উমার রাযী। কক্সবাজার প্রতিনিধি-
ভিক্ষুক-টোকাইদের কারণে বিব্রত কক্সবাজারের দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের আশেপাশে, পর্যটক এলাকাগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে এখন ভিক্ষুক ও টোকাইদের আনাগোনা বেশ চোখে পড়ার মতো। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় হঠাৎ এই সংখ্যা কয়েক গুন বেড়ে গেছে। তাদের কারণে রাস্তায় চলাফেরা এখন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এই ভিক্ষুকের মধ্যে অনেকেই ছদ্মবেশে ছিনতাই পর্যন্ত করে যাচ্ছে হরহামেশা।
এই ভিক্ষুক ও টোকাইদের ব্যপারে ব্যপক অভিযোগ করে যাচ্ছেন পর্যটক ও স্থানীয়রা। তাদের অনেক কর্মকাণ্ডে দারুণভাবে বিব্রত হতে হচ্ছে পর্যটক সহ স্থানীয় জনসাধারণ। ভিক্ষুক ও টোকাইয়ের হাতে প্রতিনিয়ত প্রতারণা ও লাঞ্ছনার শিকারও হচ্ছেন তারা। স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও তাদের থামিয়ে রাখা যাচ্ছে না। দিন দিন বেড়েই চলেছে তাদের উৎপাত।
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে প্রতিনিয়ত দেশি-বিদেশি লাখো পর্যটক ঘুরতে আসেন। তবে সৈকতে নিরিবিলি পরিবেশে শান্তি খুঁজতে এসে পর্যটকরা পড়ছেন বিপাকে। ভিক্ষুক ও টোকাইরা অতিষ্ট করে তুলছে পর্যটকদের। এ ছাড়া তাদের হাতে হয়রানির শিকারও হচ্ছেন অনেক পর্যটক। এমনটাই অভিযোগ পর্যটক সহ স্থানীয়দের।
অনেকেই কক্সবাজার বেড়াতে আসে কিছু একান্ত সময় পার করতে। কিন্তু এখানে এসে আরও বিপাকে পড়ে যায় তারা। কিছুক্ষণ পরপর ভিক্ষুকরা এসে টাকা চায়। একজনকে বিদায় করতে না করতে চলে আসে আরেকজন। প্রতি ঘণ্টায় যদি প্রায় ১০/২০ জন ভিক্ষুক যদি ভিক্ষা চায়, তাহলে একজন মানুষের অবস্থা কি হতে পারে। ভিক্ষুকদের এহেন কর্মকাণ্ডে রীতিমতো বিরক্ত ও হচ্ছেন পর্যটকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওরা যখন কোন লোককে অনুসরণ করে টাকা না পাওয়া পর্যন্ত তায়ার পিছু ছাড়ছে না। গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথেই পর্যটকদের কাছে টাকা চাওয়া শুরু করে না দেয়া পর্যন্ত পিছু পিছু বীচ পর্যন্ত চলে যায়। শেষ পর্যন্ত পর্যটকরা টাকা দিতে বাধ্য হয়। এরকম পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয় ৫/১০ মিনিট পর পরই। পর্যটকদের অভিযোগ এটা ভিক্ষা নয়, জো’র করে টাকা আদায় করা।
যারা কক্সবাজার বেড়াতে এসেছেন তাদের সবাই কম বেশি এই পরিস্থিতির স্বীকার। তাদের বাড়াবাড়ির কারণে গাড়ি বা রিকশা থেকে নেমে ড্রাইভার কে ঠিকমতো ভাড়া ও দেয়া যায় না। গাড়ি বা রিকশা থেকে নেমে ড্রাইভারকে ভাড়া দেয়ার আগেই তারা তাদের টাকার জন্য চারদিকে ঘিরে ধরে। কেউ কেউ অদ্ভুত আচরণও করে বসে। অনেকেরই অভিযোগ এই ভিক্ষুকরা সাধারণ কোন ভিক্ষুক নয়, এদের পিছনে রয়েছে মজবুত এক প্রতারক চক্র। এই ভিক্ষুকরা সারাদিন টাকা সংগ্রহ করে ওই চক্রের কাছে জমা দেয়। আর ওই চক্রের লোকেরা ওদেরকে মাসিক একটা বেতন প্রদান করে। এইসব ভিক্ষুকদের দিয়ে টাকা জোগাড় করে ওই প্রতারক চক্র নিজেরা টাকার পাহার বানাচ্ছে।
এই ব্যপারে টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন বলেন, পর্যটকরা যেন হয়রানির শিকার না হন সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখব।