হাটহাজারী ও রাউজান সহ এবার ডিম সংগ্রহের পরিমান প্রায় ৩, ৯২০ কেজি
★ ডিম হতে রেনুতে পরিনত করার কাজ চলছে
★আগামী অমবশ্যায় আরেক দপা ডিম দিতে পারে
★জেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিসাব দিতে অপারগ
আসলাম পারভেজ,,হাটহাজারী★
মঙল ও বুধবা রাতে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু হ্যারিটেজ হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালি বাউশ জাতীয় মা মাছ সংগৃহীত ডিম থেকে সনাতনী কায়দায় রেনুতে পরিনত করার কাজ খুব জোরেশুরে চলছে।ডিম সংগ্রহকারীদের চোখের আরামের ঘুমকে হারাম করে রাত তিন পরিশ্রম করে রেনুগুলো ফোটানোর কাজ চারিয়ে যাচ্ছে।এবার দুই দিনের সংগৃহীত ডিমের পরিমাণ প্রায় তিন হাজার ৯২০ কেজি। এবার হালদায় বজ্রসহ বৃষ্টি ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢল না থাকলেও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে মঙ্গলবার রাতে ডিমের নমুনা ছাড়ে ও বুধবার রাতে পুরোদমে ডিম ছেড়ে দেয় মা মাছ। রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আহরণকারীরা উৎসবমুখর পরিবেশে ডিম সংগ্রহ করে। হালদা নদীর নয়াহাট থেকে শুরু করে মদুনাঘাট এলাকা পর্যন্ত ডিম আহরণ করা হয়।জেলেরা ডিম সংগ্রহের পর হাটহাজারীর তিনটি ও রাউজানের একটিসহ মোট চারটি হ্যাচারিতে ডিম থেকে রেনু ফোটানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে ডিম আহরোনকারীরা হ্যাচারি ভিত্তিক দায়িত্বরত মৎস্য কর্মকর্তা ও ডিম সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হাটহাজারীর মাছুয়া ঘোনা হ্যাচারিতে ১১২ বালতি, শাহমাদারী হ্যাচারিতে ৯০ বালতি, মদুনাঘাট হ্যাচারিতে ৭৭ বালতি, কামাল সওদাগরের নিজস্ব ছয়টি মাটির কূয়ায় আট বালতি ডিম পাওয়া যয়। এ নিয়ে হাটহাজারী উপজেলায় মোট ২৮৭ বালতিতে প্রতিটিতে ১০ কেজি করে মোট ডিম পাওয়া গেছে দুই হাজার ৮৭০ কেজি। এ ছাড়া রাউজান উপজেলার সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, মোবারকখীল হ্যাচারিতে ৭০ বালতিতে ৭০০ কেজি ডিম পাওয়া গেছে। আই ডি এফ এর নিজস্ব প্রকল্পের পরিচালিত লোকবলের মাধ্যমে আটটি কূয়া, পাঁচটি সার্কুলার ট্যংক, ১০টি চৌবাচ্ছায় মোট ৪২ বালতিতে ৩৫০ কেজি ডিম পাওয়া গেছে। রাউজানে মোট ডিম পাওয়া গেছে এক হাজার ৫০ কেজি। এ নিয়ে ২০২১ সালে হাটহাজারী ও রাউজান মিলে হালদায় মোট ডিম পাওয়া গেল তিন হাজার ৯২০ কেজি।ডিম সংগ্রহকারীদের তথ্য মতে, প্রতি ৬০ কেজি ডিম থেকে তিন দিন বয়সী এক কেজি রেণু ফোটানো সম্ভব হয়। এ হিসাবে সবকিছু ঠিক থাকলে এবারের সংগৃহীত ডিম থেকে তিন দিন বয়সী প্রায় ৬৫ কেজি রেণু ফোটানো সম্ভব হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
আহরিত ডিমগুলো সরকারি হ্যাচারির পাশাপাশি সনাতন পদ্ধতিতে মাটির তৈরি কুয়াতে ফোটাতে ব্যস্ত সময় পার করছে ডিম সংগ্রহকারীরা ৪/৫ দিন পর রেনু বিক্রি করা হবে।এদিকে এবার সর্ব মোট ডিমের পরিমান জানাতে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কাছে তথ্য চাইলে তিনি তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন, এবং এসব ঢাকা হতে নিতে হবে বলে জানান। উল্লেখ্য, হালদা নদী থেকে ২০২০ সালে মে মাসে ২৫ হাজার কেজি (যা ছিল বিতর্কিত তথ্য), ২০১৯ সালে ২৬ মে মাসে সাত হাজার কেজি, ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল ২২ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল ১৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালের ২ মে ৭৩৫ কেজি, ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল ও ১২ জুন ২ হাজার ৮০০ কেজি, ২০১৪ সালের ১ মে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি, ২০১৩ সালের ৫ মে ৪ হাজার ২০০ কেজি, ২০১২ সালে ৮ এপ্রিল ২১ হাজার ২৪০ কেজি, ২০১১ সালে ১৮ এপ্রিল ১২ হাজার ৬০০ কেজি, ২০১০ সালে ২২ মে ৯০০০ কেজি ও ২০০৯ সালে ২৫ মে ১৩ হাজার ২০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয় বলে জানা যায়।এদিকে এই মৌসুমে মা মাছের ডিমে পরিমান নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিলেও তবে প্রত্যক ডিম সংগ্রহকারীদের কাছে গিয়ে সাংবাদিকরা তথ্য নিয়ে রিপোর্ট করেছে। যার ফলে এবার ডিমের সংখ্যা বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। এ ছাড়া এই মৌসুমে ডিমের সংখ্যা কম হওয়ার কারনে,পোনা ভেজাল কারী সিন্ডিকেটরা সজাগ রয়েছে বলে জানা যায়। এসব ভেজাল কারবারিরা বিভিন্ন জেলা হতে ভেজাল পোনা এনে হালদার আসল পোনার সাথে মিশ্রন করে বিক্রি করার পায়তারা করতে পারে এমনটায় আশা করছে অনেকেই। তবে এদিকে স্হানীয় প্রশাসন সজাগ হয়ে প্রতিটা হ্যাচারিতে আনচার মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। ৮/১০ দিন পর আবারো অমবশ্যা জো তে বজ্রসহ বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের স্রোতে ঘোলা পানি হালদায় প্রবেশ করে মা মাছের অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি হয় তাহলে মা মাছ আরেক দপা পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে বলে মনে করছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। তার জন্য আবারো অপেক্কার প্রহর গুনতে হবে ডিম সংগ্রহকারীদের।।।