কলাপাড়ায় বনদস্যুরা এবার মহিপুর রেঞ্জের বন উজাড় করছে দেদারছে॥

প্রকাশিত: ৯:৪৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০২০

রাসেল কবির মুরাদ,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি; কলাপাড়ায় এবার বনদস্যুরা মহিপুর রেঞ্জের গঙ্গামতি বিটের বন উজাড় করছে দেদারছে। বনবিভাগের কিছু দুস্কৃতকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও একটি প্রভাবশালী কু-চক্রি মহল টাকার লোভে নিজেদের আখের গোছাতে মরিয়া হয়ে সুযোগ পেলেই রাতের আঁধারে বনের গাছ কেটে উজাড় করছে প্রতিনিয়তই। বন্যা কবলিত কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় এলাকার পরিবেশ বান্ধব শোভা বর্ধনকারী মহিপুরের অদুরে গঙ্গামতির বন বিভাগের বনাঞ্চল বনদস্যুদের কারণে এখন হুমকীর মুখে। গত ১২নভেম্বর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই চক্রটি গঙ্গামতি বিটের বনাঞ্চল থেকে রাতের আঁধারে প্রায় অর্ধশত ঝাউ গাছ কেটে নিয়েছে।

বন বিভাগ, স্থানীয় সূত্র ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুয়াকাটার চরগঙ্গামতি এলাকার ইসরাফিল ও নুর মোহাম্মাদ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তারা মাছ ধরার জন্য গেলে বনের মধ্যে গাছ কাটার শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে গেলে কতিপয় লোককে গাছ কাটতে দেখতে পায়। তাদের কাছে গাছ কাটা সম্পর্কে জানতে চাইলে বনদস্যুরা ইসরাফিল ও নুর মোহাম্মাদ এর উপর ঝাপিয়ে পড়ে দেশীয় অস্ত্র-দা, কাঁচি, ছেনা দিয়ে কোপাতে শুরু করলে জীবন বাঁচাতে বনদস্যুদের হামলার শিকার হয়ে কোনমতে দৌড়ে বাড়ি আসে। বিষয়টি তাৎক্ষনিক বন বিভাগের কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয়দের অকগত করেন। কর্তৃপক্ষ সেখানে পৌছাতে না পৌছাতে দস্যুরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

গঙ্গামতি বিটে কর্মরত বিট কর্মকর্তা মো: শহিদ উদ্দিন বলেন, ১২ নভেম্বর রাতের আঁধারে সংঘবদ্ধ একটি চক্র বনের মধ্য থেকে ঝাউ গাছ কেটে েিনেচ্ছ’ এ সংবাদ পেয়ে রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে বন উজাড়কারী কাউকে পাওয়া যায়নী। সেখানে গাছ কেটে নেয়ার ৩৮টি গাছের মোতা (গোড়া) পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৮টি কাটা গাছ পড়ে থাকা অবস্থায় পাওয়া গেছে, বাকী গাছগুলো বনদস্যুরা নিয়েগেছে। এঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৪জানুয়ারী রাতের আধাঁরে ৩০টি গাছ কেটে নিলে বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে বনায়ন উজাড়ের অভিযোগে ১৭ জানুয়ারী তৎকালীন ওই বিটের কর্মকর্তা পারভেজ বন আইনে কলাপাড়া থানায় একটি মামলা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দ্বিতীয় দফায় ওই চক্র পূনরায় ২৭ জানুয়ারী একই পন্থায় ৩১টি কাজ কর্তন করেন। এখনও কুয়াকাটা সৈকতের গঙ্গামতি এলাকার সংরক্ষিত বন্যা নিয়ন্ত্রন বেড়িবাঁধের বাহিরে সৈকত লাগোয়া বনাঞ্চলের দিকে তাকালে দেখাযায়, বন উজাড়ের করুন পরিনতি।

এ বিষয় ৯নং ধূলাসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: আ: জলিল আকন বলেন, এ অঞ্চলের বন আমাদের পরিবেশ রক্ষাসহ প্রলয়ংকারী সিডর, আইলার মত ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় থেকে আমাদের রক্ষা করে থাকে, তাই এ বন যারা উজাড় করছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।

পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)’র বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন আক্ষেপ করে বলেন, এমনভাবে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল উজাড় করলে এর মাশুল সকলের দিতে হবে। অভিযোগ পেলে বেলা তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেবে।




error: Content is protected !!