হবিগঞ্জে করোনার মহামারিতেও থেমে নেই ধাদন ব্যবসায়ীরা, দিশেহারা ঋণগ্রস্ত দিন মজুর মধ্যবিত্তরা
অপরাধ ডেস্কঃ হবিগঞ্জ সদর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন গুলিতে এবং শাহজি বাজার সুতাংয়ে চলছে রমরমা সুদ ব্যবসা। মানুষকে নিঃস্ব করার অন্যতম উপায় সুদের ব্যবসা, এই মহামারীতে সূযোগ নিচ্ছে ধাদন ব্যাবসায়ীরা, সুদ মানুষকে নিঃস্ব করার ট্যাবলেট হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে এ ব্যবসাই জমজমাটভাবে চলছে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর সহ অন্যান্য ইউনিয়নেও। ফলে সুদ ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে সমাজের নিচু ও মধ্য বিত্ত পরিবারগুলো। অথচ এ সব দেখার যেন কেই নেই।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর, এলাকার বেশ কিছু সংখ্যক ব্যাক্তি সর্বাধিক সুদ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ওই সব সুদ ব্যবসায়ীদের অত্যাচার ও চক্রবৃদ্ধি সুদের রোষানলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রাম অঞ্চলের সাধারণ অসহায় মানুষ। আর্থিক প্রয়োজনে বেকায়দায় পড়ে ওই সব সুদ ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ছে মধ্যবিত্ত কৃষক, বর্গাচাষী, স্বল্প আয়ের লোকজনসহ স্কুল, মাদ্রাসা ও বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণও। তারা কষ্টকর জীবন অতিবাহিত করতে গিয়ে বিপদে পরে বাধ্য হয়ে ওইসব সুদ ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকার ননজুডিশিয়াল সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর বা টিপ দিয়ে টাকা নিতে হয়। অথবা অলিখিত ব্যাংক চেকের মাধ্যমে কৌশলে আদায় করে চক্র টি।
আর ওই সব সাদা ষ্ট্যাম্পে সাক্ষী নেওয়া হয় সুদ ব্যবসায়ীদের পছন্দমত ব্যক্তিদের এবং ইচ্ছামত তারা ষ্ট্যাম্প পূরণ করে রাখেন কিংবা প্রয়োজন মত লেখার জন্য ফাঁকা রাখেন। আর বেকায়দায় পড়া ব্যক্তিদের অনেকে সুদ ব্যবসায়ীদের চাপে বন্ধক রাখে জমির দলিলপত্র, স্বর্ণালংকার, চাকরিজীবীদের মাসিক বেতনের চেকও বন্ধক রাখতে বাধ্য হচ্ছেন সুদ ব্যবসায়ীদের কাছে। সাপ্তাহিক এমনকি দৈনিক ভিত্তিতে নগদ ঋণ দিয়ে দেড় থেকে দুই গুন মুনাফা লাভ করে। সুদ ব্যবসায়ীদের অত্যাচার ও লাঞ্ছনায় আত্যহত্যার নজিরও রয়েছে এ জেলায়। একদিকে যেমন সুদ ব্যবসায়ীরা সম্পদের পাহাড় গড়ছেন অন্যদিকে সাধারণ ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ দিন দিন গরিব ও ভূমিহীনে পরিণত হচ্ছে। অথচ সুদ ব্যবসায়ীদের এমন কর্মকান্ডে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও নেই কোন পদক্ষেপ। প্রশাসনও রয়েছে নীরব। আর যে কারনে ঋনের নামে এই করোনার মহামারিতেও এই সব শোষন বেড়েই চলছে। সুদ ব্যাবসায়ীদের সার্বিক এ পরিস্থিতে বিভিন্ন এলাকাবাসীর প্রতাশা সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে জরুরী হস্তক্ষেপ প্রয়োজন, অন্যথায় এর ব্যপ্তি অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।