কুয়াকাটা সৈকতে ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে, পঁচা-দুর্গন্ধে ত্যক্ত-বিরক্ত পর্যটক ॥
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি ঃ সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের লীলাভূমি
পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। সৈকতের প্রাকৃতিক অপার এ সৌন্দর্য
যে কাউকেই মুগ্ধ করে। প্রতিবছর কুয়াকাটা সৈকতে আগমন ঘটে লক্ষ পর্যটকের।
সৈকতে যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। বিভিন্ন স্থানে নিচু
জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে জমে রয়েছে পানি। ফলে দূষিত হচ্ছে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার
সৈকতের পরিবেশ। পঁচা-দুর্গন্ধে আগত পর্যটকদের চোখে-মুখে দেখা যায়
বিরক্তির ছাপ। পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংকট এবং প্রতিনিয়তই সৈকত পরিচ্ছন্ন না
করার ফলে এমন দুরাবস্থা হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয় এলাকাবাসীদের।
স্থানীয় সূত্র ও সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরাই
খাবারের অবশিষ্টাংশসহ বিভিন্ন প্লাষ্টিকের বোতল ফেলে রাখছে সৈকতে। সৈকতের
জিরো পয়েন্টের পশ্চিম পাশে ও পূর্ব পাশে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী ফুসকা-চটপটি
এবং ফিস-ফ্্রাইয়ের দোকানের বর্জ্যও ফেলে রাখা হয় সৈকতে। সৈকতের
বেড়িবাঁধের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা বিভিন্ন হোটলের পানি এসে পড়ে সৈকতে। এসব
পানি সৈকতের পশ্চিম পাশের নিচু স্থানে জমে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সৈকতে পরে
থাকা খাবারের অবশিষ্টাংশ এবং পঁচা পানি ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, এ দুর্গন্ধে
অনেকটাই ত্যক্ত-বিরক্ত পর্যটক। সৈকতের গঙ্গামতি, ঝাউবাগান ও লেম্বুর চরে
প্রায়ই ভেসে আসছে মৃত জেলিফিস। এসব জেলিফিস পঁচে দুর্গন্ধ ছড়ালেও অপসারনে
নেই কোন উদ্যোগ।
সৈকতের ছাতা ব্যবসায়ী বেলাল খলিফা এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমরা সৈকত সব সময়
পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করি। পৌরসভা সপ্তাহে দুইবার সৈকত পরিচ্ছন্ন করে।
আমরা তাদের টাকা দেই। কিন্তু পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংকট রয়েছে। সৈকত লাগোয়া
আরেক কসমেটিক্স ব্যবসায়ী জোনায়েদ খান বলেন, পৌরসভার কর্মীরা সঠিকভাবে
সৈকত পরিচ্ছন্ন করেনা, তাই সৈকতের এ দুরাবস্থা।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা জুয়েল-জলি দম্পতিএ প্রতিবেদককে জানান, কুয়াকাটা
সমুদ্র-সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদের হৃদয় কেড়ে নেয়। কিন্তু পশ্চিম
পাশে জমে থাকা পানি থেকে বের হওয়া পচা-দুর্গন্ধে সৈকতের তীরে বেঞ্চিতে
বসে সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করতে পারছিনা। রাজশাহী থেকে ঘুরতে আসা আরেক
পর্যটক গোবিন্দ কর্মকার জানায়, প্লাষ্টিকের বোতলসহ খাবার ফেলে রেখে সৈকত
অপরিচ্ছন্ন করছি। আমাদের সচেতন হওয়া জরুরী। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো
সৈকতটি ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখছে। সৈকত এলাকা
পরিচ্ছন্ন রাখতে কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানান।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির
সদস্য সচিব আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক গনমাধ্যমকে বলেন, সৈকত
পরিচ্ছন্নতার কাজে ৪০ জন কর্মী রয়েছে। এছাড়া পৌরসভার কর্মী এবং বে-সরকারী
সংগঠন ব্লুগার্ডের সদস্যরা এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। তবে সৈকতে পরিচ্ছন্নতা
কর্মীর সংকট রয়েছে। বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি শীঘ্রই আরো কিছু
পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ দিয়ে পরিচ্ছন্ন কাজের গতিশীলতা বাড়ানো হবে বলে তিনি
জানান।