মুজিব জম্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধান মন্ত্রীর দেওয়া গৃহহীনদের ঘরের তালিকায় অনিয়ম, কালিয়া ইউনিয়ন উপ-সহকারী (ভুমি) কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ

প্রকাশিত: ৬:৩৪ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২১

কালিয়া নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইলে কালিয়া উপজেলায় পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন উপ-সহকারী (ভুমি) কর্মকর্তা মাহামুদ মোল্যার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত হয়েছে। বিগত ২৫ মে/২১ এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করাহয়। মুজিব জম্মশতবর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের মাঝে প্রধান মন্ত্রী সেখ হাসিনার উপহার সরকারি ঘর বারাদ্দে অনিয়ম ও দুর্ণীতি অভিযোগ দাখিল করেন পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কবির (তপন)। ১৩ জুন (রবিবার) উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মোঃ জহুরুল ইসলাম এ তদন্ত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়াম্যান মোকাররম হোসেন (হিরু), ইউপি মহিলা সদস্য হিরা বেগম, টিপু সুলতান ও অভিযোগকারী এলাকাবাসী। এলাকাবাসীরা জানান, প্রতিটি ঘরেই ইউনিয়ন উপ-সহকারী (ভুমি) কর্মকর্তা মাহামুদ মোল্যা অনিয়ম ও দুর্ণীতির করে নগত অর্থ হতিয়ে নিয়ছে, তবে তিনটি ঘর বরাদ্দ হয়েছে একেবারেই নিয়মবহির্ভূত ভাবে। চরসিংগাতী গ্রামের জিহাদ চৌধুরীর স্ত্রী নারগিস বেগমের নামে ঘর বরাদ্দ হয় কোন নিয়মে? তার স্বামী মার্ডার মামলায় জেলে আছে, প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বসতবাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছে। এখন ছাপড়া উঠিয়ে আছে। কিন্তু তাদের আড়াই বিঘা জমি এখনো আছে, কি করে তারা ভুমিহীন হয়? চাপাইল গ্রামের মৃত হাকিম শেখের মেয়ে খুশী বেগম, স্বামীর বাড়ী ঢাকার বিক্রমপুরে অথচ এখানে তার নামে ঘর বরাদ্দ হয়েছে। এলাকাবসী আরো জানান, মাহামুদ মোল্যা স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীদের হাতে রেখে এ দুর্ণীতি করে যাচ্ছে। আর এখানে অনেক ভুমিহীন থাকা সত্ত্বেও অন্য এলাকার লোক কি করে ঘর পায়? এবং তদন্তকালে তারাই বড় কথা বলে অনিয়ম ও দুর্ণীতি চাঁপা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। চাপাইল গ্রামের বৃদ্ধ মজিবর রহমান মোল্যা (৭১) বলেন, রকিব মাষ্টারের ছেলে দিদার বিশ্বাস কি করে ভুমিহীনের ঘর পায়? ওরা ৪ ভাই, বসতভিটায় ওদের ২৬ শতক জমির উপর একটি পাঁকা ঘর ও বিল্ডি আছে এবং মৃত: রকিত মাষ্টারের নামে এই গ্রামেই চাষযোগ্য সাড়ে তিন বিঘা জমি আছে, তাছাড়া নলামারা গ্রামেও ওদের জমি আছে। এরা কি করে ভুমিহীনের ঘর পেল? ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম কবির বলেন, মার্ডার মামলার আসামী আড়াই বিঘা জমি থাকলেও মুজিব বর্ষের উপহার প্রধানমন্ত্রীর ঘর বরাদ্দ পায়, বসতভিটায় ২৬ শতকের ওপর পাঁকাঘর, ডাঙ্গায় জমি সাড়ে তিন বিঘা এরাও ভুমিহীন, ঘর পাচ্ছে দলিলও হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। কোন আইনে এদের নামে ঘর বরাদ্দ ও দলিল হয়? ভুমি সহকারী মাহামুদ মোল্যার বিরুদ্ধে এর আগেও জেলা প্রশাসকে কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়ছে, খাজনার রশিদে কম টাকা উঠিয়ে বেশী টাকা নেওয়া, ভাড়া বাসায় অফিসের ল্যাবটব রেখে কাজ করা, অর্থের বিনিময়ে সরকারি ঘর বরাদ্দসহ নানা দুর্ণীতির বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দাখিল হয়েছে এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় তা একাদিক বার প্রকাশিতও হয়েছে। একেরপর এক দুর্ণীতি করেই যাচ্ছে অথচ ম্যানেজ করে ঠিকই তার কৃতকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে, এটা দুঃখজনক। সাধারণ জনগন ক্ষেপে গেলে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারেবলে তিনিজানান। এ বিষয়ে পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়াম্যান মোল্যা মোকারম সংবাদিকদের জানান মুজিব জম্মশতবর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের মাঝে যে ঘর বিতারণ করা হবে তার তালিকা কখন হয়েছে আমি জানিনা, ইউনিয়ন ভূমি সহ-কারী নিজের ইচ্ছা মতো তালিকা তৌরি করেছে। অভিযুক্তদের নামে বরাদ্দকৃত ঘর দলিল হবে কিনা? জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) জহুরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের তদন্ত হয়েছে, অভিযুক্তদের কাগজ পত্র দাখিল করতে বলেছি। বরাদ্দকৃতদের নামে দলিল সম্পাদন হবে এবং ২০ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্ভোধন করবেন। তবে তদন্ত রিপোর্ট তাদের বিপক্ষে গেলে তাদের বরাদ্দ ও দলিল বাতিল করা হবে।




error: Content is protected !!