মোঃ শহিদুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি
মহান মুক্তিযুদ্ধের ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ’র একজন হামিদুর রহমান ঝিনাইদহের গর্ব।
ঝিনাইদহ জেলার এই সুসন্তানের বাড়ি মহেশপুর উপজেলার খোর্দ্দ খালিশপুর গ্রামে।দেশ স্বাধীনের প্রায় ৫০ বছর পার হলেও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো সরকারের তেমন সুবিধা পায়নি।অনেকাংশে হয়েছে বঞ্চিত।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দিন পালটায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের।সেই সুত্র ধরে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের বাড়িতে চারতলা ভবন।বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের বাড়িতে দেখা যায় চারতলা বিল্ডিং এর ফাউন্ডেশনের কাজ চলছে। বিশাল বাজেটের এই বাড়িটি পেয়ে খুশি বীরশ্রেষ্ঠ এই পরিবারের সদস্যরা।
বাড়ির প্রতিটি ফ্লোরে থাকবে দুইটি ইউনিট।৩ কোটিরও বেশি টাকা ব্যায়ে বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারের জন্য এই বাড়িটি নির্মাণ করছে ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগ।
বীরশ্রেষ্ঠর পরিবারের সদস্যরা জানান,গত ২৬ অক্টোবর এই বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন স্থানীয় এক ঠিকাদার।তবে তারা নির্মান কাজে যাতে দুর্নীতি না হয় সেই দাবী করেছেন।৪ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন শহীদ সিপাহী বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান।
গত ১৬ অক্টোবর মারা যান তার সেজো ভাই শুকুর আলী।এর দু’বছর আগে স্ট্রোক করে মারা যান ছোট ভাই ফজলুর রহমান। মরহুম ফজলুর রহমনই সরকারের বিভিন্ন কর্মসুচিতে অংশ গ্রহন করতেন। ২০০৫ সালের ২১ ফেব্রয়ারি মারা যান মা কায়দাছুন্নেছা। এখন জীবিত আছেন একমাত্র ভাই হামজুর রহমান ও দুই বোন। প্রতিমাসে সরকারের পক্ষ থেকে এই পরিবারকে ৩৫ হাজার টাকা ভাতা হিসাবে পাঁচটি হিসাব নম্বরে প্রদান করা হয়।
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের মেজো ভাই হামজুর রহমান জানান, বর্তমান সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। অন্য কোন সরকারের আমলে আমরা এত সুযোগ-সুবিধা পাইনি।
বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারের দাবি, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান কলেজ ও স্মৃতি যাদুঘরের পাশে সরকারের পতিত ৩৭ বিঘা খাস জমি রয়েছে।এই জমিতে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামে ইকো পার্ক তৈরির দাবি জানান তারা।
তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশাফুর রহমান এই পার্কের কাজে শুরু করেন। ইতোমধ্যে বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারের মেজো ভাই হামজুর রহমান কমিউনিটি হাসপাতাল করার জন্য আট শতক জমি দান করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগোনা জেলার চাপড়া থানার ডুমুরিয়া গ্রামে ১৯৫৩ সালে জন্ম গ্রহন করেন।বাবার নাম আক্কাছ আলী মন্ডল। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তাদের পরিবার ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দ খালিশপুর গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
১৯৭১ সালের ২ ফেব্রয়ারি তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন।যুদ্ধের সময় কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তে তিনি শহীদ হন।
সুদীর্ঘ ৩৬ বছর পর ২০০৭ সালের ১১ ডিসেম্বর হামিদুরের দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে ঢাকার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করেন সরকার।