নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে সন্তানদের আদর্শবান নাগরিক ও সত্যিকারের মুসলিম হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
আজকের তরুণরাই আগামী দিনের দেশ ও জাতির কর্ণধার। তরুণ অর্থাৎ যুবসমাজই পারে শত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে দেশকে স্বপ্নের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, যুবসমাজ এখন বিপথে পরিচালিত হচ্ছে। যুবসমাজের অবক্ষয়ের কারণে জাতি হতাশায় নিমজ্জিত। যুবসমাজের অবক্ষয় জাতির বুকে গভীর ক্ষত তৈরি করছে। গোটা সমাজকে ঠেলে দিচ্ছে অনিশ্চিত অন্ধকারের দিকে। আর এই সমস্যার প্রতিকার না হলে দেশ ও জাতি ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হবে।
আজকের পৃথিবীর দিকে তাকালে দেখতে পাই বিশ্বব্যাপী পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং শিক্ষাঙ্গনসহ সর্বক্ষেত্রে অবক্ষয়ের ছাপ। নৈতিক মূল্যবোধগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। ভীতসন্ত্রস্ত, অশান্তি ও অস্থিরতা বাড়ছে পুরো পৃথিবী জুড়ে। ফলে পারিবারিক কলহ, অবাধ যৌনাচার, অশ্লীলতা, যৌন বিকৃতি, কুরুচিপূর্ণ সমকামী ও বহুকামিতার মতো পশুসুলভ যৌন আচরণ সমাজকে নিয়ে যাচ্ছে অবক্ষয়ের দ্ধারপ্রান্তে।
নৈতিক শিক্ষার প্রথম কেন্দ্র হচ্ছে পরিবার। পরিবারের সদস্যরা যদি নৈতিক হয়, শিশুরাও হয়ে উঠে নৈতিক। বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবার যদি এখন থেকে নৈতিকতার বিকাশে সোচ্চার হয়, তাহলে নিদ্বির্ধায় আমরা পাব একটি আদর্শ সমাজ। যেখানে অন্যায় নামক শব্দটির পাত্তা থাকবে না। অন্যায় নামক শব্দটিই হবে একটি নিখোঁজ শব্দ। আমরা শিশুদের হাতে ছোট্ট বয়সেই ফোন তুলে দেই। যেটা একটা মারাত্মক ভুল। শিশুদের সব আবদার আপনার মেটাতে হবে না। বরং তাকে লড়াই করা শেখাতে হবে, তাকে জানাতে হবে পৃথিবী কতটা নিষ্ঠুর। চাওয়ার সঙ্গে পেলেই শিশুরা মনে করবে পৃথিবীতে হয়ত সবকিছু খুব সহজেই পাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তব জীবনে এসে পরিণত বয়সে যখন সে কোনোকিছুই সহজে পায় না, তখন আশ্রয় নেয় অসৎ পথের।
সোস্যাল মিডিয়া ফেইসবুক, ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ার খবরের প্রায় ৫০% খবরই সমাজিক অবক্ষয়ের। পত্রিকা পাতা খুললেই চোখে পড়ে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন, স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন, প্রেমিকার হাতে প্রেমিক খুন, প্রেমিকের হাতে প্রেমিকা খুন, ভাইয়ের হাতে ভাই খুন, ছেলের হাতে মা খুন, দোলা ভাইয়ের হাতে শালী খুন, পুত্রের হাতে পিতা খুন ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার খুন, ধর্ষণ, গুমের খবরও কম নয়। বিশেষ করে শিশু ধর্ষণের খবর দেশের সর্বত্রই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
পরিশেষে বলব, নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে সন্তানদের আদর্শবান নাগরিক ও সত্যিকারের মুসলিম হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে মরণব্যাধি অবক্ষয় থেকে দেশ, জাতি, সমাজকে রক্ষা করা সম্ভব। আজ আমাদের যুব সমাজের সমস্যা অত্যন্ত প্রকট আকার ধারণ করছে। তারা আজ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। যুব সমাজকে যদি রক্ষা করা সম্ভব না হয়, তাহলে সমাজের অবক্ষয় দূর করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না। তাই আমরা সবাই সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের যুব সমাজকে রক্ষা করতে এবং তাদেরকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানো প্রাণপণ চেষ্টা যেন চালিয়ে যাই।
আল্লাহর নিকট আমাদের কামনা আল্লাহ তা‘আলা যেন, আমাদের যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে আমাদেরকে একটি সুন্দর সমাজ উপহার দেন। আমীন।