাইদুল ইসলাম (প্রবাসী’র) কাছ থেকে চার (৪) লক্ষ টাকা, ও তার মা মোছাঃ মোরফুল খাতুনের কাছ থেকে এক লক্ষ পঁচিশ (১২৫) হাজার টাকা, মোঃ জালাল মিস্ত্রির স্ত্রী খাদিজার কাছ থেকে পঞ্চাশ (৫০) হাজার টাকা, মোঃ আব্দুল গফ্ফারের স্ত্রী নাছিমার কাছ থেকে এক (১) লক্ষ টাকা, মোঃ আব্দুল আজিজ (বাচা’র) স্ত্রী আছিয়ার কাছ থেকে এক (১) লক্ষ টাকা, মোঃ ছামছুর রহমানের মেয়ে মোছাঃ মঞ্জুয়ারার কাছ থেকে এক (১) লক্ষ টাকা, আব্দুর সাত্তারের স্ত্রী মোছাঃ নাছিমার কাছ থেকে ষাট (৬০) হাজার টাকা, মৃত শফিয়ার সরদার ও তার ছেলে সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে পচাত্তর (৭৫) হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী কলারোয়া উপজেলার কিসমত ইলিশপুর গ্রামের মোঃ ইদ্রিস আলীর কাছ থেকে তিন (৩) লক্ষ টাকা, মৃত, ইমান আলীর ছেলে, মোঃ আনার আলীর কাছ থেকে এক (১) লক্ষ টাকা, মোঃ নুর ইসলামের স্ত্রী ফরিদার কাছ থেকে তিরিশ (৩০) হাজার টাকা, আব্দুল গনির স্ত্রী সপ্না’র কাছ থেকে পঞ্চাশ (৫০) হাজার টাকা ও শেখ পাড়া হারুনের ছেলে আশিকের কাছ থেকে পঞ্চাশ (৫০) হাজার টাকা, সহ মোট ১৭,০৫০০০ সতের লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ভুক্তভোগী কয়েকটি পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ ছয় সাত বছর আগে তাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত কারও টাকা দিচ্ছে না। তারা আরও বলেন, টাকা চাইতে দোকানে গেলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ মারধর করে, আবার বলে টাকা দিয়েছিস কোনো ডকুমেন্টস নেই, পারলে টাকা আদায় করে নিস। এমনকি মাস্তান ভাড়া করে এনে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
এবিষয়ে মিলন মেডিকেল হল এর মালিক মিলনের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেছে ঘটনা সব মিথ্যা। আমি কারোও কাছ থেকে টাকা ধার নেই নাই, আমি এক লক্ষ টাকায় বছরে বিশ (২০) হাজার টাকা লাভ হিসাবে টাকা নিয়েছি। যদি দুই এক জন টাকা পায় তাহলে পরে দিয়ে দেবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ মুজিবর রহমান মজুর কাছে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনা সত্য তাদের দুই ভায়ের কাছে এলাকার অনেক মানুষ টাকা পায়, কিন্তু তারা কারোও টাকা দেয় না। তিনি আরো বলেন, বিগত দিনে জামাত- বিএনপি’র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও বর্তমানে আঃলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় দাপট দেখিয়ে চলে। এবং সে একটা হাতুড়ি ডাক্তার তার ব্যাগের ভেতরে সব সময় হাতুড়ি রাখে অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য বলে জানান মেম্বার মুজিবর রহমান মজু।
এ বিষয়ে বেলতলা বাজার কমিটির সভাপতি ও ইউ’পি চেয়ারম্যান মোঃ আলতাব হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি, আমি কোন অন্যায় কাজকে সমর্থন করি না, যেহুতু তারা আমার ইউনিয়নের নাগরিক যদি ভুক্তভোগীরা আমার পরিষদে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, তাহলে আমি তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।