রাজবাড়ীতে বন্যায় কৃষকের ক্ষতির তুলনায় বরাদ্দ সামান্য, বিতরণ হয়নি এখনো।
রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ী জেলার পাংশা, গোয়ালন্দ ও রাজবাড়ী সদর উপজেলায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধিতে সৃষ্ট বন্যায় প্রায় ১০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার জন্য সরকারিভাবে ২০ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তবে এখনো তা বিতরণ করা হয়নি।
চলতি বছরের বন্যায় মরিচ, কলা, আখ, পাট, রোপা আমন ধান ও বীজতলা, শাক-সবজি প্রভৃতি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া চরাঞ্চলের বাদাম চাষিদেরও বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি সহায়তা হিসেবে রাজবাড়ী জেলার ৬ শত কৃষককে মাসকলাইয়ের ডালের বীজ ও সার এবং ২ হাজার কৃষককে সবজির বীজ দেয়া হবে। এছাড়া কিছু এলাকায় মেশিন দিয়ে কৃষকের ধান কেটে দেয়া হবে।
অপরদিকে, জেলার ৪০০ ঘের ও পুকুর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ৭২ লাখ টাকার মাছ ও মাছের পোনার ক্ষতি হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, বন্যায় জেলার ৪০০ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় ৭২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খামারীদের তালিকা করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক গোপাল কৃষ্ণ দাস জানান, বন্যায় প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির বিপরীতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার জন্য ২০ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আগামী মাস থেকে সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। তবে বালিয়াকান্দি উপজেলাতে বন্যায় কৃষকের তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হওয়ায় ওই উপজেলার কৃষকদের জন্য কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো নিম্নাঞ্চলের ফসলি মাঠে পানি আছে। এবারের বন্যায় ১৫৩৭ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে প্রায় নয় কোটি ২৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাঁচটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, বন্যায় জেলার চার উপজেলার (রাজবাড়ী সদর, পাংশা, কালুখালী ও গোয়ালন্দ) ১৩ ইউনিয়নের ১০৭ গ্রামের ৯১ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা গোয়ালন্দ। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করে খাদ্য সহায়তা, শিশু খাদ্য, শুকনা খাবার ও গো-খাদ্যসহ নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে।