হাটহাজারী হালদায় বিলীন সত্তারঘাট অংকুরীঘোনা সড়ক ও স্লুইসগেট দুই পাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন
আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চেঙ্খালি স্লুইট গেট ধসে পড়ার পর হালদায় বিলীন হয়েছে যাতায়াত সড়ক। বন্ধ রয়েছে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা। চরম ভোগান্তিতে দিনাতিপাত করছে দুই পাড়ের হাজারো মানুষ। একশ একরের বেশী কৃষিখাতসহ ফসলিজমি প্লাবিত। হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের সত্তারঘাট অংকুরীঘোনা সড়কের কথাই বলা হচ্ছে। চেঙ্খালি স্লুইসগেট ধসে পড়ার পর হালদার জোয়ারের পানির স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে সড়কের একটি অংশ। ফলে গড়দুয়ারা, মেখল ইউনিয়ন, রাউজান উপজেলার গহিরা অংকুরীঘোনা এলাকার হাজারো মানুষ চরম ভোগান্তিতে দিনাতিপাত করছে। সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারনে দু পাড়ের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড যাতায়াত স্বাভাবিক রাখতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও জোয়ারের পানির তীব্রতার সামনে দাড়াতে পারেনি। ফলে দুর্ভোগ থেকেই গেল। সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, স্থানীয়রা পরিত্যক্ত স্লুইসগেটের দু পাশে বাঁশ ও বড় বড় গাছের খুঁটি দিয়ে অস্থায়ী সাঁকো বানানোর চেষ্টায় ব্যস্ত। তবে তা পারাপারকারীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান অনেকে। এদিকে স্লুইসগেট ধসে সড়ক বিলীন হওয়ায় হালদা নদীর জোয়ারের পানি পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রবেশ করে হাটহাজারী মরিচ, ধানের জমিসহ বিভিন্ন ফসলিজমির বিরাট ক্ষতিসাধন হয়েছে। একশ একরের অধিক জমি প্লাবিত হয়ে নিঃস্ব হয়েছে শত শত কৃষক। এর কারনে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির শিকার হয়েছে তারা। পাড়ে বসে সাঁকো তৈরীতে পরামর্শ দিতে ব্যস্ত কান্দর আলি হাজির বাড়ির মরহুম আব্দুল গফুর মাস্টারের পুত্র ও তালিমুল কোরান নুরাণী মাদ্রাসার গভর্ণিং বোডির সভাপতি ডাঃ শামসুল হক (৭৭) আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের ভোগান্তি লাঘবে কেউ উদ্যোগ নেয়নি এখনো পর্যন্ত। সবাই এসে দেখে যায়। কেউ ছবি তোলে কেউ ফিতা দিয়ে পরিমাপ করে ব্যস এতটুকুই। তিনি বলেন, এরশাদ সরকারের আমলে নির্মিত এসড়ক কখনো এমন ভাঙ্গনে পড়েনি। দীর্ঘদিন ধরে এখানে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হলেও স্থানীয়রা মেরামত করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি তখন ব্যবস্থা নিত তাহলে এত বড় ক্ষতি হত না। এখন স্থানীয়রা দুর্ভোগে অপরদিকে ব্যয় হবে সরকারের কোটি কোটি টাকা।
ঝুঁকি নিয়ে কর্দমাক্ত সড়ক দিয়ে নেমে নৌকায় করে পার হতে যাওয়া গড়দুয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষিকা রত্না বড়ুয়া ও কান্তা বড়ুয়া জানান। জানিনা কখন পড়ে শারিরীকভাবে আহত হই। বৃষ্টিতে ভয়ের পরিমান দ্বিগুন হয়েছে। ঈদের ছুটির পর কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে এভাবে পার হই। জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী বদরুল মনির হানাফী জানান, ধসে পড়া স্লুইসগেটটি অপসারন করে নতুন স্লুইসগেট নির্মান করা হবে। আগামি জুনের আগে কাজ শুরুর সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি। সড়ক মেরামতের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী জয়শ্রী দে জানান, সড়কটি মেরামতে ইতিমধ্যে উদ্যোগ নিলেও বর্তমানে যে হাল তাতে বৃহৎ পরিকল্পনা ছাড়া সম্ভব নয়। তার চেয়ে বড় বিষয় পানি উন্নয়ন বোর্ড স্লুইসগেটের কাজ কখন সম্পাদন করছেন। স্লুইসগেটের কাজ আরম্ভ না হলে সড়ক মেরামত সম্ভব নয়।