আলী আজীম,মোংলাঃ
দীর্ঘ ১১ বছর পর হতে যাচ্ছে মোংলা পৌর সভা নির্বাচন।অনেক বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জনগনের মধ্যে বইছে এক অন্য রকম আনন্দ। দীর্ঘ দিন পরে হলেও তারা যে তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাচ্ছে এ আনন্দেই ভোটাররা আত্নহারা।এদিকে প্রার্থীরা ও আর সময় নষ্ট করতে রাজি নন।নির্বাচন এর তফসিল ঘোষনা হওয়ার সাথে সাথেই তারা শুরু করে দিয়েছে তাদের নির্বাচনীয় কার্যক্রম।ভোটারদের আর প্রার্থীদের এ ব্যাস্ততার কারনেই মোংলায় বইছে এক অন্য রকম নির্বাচনি হাওয়া।
এদিকে রাজনৈতিক দল গুলো আবার নির্বাচনকে দেখছে অন্য রকম ভাবে। ১৯৯১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত মোংলা রামপাল( বাগেরহাট ৩ ) এই আসনটির সংসদ সদস্য পদ আওয়ামিলীগের দখলে। এটা আওয়ামীলীগ এর দূর্গ হিসাবে পরিচিত। কিন্তু মোংলা পৌর সভা সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম। এখানে মেয়র হিসারে বেশির ভাগ সময় নির্বাচিত হয়েছে বি এন পি প্রার্থী।আওয়ামীলীগ প্রার্থী নির্বাচিত না হওয়ার মূল কারন হিসাবে দলীয় অভ্যন্তরিন কোন্দলকেই দাই করেছেন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। সর্বশেষ নির্বাচনে ও এখানে নির্বাচিত হয়েছে বি এন পি প্রার্থী মোংলা পৌর বি এন পি’র সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব জুলফিকার আলী। তাই এবারের নির্বাচনের পূর্ব থেকেই আওয়ামিলীগ নেতৃবৃন্দ ভাবছে দলের ভিতরের সকল কোন্দল দূর করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে ভোটের মাধ্যমে তাদের নির্বাচিত প্রার্থীকে বিজয়ী করে পৌরসভাটি তাদের দখলে নেওয়ার। তাই তারা তাদের দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে।১৬ ই জানুয়ারীর পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২রা ডিসেম্বর আওয়ামীলীগ এর এক বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।সেখানে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আগ্রহীদের নাম নেয়া হয়।এবং সেইদিনই আগ্রহী প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে সেখান থেকে যাকে মনোনীত করা তবে তাকেই আওয়ামীলীগ এর মেয়র হিসাবে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে। আর আজ ৪ঠা ডিসেম্বর কমিশনার প্রার্থীদের জন্য দলীয় ফরম বিতরন করেন আওয়ামিলীগ নেতৃবৃন্দ মোংলা উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগ এর নিজস্ব কার্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে বিক্রি শুরু করে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে এ মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রম। এসময় প্রতি ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর প্রার্থীরা মোংলা উপজেলা আওয়ামিলীগ এর দলীয় কার্যালয়ে এসে তাদের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।সংগ্রহ করা ফরম যাচাই বাছাই করে প্রতি ওয়ার্ডে এক জন করে দলীয় প্রার্থী দিবে বলে জানিয়েছে আওয়ামীলীগ এর উর্ধতন নেতৃবৃন্দ।
আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা একজন কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ আল মামুন বলেন আমি ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামিলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমি ২০০৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগ মোংলা পৌর শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করি। ২০১৮ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত মোংলা পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করতেছি।আগামী ১৬ই জানুয়ারী মোংলা পৌরসভার নির্বাচনে ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থী হতে চাই। তাই আজ দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তা হলে আমি নির্বাচন করবো।আর যদি মনোনয়ন না পাই তা হলে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে যে মনোনয়ন পাবে তার পক্ষে কাজ করবো।
মনোনয়ন পত্যাশি আরেক প্রার্থী এইচ এম কবির বলেন আমি দীর্ঘ দিন যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত আমি ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করি।এরপর ২০০৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত যুবলীগ মোংলা পৌর শাখার যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করি। ২০১৮ সালে আমি যুবলীগের সহ সভাপতি নির্বাচিত হই।বর্তমানে আমি মোংলা পৌর যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। মোংলা পৌরসভার নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থী হতে চাই। তাই আজ দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তা হলে আমি নির্বাচন করবো।আর যদি মনোনয়ন না পাই তা হলে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে যে মনোনয়ন পাবে তার পক্ষে কাজ করবো।
মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও আওয়ামিলীগ এর দলীয় প্রার্থী কিভাবে নির্বাচন করা হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোংলা পৌর আওয়ামীলীগ এর সভাপতি ও মনোনয়ন সংগ্রহ কমিটির আহবায়ক শেখ আঃরহমান বলেন ৪ঠা ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিতরন করা হয়। কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৩৬ জন,মহিলা সংরক্ষিত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১১জন।আজকে যারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন পত্যকেই আওয়ামীলীগ এর ত্যাগি নেতা কর্মী।পত্যেকেরই দলের প্রতি ত্যাগ রয়েছে।তারপরও আওয়ামীলীগ একটা বড় সংগঠন। তাই এখানে যোগ্য নেতার সংখ্যাও বেশী।অবশ্যই যাচাই বাছাই এর মাধ্যমে আওয়ামিলীগ এর নীতিনির্ধারণী ফোরাম যোগ্য ব্যাক্তিদের মনোনয়ন দিবেন বলে আমি আশা রাখি। সকলের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ যেহেতু প্রতি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হিসাবে ১জনকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে । তাই সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ের জন্যই কাজ করবেন বলে আমি আশা রাখি।