হাকিমপুরে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পুরণ করলেন নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাউসার

প্রকাশিত: ৩:৩৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১

আসলাম উদ্দিন
দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার ১নং খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের মাঝে দেওয়া প্রতিশ্রুতি (এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস) পুরণ করে চেয়ারে বসলেন নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার রহমান।

রবিবার (১২ ডিসেম্বর) উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সম্পূর্ণ হয়েছে। শপথ বাক্য পাঠ করান দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে উপজেলার১নং খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাউছার রহমান নির্বাচন মাঠে সাধারণ ভোটারদের মাঝে নির্বাচনী ইশতেহারে হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারলে আমার ইউনিয়নের সর্বসাধারণের জন্য (এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস)এর ব্যবস্হা করবো ইনশাআল্লাহ। ইশতেহার এর ওয়াদা পুরণ করতে শপথ গ্রহণ শেষে ওইদিন (১২ ডিসেম্বর) রাতে একটি “এ্যাম্বুলেন্স” নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হলেন চেয়ারম্যান কাউসার রহমান। এঘটনায় এলাকায় সাথে সাথে আলোচনার ঝড় ওঠে। এ্যাম্বুলেন্সটি দেখতে রাতেই অনেক উৎসুক জনতা ভির করে।

জানাগেছে, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাউছার রহমান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। তার ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক চেয়েছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মালেক মন্ডলসহ মোট পাঁচ জন। পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক নৌকার মাঝি হয়েছিলেন আব্দুল মালেক মন্ডল। এরপর দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন জয়লাভ করেন এবং ওই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের ভরাডুবি হয়েছে। এটি তার জীবনের প্রথম নির্বাচন। প্রথম নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় সাধারণ মানুষের মতো তিনি নিজেও খুব খুশি।

এবিষয়ে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাউছার রহমান জানান, সব শ্রেণি পেশা মানুষের সাথে মিশা এবং ভালোবাসা দিয়ে তাদের মন জয় করা আমার পেশা নয় নেশা। আমি ছাত্র জীবন থেকে ক্রীড়াকে খুব পছন্দ করতাম। এলাকার গরীব দুঃখী অসহায় মানুষের পাশে আমার সাধ্য মতো দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। করোনা কালিন সময়ে অত্র ইউনিয়নের বিভিন্ন মসজিদ ও হাটে বাজারে সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক, হ্যান্ডস্যানেটাইজার ও সাবানসহ বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। এরপর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি নৌকার মাঝি হওয়ার জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছিলাম। কিন্তু দলীয় হাইকমান্ড এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক নৌকার মাঝি হলেন আব্দুল মালেক মন্ডল। পরবর্তীতে আমি বিশ্বাস করলাম এলাকার জনগণ আমাকে মন থেকে ভালবাসে এবং নির্বাচনে আমি জয়লাভ করবই ইনশাআল্লাহ। তাই আমি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলাম এবং জয়লাভ ও করেছি।
তিনি জানান, নির্বাচন মাঠে সাধারণ ভোটারদের মাঝে আমার ওয়াদা ছিলো আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে এলাকার সর্বসাধারণের জন্য শুধু তেল খরচ দিয়ে (এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস) এর ব্যবস্হা করবো। সে কারণে ১২ ডিসেম্বর শপথ গ্রহণ শেষে ওইদিন রাতেই এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পরিষদে আসি। আমি এলাকার সর্বসাধারণের প্রতি খুব খুশি এবং আমিও আমার ওয়াদা রক্ষা করেছি। আমি আজ ইউনিয়ন পরিষদে প্রথম সভা করেছি। পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে পরিষদের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করবো।

উল্লেখঃ গত ১১ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে চার জন লড়াই করেন। আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) আনারস প্রতীক নিয়ে ৪৮৪৭ ভোট পেয়ে বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থীত (স্বতন্ত্র) আব্দুল মালেক ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ৪৬৩৯ ভোট পেয়েছেন। আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে আব্দুল মালেক মন্ডল পেয়েছেন ৩২০৭ ভোট। জামিল উদ্দিন (স্বতন্ত্র) টেলিফোন প্রতীক নিয়ে মাত্র ৩৭ ভোট পেয়েছেন। অত্র ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৫৯৯৫ জন। মোট বৈধ ভোট ১২৭৩০ এবং বাতিল ভোট ২৮০।




error: Content is protected !!