সৈয়দ আখলাক উদ্দিন মনসুর, শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : শায়েস্তাগঞ্জ মুক্ত
দিবস আগামীকাল সোমবার। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকহানাদার বাহিনীর কাছ থেকে মুক্ত হয়
এই এলাকা। তাই এ দিনটিকে উদযাপন করতে প্রতিবছরই নানা অনুষ্ঠানের আয়াজন করা হয়।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা শুরুর পরপরই
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা সাধারন মানুষের সঙ্গে নিয়ে এখানে গড়ে তুলেন প্রতিরোধ।
বৃহত্তর সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিছিন্ন করতে মুজিববাহিনী উড়িয়ে দেয়
শায়েস্তগঞ্জ পুরাতন খোয়াই ব্রীজটি। স্থানে স্থানে রেললাইন অবরোধ করা হয়। এরইমধ্যে
২৯শে এপ্রিল হঠাৎ করেই পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী শায়েস্তাগঞ্জ শহরে এসে উপস্থিত
হয় বলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান। দুই দিক থেকে ৭ ঘন্টা যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানী সেনা-
রাজাকার-আল বদর হঠিয়ে মুক্ত হয় শায়েস্তাগঞ্জ শহর।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ থেকে জানা যায়, অসংখ্য মানুষকে চোখ বেঁধে খোয়াই ব্রীজের
ওপর থেকে কখনো গুলি করে, আবার কখনো হাত-পা বেধেঁ জীবন্ত অবস্থায়ই নদীতে ফেলে
দিতো হায়েনার দল। অবশেষে ৮ই ডিসেম্বর সিলেটে সর্বাত্মক যুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনী সড়ক
ও রেলপথে শায়েস্তাগঞ্জ হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে পালাতে থাকে। একইসঙ্গে শায়েস্তাগঞ্জ
থেকেও সরে পড়ে তারা। দীর্ঘ নয় মাস পরে এলাকার সর্বস্থরের মানুষ বিজয় পতাকা হাতে
বেরিয়ে পরে রাস্তায়। গগণ বিদারী জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে শায়েস্তাগঞ্জ শহর।
উল্লেখ্য শায়েস্তাঞ্জ উপজেলার ৩ নং ওয়ার্ডের পূর্ববড়চর স্কুল প্রাঙ্গণে রয়েছে সিলেট
বিভাগের প্রথম দুই শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবর। তারা হলেন, শহীদ হাফিজ উদ্দিন ও মহফিল
হুসেন। এছাড়া দাউদনগর বাজার রেলওয়ে গেট সংলগ্ন রয়েছে বধ্যভূমি। এ বধ্যভূমিতে ১১ জন
চা শ্রমিককে হত্যা করে কবর দিয়ে রাখে। শায়েস্তাগঞ্জ পুরান বাজার রেলওয়ে ব্রীজে
অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী।#