নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন হলুদের সমারোহ। সরিষা ফুলের রূপ ও গন্ধে মাতোয়ারা দিগন্ত। প্রতিবছরের মতো এবারো নন্দীগ্রামে সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় অতিক্রম করছে মৌ খামারিরা। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সরিষা ক্ষেতের পাশে ফঁাকা জমিতে পোষা মৌমাছির শতশত বাক্স সাজিয়ে রাখা হয়েছে। মৌমাছির দল ভুভু শব্দ করে সরিষা ফুলে ঘুরেঘুরে মধু আহরণ করছে। মুখভর্তি মধু সংগ্রহ করে ফিরে আসে মৌ খামারিদের বাক্সে। সেখানে তাদের সংগৃহিত মধু জমা করে আবার ফিরে যায় সরিষার ক্ষেতে। এভাবে দিনব্যাপি মৌমাছিরা যেমন মধু সংগ্রহ করছে। তেমন ফুলেফুলে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে ওই জমির সরিষা ফুলে পরাগায়ণ করতে সহায়তা করছে মৌমাছির দল। মৌ খামারিরা জানিয়েছে, একটি বাক্সে ৮-১০টি মোম দিয়ে তৈরি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়। আর মৌ বাক্সের ভেতরে রাখা হয় রাণী মৌমাছি। ফুল থেকে মৌমাছিরা মধু এনে বাক্সের ভিতরের চাকে জমা করে রাখে। রাণী মৌমাছির কারণে ওইসব বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে। বাক্সের মাঝখানে নিচের দিকে ছিদ্র করে রাখা হয়। সে পথ দিয়ে মৌমাছিরা আসা-যাওয়া করতে থাকে। বাক্সের ভিতরের চাকগুলোতে মধুতে পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ দিন। এরপর মৌ খামারিরা মধু বাক্স খুলে চাকের ফ্রেম থেকে মেশিনের সাহায্যে মধু সংগ্রহ করে থাকে। পঞ্চগড় জেলার ঝিটকিখুড়া গ্রাম থেকে আসা মৌ খামারী সাদিত হোসেন বলেন, আমরা ৯ ডিসেম্বর নন্দীগ্রামে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য এসেছি। আশাকরি ভালো পরিমাণ মধু সংগ্রহ করতে পারবো। সরিষা ফুলের জন্য আমরা বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, কালোজিরা ফুলের জন্য শরীয়তপুর, লিচু ফুলের জন্য দিনাজপুর ও নাটোর, কুমড়া ফুলের জন্য ঠাকুরগাঁও ও তিলের ফুলের সময় নিজ এলাকাতেই মধু সংগ্রহ করি। এছাড়া ৪-৫ মাস মৌমাছিদের চিনি খাইয়ে রাখতে হয়। বছর শেষে খরচ বাদে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আদনান বাবু জানান, যে সকল সরিষা ক্ষেতে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে সেই জমিগুলোতে অন্য জমির তুলনায় ১৫-২০ ভাগ ফলন বেশি হবে। কারণ মৌমাছিরা ফুলে পরাগায়ন করতে সহায়তা করে। এছাড়া এলাকাবাসী অল্পমূল্যে খঁাটি মধু পাচ্ছে।