কলাপাড়ায় দেশী গরুর চাহিদা ব্যাপক কোরবানীর পশুর হাট পুরো জমজমাট ॥
রাসেল কবির মুরাদ,কলাপাড়া প্রতিনিধি ঃ পযটন কেন্দ্র
কুয়াকাটা-কলাপাড়াসহ সমুদ্র উপকুলীয় এলাকায় জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট।
শনিবার থেকে বিভিন্ন হাটে হাটে দেশি জাতের গরুর পাশাপাশি ছাগল ও মহিষও
বিক্রি হচ্ছে। তবে এবছর বাজারে দেশী গরুর চাহিদা অনেক বেশি। বড় গরুর
চাহিদা কম দেখা গেছে। দামের দিক থেকেও গত বছরের তুলনায় অনেক কম বলে
জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি মানছেন
না ক্রেতা-বিক্রেতাসহ দর্শনার্থীরা। উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে
স্বাস্থবিধি মেনে পশুর হাট বসানোর জন্য নির্দেশনা থাকলেও পশুর হাটে
স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কুয়াকাটা পৌর মেয়র
আনোয়ার হাওলাদার।
সরেজমিনে কুয়াকাটা-কলাপাড়াসহ সমুদ্র উপকুলীয় এলাকার বিভিন্ন সাপ্তাহিক
পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর কোরবানীর পশু ও মানুষের ভীড়,
ক্রয়-বিক্রয়ও ছিল ভালো, বড় গরুর পাশাপাশি ছাগল, মহিষও ছিল হাটে। কেউ ক্রয়
করে নিয়ে যাচ্ছেন, আবার কেউ বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে আসছেন। কেউ আবার পশু
বিক্রির কাঙ্খিত দামের অপেক্ষায়। উপজেলা প্রশাসন ও ইজারাদারের পক্ষ থেকে
স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট পরিচালনার কথা বললেও ক্রেতা বিক্রেতাদের
বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনিহা দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা
করে মাস্ক না পড়ার কারণ জানতে চাইলে ক্রেতা-বিক্রেতারা বলেন গরুর হাটে
আবার স্বাস্থ্যবিধি কিসের। মাস্ক পড়ে গরু কেনাবেচা হয় না।
কুয়াকাটা পৌরসভার হাটে গরু বিক্রি করতে আসা আজিমপুরের সানিয়াত (৪০)
দক্ষিনের স¤্রাট নামে একটি গরু বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। যার ওজন ১০
মনেরও বেশি। স¤্রাটের দাম হাকা হয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। কিন্তু ক্রেতারা ২
লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি দাম বলছে না। কাঙ্খিত দাম না বলায় স¤্রাটকে ফেরত
নিয়ে গেছে গরুর মালিক সানিয়াত। কুয়াকাটা পৌর সভার ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা
সৈয়দ মোহাম্মাদ রিয়াজ কালা পাহাড় নামে একটি গরু হাটে নিয়ে এসেছে। কালা
পাহাড়ারের ওজন ৯ মন। আড়াই লাখ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু
ক্রেতারা ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি দাম বলছে না। কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় কালা
পাহাড়কে ফেরত নিয়ে গেছে। গরুর মালিক রিয়াজ জানান, উপযুক্ত দাম পেলে
বিক্রি করবো।
কুয়াকাটা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সহিদ দেওয়ান এ প্রতিনিধিকে
বলেন, জাতির পিতা বঙ্গকন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার কন্যা মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে পশু কোরবানী দিবেন। এজন্য তিনি হাটে হাটে
ঘুরে লাল রঙের দুটি ষাড় কিনেছেন, ৭০ হাজার টাকা করে দুইটি ষাড় ১ লাখ ৪০
হাজার টাকা দামে কিনেছেন, গরুর দাম মোটামুটি সাধ ও সাধ্যের মধ্যে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নামে কোরবানী দেওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি এই গরু দু’টি
কিনেছেন। পৌর এলাকার দূস্থ্য ও গরীব মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর নামে
গোস্ত ভাগ করে দেবেন তিনি।
আরেক ক্রেতা রহিম খান ও সাকিব বলেন, অনেকক্ষণ ঘুরে পছন্দের গরু ক্রয়
করেছি। এবছর তুলনামুলক গরুর দাম কম বলে জানায় তারা।
কুয়াকাটা, মহিপুর, কলাপাড়াসহ সমুদ্র উপকুলীয় এলাকার হাট ঘুরে দেখা গেছে
হাটে প্রচুর পরিমান কোরবানীর পশু উঠেছে। ক্রেতা বিক্রেতাদের ভীড়ে জমে
উঠেছে পশুর হাট। দাম নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের মাঝে তেমন কোন অভিযোগ
ছিলনা। করোনা মহামারির মধ্যেও এবছর পশু কোরবানী দেওয়ার হার গত বছরের চেয়ে
বেশি বলে জানান অনেকেই, কারন দাম কম হওয়ায় অল্প টাকায় ভাগ হতে পেরেছেন।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো: আনোয়ার হাওলাদার গনমাধ্যমকে বলেন, হাটে প্রচুর
পরিমান পশু এসেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভীড়ে জমে উঠেছে হাট। পৌরসভার গরুর
হাটে শতাধিকের বেশি গরু কেনা-বেচা হয়েছে। দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে
রয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচা-কেনার জন্য চাপ সৃষ্টি করেও কোন লাভ
হচ্ছে না। ক্রেতা-বিক্রেতারা কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানতে নরাজ। এরপরও সবাই
মিলে চেষ্টা করছেন যাতে ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি
মেনে চলেন।