হেফাজতের তান্ডবের ঘটনায় দুই মামলার আসামী হলেন বাবু নগরী ও মীর হেলাল

প্রকাশিত: ২:০২ অপরাহ্ণ, মে ১, ২০২১

হাটহাজারী প্রতিনিধি 
২৬ মার্চ হাটহাজারীতে হেফাজতের তান্ডবের ঘটনায় আরও ২ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে হাটহাজারী মডেল থানায়। এই দুই মামলায় আসামী করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের  সাবেক আমির বর্তমান আহ্বায়ক  আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।  তার সাথে  তালিকায়  আছে বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতা ব্যারিস্টার মীর হেলাল, হাটহাজারী উপজেলা জামায়েতের আমিরসহ ১৪৮ জন। 
গত ২৬ ও ২৭ মার্চ হাটহাজারী থানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সড়ক অবরোধের ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) হাটহাজারী থানায় এসব মামলা দায়ের করা হয়। গত  সোমবার (২৬ এপ্রিল) তা  প্রকাশ হয়। এই দুইটিসহ ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া তিন মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ৩ হাজার জনকে আসামী করা হয়েছে।
হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান , ‘গত ২৬ ও ২৭ মার্চে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার সব ডকুমেন্টস আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে  প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
তিন মামলার এজাহারে বলা হয়, হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে হাটহাজারী সদর, ইছাপুর বাজারে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও রাস্তায় দেয়াল দিয়ে আসামিরা অস্থিরতা সৃষ্টি করে। আসামিরা ২৬ থেকে ২৮ মার্চ রাস্তায় দেয়াল নির্মাণ, থানা ও ভূমি অফিসে হামলা, অগ্নিসংযোগসহ পুলিশের ওপর হামলা করেন।একটি মামলার বাদী চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) কনস্টেবল মো. সোলায়মান। এ মামলায় আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী সহ ১৬ জনের নামে আশামি করে বাকী  অজ্ঞাত পরিচয় দেড়শ থেকে ২শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে। কনস্টেবল মো. সোলায়মানকে ২৬ মার্চ মাদ্রাসার ভেতর অবরুদ্ধ করে রাখার পরের দিন সন্ধ্যায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। আরেক মামলার বাদী হাটহাজারী মডেল থানার পরিদর্শক আমির হোসেন। এ মামলায় জুনায়েদ বাবুনগরী, হেফাজত নেতা সহ উপজেলা জামায়াতের আমিরসহ ৭৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আসামি আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার জন। এ মামলাটি করা হয় সড়কে অগ্নিসংযোগ করে প্রতিবন্ধকতার মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টির দায়ে। 
অন্যদিকে হাটহাজারী থানার এস আই হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে তৃতীয় মামলাটি করেছেন। এ মামলায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের নেতাসহ- উপজেলা হেফাজতে ইসলামের নেতা সহ ৫৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আসামি আড়াইশ থেকে তিনশ জন। তাদের বিরুদ্ধেও ইছাপুর বাজারে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, থানা ও ভূমি অফিসে হামলা, অগ্নিসংযোগসহ পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়। গত ২৬ মার্চ হেফাজতের তাণ্ডবের পঁাচ দিন পর গত ৩১ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানা ভবনে হামলা, ভূমি অফিসে ভাঙচুর, ডাকবাংলোয় আগুন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ছয়টি  মামলা করে পুলিশ। হাটহাজারী থানায় চারটি  মামলার বাদী  হলো পুলিশ। আর ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা দায়ের করেন দুটি মামলা। তবে প্রায় দুই হাজার জনকে আসামি করা হলেও কারো নাম নেই এসব মামলায়। সাত মামলার সব আসামিই অজ্ঞাত। ওই সময় থেকে মামলাগুলো তদন্ত করছিল পুলিশ। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ মার্চ শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এর প্রতিবাদে হাটহাজারীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা থানায় হামলা চালালে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এই ঘটনায় হাটহাজারীতে চারজন নিহত হন। নিহতের জেরে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা হাটহাজারী থানা, ডাকবাংলো, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে হামলা চালান। তঁারা হাটহাজারী- মাদ্রাসার সামনে খাগড়াছড়ি সড়কের ওপর দেয়াল তৈরি এবং সড়ক কুড়ে তিনদিন অবরোধ করে রাখেন।

   




error: Content is protected !!