নিজস্ব প্রতিনিধি- আজমিরীগঞ্জ উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়,
বিগত ২০২০ ইং সনের ২৮ অক্টোবর স্মারক নং- ইউ,এ,ও/আজ/হবি/৪৩৬ এর ক্রমিক নং- ২ অনুযায়ী ইন্টারনেট বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয় (আয়কর ১১২৫ ও ভ্যাট ৩০০ সহ)১৫,০০০/ টাকা। এরমধ্যে উত্তোলন করা হয় ১৩, ৫৭৫ টাকা। ১ অক্টোবরের বিশাল ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ১৫৩২ নং ভাউচারের মাধ্যমে ১ জুলাই ৮০০/, ২ আগষ্ট ৮০০/ ও ৩ সেপ্টেম্বর ৪০০/ সহ মোট- ২ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। তবে ভাউচারে মালামালের কোন বিবরণ নেই। ক্রমিক নং-২ অনুযায়ী, একই তারিখের সুদীপ টেলিকম এর ৫৯৪ নং ভাউচারের মাধ্যমে, টি,পি লিংক রাউডার ২২ টাকা দরে ক্রয়মূল্য ২,২০০ টাকা, সি,এ,ডি ক্যাবল ১১৫ মিটার ২,৫৩০ টাকা, সি,এ,ডি প্লাগ ৬ টি ১৫০ টাকা ও সার্ভিস চার্জ ১০০০ সহ মোট- ৫,৮৮০ টাকা (তবে ভ্যাট ও আয়কর বাদে) খরচ দেখানো হয়েছে। একই তারিখের বিশাল ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ১২৩৯ নং ভাউচারে, ২০২০ ইং সনের জুন মাসের মডেমের ইন্টারনেট বিল বাবদ উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসারের ০১৩১৮-৩৮০ ৮৭৭ এর মোবাইলের একই সনের জুন হতে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মোট ৬ মাসের ফ্লেক্সিলোড বাবদ যথাক্রমে ৮০০ ও (১০০গুণ ৭)= ৭০০০ সহ মোট খরচ দেখানো হয়েছে ৭,৮০০ টাকা। এক খাতের টাকা অন্যখাতে দেখানো হয়েছে, যা নিয়ম বহির্ভূত)
ক্রমিক নং-২ অনুযায়ী, কম্পিউটার সামগ্রী বরাদ্দ দেয়া হয় (আয়কর ৭৫০ ও ভ্যাট ২০০ সহ) ১০,০০০ টাকা , উত্তোলন করা হয়েছে, ৯,০৫০ টাকা। একই তারিখের, হবিগঞ্জের এটেন্টিক কম্পিউটার নামক প্রতিষ্টানের নম্বরবিহীন মেমো অনুযায়ী, টোন বি ৩ টি ৫,৪০০, মডেম ১ টি ২,৮৫০ ও ১ টি পেনড্রাইভ ১,৭৫০ সহ মোট খরচ দেখানো হয়েছে ১০,০০০ টাকা। উত্তোলনের চেয়ে খরচ বেশী দেখানো হয়েছে।
ক্রমিক নং- ৩ অনুযায়ী মনোহারী বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪০,০০০ টাকা, উত্তোলন করা হয়েছে ৩৬ হাজার ২’শ টাকা। একই তারিখের ১৫৩১ নং মেমোর মাধ্যমে, বিভিন্ন দ্রব্য ক্রয় বাবদ ৮৮৫ টাকা, ১৫১৮ নং মেমো অনুযায়ী ৪৮৯ টাকা, ১৫২৭ নং মেমো অনুযায়ী, ৫৫৮ টাকা, আজাদ এন্টারপ্রাইজ এর ৫৫৯৩৫ নং মেমো অনুযায়ী ৪,২৭৮ টাকা, ৮ আগষ্টের তোহদা ইলেকট্রনিক্স এর ৯৭৩৭ নং মেমোর মাধ্যমে ৬,৯৫৩ টাকা, একই তারিখের নম্বরবিহীন মেমো অনুযায়ী ২,৮০০ টাকা, ৯ অক্টোবরের কনিক অপসেট প্রিন্টার্স এর ৮৫২ নং মেমোর মাধ্যমে ৩০০ টাকা, একই তারিখের আজাদ এন্টারপ্রাইজ এর ৫৮৭৫২ নং মেমোর মাধ্যমে ১,১৭৫ টাকা, একই তারিখের ডিজিটাল সাইন নামক প্রতিষ্টানের ৬৫১ নং মেমোর মাধ্যমে ১৭,০০০ টাকা, একই মাসের ১৮ তারিখের নাঈম মেশিনারীজ নম্বরবিহীন মেমোর মাধ্যমে ১,২৫০ টাকা, আজাদ এন্টারপ্রাইজ এর ১ অক্টোবরের ৩৪৯ নং মেমোর মাধ্যমে ১৮০ টাকা, একই তারিখের ৫৮৮১ নং মেমোর মাধ্যমে ২,০১১ টাকা, কনিকা অপসেট এর ১৫ তারিখের ৬৬৯ নং মেমোতে ১,৬০০ টাকা, ২৩ তারিখের আজাদ এন্টারপ্রাইজ এর ৬৫৭২৫ নং মেমোতে ৫৩৫ টাকা সহ মোট ৩৬ হাজার ২০০ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। উক্ত মেমোগুলোর অধিকাংশেই ক্রেতার নাম নেই।
ক্রমিক নং- ৫ এ বর্ণিত মনোহারী বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, ৩,১৫০ টাকা। অফিস সহায়ক মোঃ জাকির হোসেন, উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস হইতে ব্যাংক এ আসা-যাওয়া বাবদ, জুলাই মাসের ২ তারিখ হতে ৩০ তারিখ, ২২ দিনে মোট ১১০০ টাকা, আগষ্ট মাসের ৩ তারিখ হতে ৩১ তারিখ, ১৯ দিনে মোট ৯৫০ টাকা ও সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ হতে ৩০ তারিখ, ২২ দিনে মোট ১১০০ সহ মোট ৩১৫০ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। এখানে নিয়ম বহির্ভূতভাবে এক খাতের বরাদ্দ, অন্যখাতে খরচ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন ২ বছর যাবৎ বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ দ্বৈত – দ্বায়িত্বে ছিল। প্রায় ২ মাস পূর্বে নানা ধরণের অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে চলতি জানুয়ারি মাসে বানিয়াচংয়ের দ্বায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। প্রতিটি বিল থেকে ৫% কমিশন আদায়ের কারণে, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মৎস্য, সমবায়, পি,আই,ও, সমাজসেবা ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে গত ২০২০ ইং সনের আগষ্ট মাসের ১ম সপ্তাহে একটি তদন্ত অনুষ্টিত হয়। উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মচারী সুমন চৌধুরীর এল,পি,সি’র টাকা ১৫ দিন ধরে আটকিয়ে রাখলে, তা পরবর্তীতে ইউ,এন,ও এর হস্তক্ষেপে অবশেষে দিতে বাধ্য হয়। এ ছাড়া উপজেলা সমবায় অফিসের সৈয়দ হোসেনের একই বিল নগদ অর্থের বিনিময়ে ৮ দিন পর ইস্যু করা হয়। উল্লেখ্য, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন এরপূর্বে সুনামগঞ্জে কর্মরত ছিলেন বলে জানা গেছে।