মোংলায় ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি বিক্রির অভিযোগ এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: ৬:৪৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২১

আলী আজীম,মোংলাঃ
মোংলায় জাল-জালিয়াতি করে এক সংখ্যালঘু পরিবারের জমি অন্যের কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী নাসির হাওলাদারের বিরুদ্ধে। ওই প্রভাবশালীর হয়রানী থেকে রক্ষা পেতে দীর্ঘদিন ধরে সংখ্যালঘু পরিবারটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ধনার্ দিয়েও ন্যায় বিচার পাচ্ছেন না।
বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া অভিযোগ, শালিস নামা ও ভুক্তভোগী পরিবারের সূত্রে জানা যায়, মোংলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িরডাঙ্গা মৌজায় ডিপি-৫০১ খতিয়ানের ২০৪১, ২০৪৭ ও ২০৫১ দাগের এক একর বিশ শতক ভূমির মধ্যে খরিদ ও ওয়ারিশ সূত্রে ৬২ শতক ভূমির মালিক সুনিল ও শ্যামল তরফদার। ২০০৩ সালের ১৬ মার্চে তাদের কাছ থেকে ওই ভূমি মৌখিকভাবে লিজ নিয়ে সেখানে মাছ চাষ করতেন স্থানীয় প্রভাবশালী নাসির হাওলাদার। লিজ নেয়া জমিতে মাছ চাষের সুবাদে থাকা নাসির হাওলাদার ওই জমির একটি জাল দলিল তৈরী করে নকল রেকর্ড ও পচার্ বানিয়ে সেখান থেকে প্রায় ১৩ শতক ভূমি দশ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন মোংলা পৌর শহরের ব্যবসায়ী আবু বক্কর রুবেলের কাছে। ১৩ শতক ভূমি খরিদ করে নিজ নামে নাম পত্তন করতে গেলে জাল দলিল আর ভূয়া রেকর্ড, পচার্র বিষয়টি জানতে পারেন রুবেল। রুবেল এও জানতে পারেন ওই ভূমির মুল মালিক সুনিল। তখন জালিয়াতির বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর থেকেই ওই সংখ্যালঘু পরিবারের সাথে নাসিসের প্রকাশ্য বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। মোংলায় ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি বিক্রির অভিযোগ এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে জমির মালিক সুনিল তরফদার বলেন, নাসির হাওলাদার তার লোকজন দিয়ে তাদের ওই ভূমিতে থাকা মালিকানা সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলে দিয়েছেন। একই সাথে ওই মৎস্য ঘেরে তাদের না যাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছেন। এ ঘটনায় সুনিল তরফদার ন্যায় বিচার পেতে গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারী খুলনা সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আবদুল খালেকের কাছে একটি লিখিত আবেদন করেন। পরে তিনি বিষয়টি সমাধানের জন্য বুড়িরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান নিখিল চন্দ্র রায়কে লিখিত নির্দেশ দেন। ইউপি চেয়ারম্যানের দপ্তরে এ নিয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে প্রথম বসাবসিতে নাসির হাওলাদার পরবর্তীতে বসার সময় নিয়ে চলে আসেন। পরে তিনি চেয়ারম্যানের ডাকে সালিশি বৈঠকে আর উপস্থিত হননি। প্রতাণার শিকার রুবেল জানান, নাসির প্রায় আড়াই বছর আগে ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে তার কাছে ১০ লাখ টাকায় ১৩ শতক জায়গা বিক্রি করেন। পরে তিনি নাম জারি করতে গেলে জানতে পারেন ওই ভূমির মুল মালিক সুনিল। ওই কারণে স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে আর তার নামে নাম জারি হয়নি। বুড়িরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান নিখিল চন্দ্র রায় বলেন, বিষয়টি মিমাংসার জন্য তিনি উভয় পক্ষকে নিয়ে বসাবসি করেছিলেন। কিন্তু বিবাদী নাসির তার কাগজপত্র সংগ্রহের কথা বলে সময় নিয়ে পরবর্তীতে আর আসেননি। তাই বিষয়টির কোন সমাধান হয়নি।এ বিষয়ে নাসির হাওলাদার বলেন, বিশ বছর ধরে ওই জমি আমার দখলে রয়েছে। ভূলবশত বিআরএসে সুনীলদের নাম এসেছে। বিআরএস সংশোধনে আমি ল্যান্ড সার্ভে মামলা করেছি। এরমধ্যে সুনীলেরা সেখানে সাইনবোর্ড দিলে আমি সেটি তুলে ফেলে দিয়েছি। আর রুবেলের কাছে জমি বিক্রিকালে আমি জানতাম না যে ওই জমি সুনীলদের নামে বিআরএস হয়েছে। পরে রুবেলের টাকা ফেরত দিয়েছি।




error: Content is protected !!