১০ লাখে মিলবে ৩০ মণের ‘কালা তুফান’

প্রকাশিত: ৯:০১ অপরাহ্ণ, জুন ২৭, ২০২১

কামাল উদ্দিন টগর,ব্যুরো প্রধান রাজশাহীঃ-

পরম যত্নে রত্ন হয়ে উঠেছে নাটোরের কালা তুফান। অশান্ত নামে ডাকা হলেও খুবই শান্ত ‘কালা তুফান’। দূর থেকে দেখে মনে হবে ছোটখাটো হাতি। কিন্তু কাছে যেতেই কেটে যাবে ঘোর। এটি একটি গরু! এ নিয়ে বাজারের ক্রেতা থেকে ব্যাপারি কারও বিস্ময়ের শেষ নেই। ছয় ফুট উচ্চতা ছাড়িয়ে ৩০ মণ ওজনের অতিকায় এমন গরু খুব কমই দেখা যায়। পরম যত্নে লালন-পালন করা হচ্ছে ‘কালা তুফানকে’। আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে কালা তুফানের দাম চাওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা।জানা যায়, নাটোর সদর উপজেলার হয়বতপুর বাজার এলাকার ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম ২০০৫ সালে শখের বশে গরু পালন কার্যক্রম শুরু করেন। মোটাতাজাকরণ কার্যক্রমে লক্ষ্য করেন, একটু পরিশ্রম করলেই মুনাফা করা সম্ভব। এরপর থেকে যেন তঁার পথ চলাতেই আনন্দ। এবছর কোরবানী ঈদকে উপলক্ষ করে তিনটা গরু তৈরী করেন আমিরুল। এরমধ্যে দুটো সাড়ে চার লাখ টাকা করে ইতোমধ্যে কিনে নিয়ে গেছেন ঢাকার ব্যবসায়ীরা। এখন আমিরুলের খামারে শুধুই কালাতুফানের অবস্থান। তবে বাজার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে চাহিদার কাছাকাছি আসলেই কালা তুফান বিক্রি করবেন এ খামারি।তিন বছর ধরে পরম যত্নে কালাতুফানকে তৈরী করেছেন আমিরুল। এ্যাংকার ভুষি, গুড় আর চিড়া সহযোগে তৈরী করা বিশেষ খাবার কালাতুফানের প্রিয় খাবার। প্রতিদিন সকাল আর বিকালে প্রয়োজন হয় আট কেজি করে। মাঝেমধ্যে আমিরুলের নিজস্ব খামারে উৎপাদিত নেপিয়ার ঘাস কালাতুফানের প্রিয় খাবার হয়ে ওঠে।নিয়ম করে খাবার খাওয়ানো, পরিচর্যা করা, একজন পশু চিকিৎসকের পরামর্শে রেখে কালাতুফানকে তৈরী করেছেন আমিরুল। কালাতুফান এখন উচ্চতায় ছয় ফুট ছাড়িয়ে গেছে আর দৈঘের্য নয় ফুট। ওজন কমপক্ষে এক হাজার ২০০ কেজি।বাজারে পশু খাবারের ক্রমবর্ধমান উচ্চ মূল্যের কথা উল্লেখ করে আমিরুল জানান, ছয়মাস আগে এ্যাংকর ভুষির কেজি ছিলো ৩৫ টাকা, এখন ৫৫ টাকা। গত পরশু এক বস্তা ৮০০ টাকায় কিনলেও গতকাল মঙ্গলবার কিনতে হয়েছে ৯১০ টাকায়। পশু খাদ্যমূল্যের বাজার পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের দাবী জানান আমিরুল।ক্ষতিকর স্টেরয়েড ব্যবহার করে পশুর ওজন ও আয়তন বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আমিরুল বলেন, কোন স্টেরয়েড কখনোই ব্যবহার করা তো দূরের কথা, ভূল করেও আমাদের চিন্তায় আসেনি।আমিরুল আরো বলেন, অনেক যত্নে কালাতুফানকে তৈরী করেছি। সৌখিন ব্যক্তিরাই ওর কদর বুঝবে। তাদের গোচরে আনতে পারলে দাম অন্তত দশ লাখ টাকা পাওয়া যাবে। আসন্ন কোরবানীল ঈদ উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ বিভাগের অনলাইন পশুর বাজারে কালাতুফানের যথাযথ প্রচারণার দাবী জানান তিনি।জেলা প্রাণিসম্পাদ কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মোস্তফা ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলার প্রাণিসম্পদ অঙ্গণ বৈচিত্রে ভরপুর হয়ে উঠছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ আমাদের উৎসাহী খামারীদের নতুন নতুন প্রযুক্তি সরবরাহ করছে, তাদেরকে প্রণোদনা প্রদান করছে, প্রয়োজনে চিকিৎসা চিকিৎসা সেবা। এরই ইতিবাচক ফলাফল হিসেবে নাটোরে তৈরী হয়েছে কালাতুফান। প্রাকৃতিকভাবেই তৈরী হওয়া কালা তুফান অনেক আকর্ষনীয় এবং উৎপাদক তাঁর ন্যায্য দাম অবশ্যই পাবেন।#




error: Content is protected !!