মোঃইব্রাহিম নোয়াখালী প্রতিনিধি।
নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে নলেরচর থেকে ভোলার মনপুরা যাওয়ার পথে মঙ্গলবার (১৫ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় ডালচর এলাকায় বরযাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনায় এখনো আটজন নিখোঁজ রয়েছে। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) নৌপুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.ইমরান হোসেন ।
ইউএনও আরো বলেন, এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নববধু ,নারী ও শিশুসহ ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও এখনো ৮জন নিখোঁজ রয়েছে।নিখোঁজরা হলেন-জাকিয়া বেগম (৫৫), মো.হাছান (৭),নার্গিস বেগম (৪), হালিমা (৪), লামিয়া (৩), নিহা (১), আমির হোসেন ও আলিফ।স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, হাতিয়ার নলের চরে বিয়ে অনুষ্ঠান শেষে নববধু নিয়ে বরসহ ট্রলার যোগে ভোলার মনপুরা যাওয়ার পথে ট্রলারটি ডালচর এসে পৌছঁলে মেঘনা নদীর তীব্র স্রোতের মুখে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।নিহতরা হলেন- হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের থানার হাট এলাকার ইব্রাহীম সওদাগরের মেয়ে নববধু তাছলিমা (২০), হরণী ইউনিয়নের মোহম্মদপুর গ্রামের আক্তার হোসেনের মেয়ে আসমা বেগম (১৯), সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের আকবর হোসেনের মেয়ে আফরিনা আক্তার লামিয়া (৯), একই এলাকার আলমগির হোসেনের মেয়ে লিলি আক্তার( ৮), নলেরচরের কালাদুর গ্রামের ফয়জ্জুল্লার মেয়ে হোসনে আরা বেগম (৫), চানন্দী ইউনিয়নের পূর্ব আজিম নগর গ্রামের আলা উদ্দিনের স্ত্রী রাহেনা বেগম (৩০), একই এলাকার খোরশেদ আলমের স্ত্রী নুরজাহান (৬৫)।
নিহত নববধুর পিতা ইব্রাহীম সওদাগর জানায়, হাতিয়ার ডালচরে ট্রলার ডুবির এ ঘটনা ঘটলেও প্রবল স্রোতে ৫টি লাশ ভেসে যায় লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতিতে। জেলেরা নদীতে ভাসমান লাশগুলো ভাসতে দেখে তাদের উদ্ধার করে টাংকির ঘাটে নিয়ে আসে।
পরে তারা রামগতি থানা পুলিশকে খবর দেয়। অপরদিকে ২টি লাশ পাওয়া যায় চানন্দি ঘাটে। ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার পরে অনেকে সাঁতার কেটে ও অন্য ট্রলারের সহযোগীতায় তীরে উঠতে সক্ষম হলেও শিশুসহ ৮ জন নিখোঁজ রয়েছে।তিনি আরো জানান, তার মেয়ে তাছলিমার সাথে হাতিয়ার ঢালচরের বেলাল মেস্তুরীর ছেলে ফরিদ উদ্দিনের বিবাহ হয়। মঙ্গলবার তাছলিমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরের বাড়ীতে নেয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে।নৌ-পুলিশের ইনচার্জ আকরাম উল্লাহ জানান, গতকাল দুর্ঘটনার পরপরই হাতিয়ার নৌ-পুলিশ ও কোষ্টগার্ড উদ্ধার অভিযানে নামে। তবে সন্ধ্যা নেমে আসায় উদ্ধার অভিযান থেমে যায়। বুধবার সকাল থেকে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি উদ্ধার করে হাতিয়ার ডালচরে রাখা হয়েছে।হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.ইমরান হোসেন বলেন, নিহত সাতজনের পরিবারকে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়ার সিদ্বান্ত দেয়া হয়েছে।এছাড়া আরো মৃতদেহ পাওয়া গেলে তাদেরকেও অনুরুপ ভাবে আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হবে। পুলিশ রাতেই তাদের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।