রবিউল ইসলাম সুইট, হিলি দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
সমাজে সুস্থ্য সবল ভাবে বাঁচার প্রয়াস সবার। সমাজের আট-দশ জনের মতো স্বভাবিক ভাবে চলাফের করার আশা জাগে অনেক অঙ্গহীন বা প্রতিবন্ধিদের। দুই হাতে ভর করে রাস্তায় রাস্তায় চেয়ে চিন্তে খেয়ে বেড়ায় দিনাজপুরের হিলি নওপাড়া গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী আহাদ আলী। একটু স্বভাবিক জীবনযাপনের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন মহলে ধর্না ধরেও জোটেনি একটি হুইল চেয়ার।
হিলির সিপি রোডে দু্ হাতে ভর করে বসে বসে চলতে দেখা গেলো রাস্তায় এই বৃদ্ধ প্রতিবন্ধি আহাদ আলীকে। বয়স আর অসুখে নুয়ে পড়েছে তার শরীর। কানে শোনে কম, চোখেও বেশি একটা দেখতে পায় না। তিন মেয়ে, এক ছেলে আর স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার। স্ত্রী মানুষরে বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে। ছেলে ছোট অন্যের মুরগীর খামারে কাজ করে। দারিদ্রতার কারণে ছেলে-মেয়েদের বেশি লেখাপড়া করাতে পারেনি।সকাল হলে শুরু হয় আহাদের দুই হাতে ভর করে পথ চলা। সারাদিন হিলি শহরের অলিগলি হাতের উপড় ভর করে ঘুরে আর মানুষের কাছে হাত বাড়ায়। দয়া করে যে যা দেয় তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে আহাদ আলী। দিন শেষে যখন সন্ধ্যা নামে তখন আবার ভ্যান বা হাতে ভর করেই বাড়ি ফিরে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে হাতকে পা বানিয়ে তার এই পথ চলা।
দু্হাতে ভর করে চলতে দেখে তার সাথে কথা বলে জানা যায় তার হতাশার কথা সে দু:খ করে বলেন, হারা গরীব মানুষ, হামার ছাউ (দিকে) কেউ তাকায় না। মোক এন্যা কেউ ঠেলাগাড়ি (হুইল চেয়ার) দেন বাহে।মুই এ্যান্নাও (একটুও) চলবার পারছু না। কেউ ক্যাম্বা (যেন) মোর দিকে তাকায় না। খুব কষ্ট হচে চলবার। চেয়ারম্যান, মেম্বার, ইউএনও গড়ত (কাছে) কত ঘুরাঘুরি করনু (করলাম) বাহে কেউ ক্যাম্বা এ্যাটা ঠেলাগাড়ি মোক দিলি (দিলো) না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর উপজেল নির্বাহী অফিসার আব্দুর রাফিউল আলম জানান, আহাদ নামের কোন প্রতিবন্ধি আমার নিকট আসেনি। প্রতি বছর এডিপি বরাদ্দে আমরা প্রতিবন্ধিদের হুইল চেয়ার বিতরণ করে থাকি। তবে নওপাড়ার আহাদ আলী যদি আমাদের নিকট হুইল চেয়ারের জন্য আবেদন বা নাম দিয়ে যায় তাহলে তাকে হুইল চেয়ার দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিবন্ধিদের আমরা খুঁজে খুঁজে হুইল চেয়ার দিয়ে থাকি। যেহেতু সে প্রতিবন্ধি অবশ্যই তিনি হুইল চেয়ার পাবেন।