মোঃমাসুদ পারভেজ, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ-
বাগেরহাটের মোংলায় মৎস্য ঘেরে বালি উঠানোর সময় ভুগর্ভস্থ গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। এসময় গ্যাসের সঙ্গে তীব্র বেগে বালি ও পানি মিশে প্রায় ১৫০ ফুট উপরে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই গ্যাস ওঠার বিষয়টি বুঝতে পারেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ঘটনা জানাজানি হলে গ্যাস বাহির হওয়ার দৃশ্যটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন আশপাশের এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ।
উপজেলার মিঠাখালি ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার ১নং ওয়ার্ডের মৃত মোঃ আলহাজ্ব আলতাফ হোসেনের ছেলে মোঃ দেলোয়ার হোসেন (৩০) এর মৎস্য ঘেরে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শত শত উৎসুক জনতার ভীড় জমতে থাকে দেলোয়ারের বাড়িতে।
জমির মালিক দেলোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকালে ৩ বিঘা জমিতে বালি কাটার জন্য মৎস্য ঘেরে পাইপ বসানোর সময় হঠাৎ পাইপ দিয়ে গ্যাস ওঠা শুরু হয়। এসময় দেখতে পাই পাইপ বসানোর সময় হঠাৎ ৫০ ফুট উচ্চতায় গ্যাস, বালু ও পানি উপরের দিকে উঠতে থাকে। তাৎক্ষণিকভাবে একটি ড্রাম দিয়ে পাইপ বসানো হয়। সেই পাইপ লাইন থেকে আমরা এখন রান্নার কাজ করতেছি।
এর আগে প্রায় ৫/৬ বছর আগে এই মৎস ঘের থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উঠানোর জন্য পাইপ বসালে তখন গ্যাসের সন্ধান পেলে বালি উঠানোর কাজ বন্ধ করে দেই আমরা। এখন দেখি সেখান থেকে আবারও গ্যাস উঠতেছে।
দেলোয়ারের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন মিম বলেন, এই ঘেরে বালি চেক করার জন্য পাইপ লাগাইছিলো। কিন্তু সেখান থেকে এখন গ্যাস উঠতেছে। আমি এখন এই গ্যাস দিয়ে রান্না বান্না করতেছি।
গ্যাস দেখতে আসা দক্ষিণ চাঁদপাই এর উজ্জল মল্লিক বলেন, আমরা শুনেছি এই এলাকার একটি মৎস ঘের থেকে গ্যাস উঠতেছে। পরিবার নিয়ে দেখতে আসলাম। এসে সত্যিই দেখি গ্যাস দিয়ে তারা রান্না বান্না করতেছে।
স্থানিয় ইউপি সদস্য উকিল উদ্দিন ইজারাদার বলেন, আজ থেকে প্রায় ৫/৬ বছর আগে এখান থেকে এই গ্যাস ওঠে। কিন্তু কেউ কখনো মুল্যায়ন করেনি। কি পরিমান গ্যাস আছে তা আমরা বলতে পারছিনা। দ্রুত সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির মোংলা শাখার আহ্বায়ক নূর আলম শেখ জাগো নিউজকে বলেন, মাটির নীচের প্রাকৃতিক সম্পদের মালিক জনগণ। জনগনের গ্যাস সম্পদ উত্তোলন-সংরক্ষণ ও বিতরণ করে দেশের সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নের কাজে লাগাতে হবে। বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার মিঠাখালি গ্রামে দেলোয়ারের চিংড়ি ঘের থেকে তীব্র বেগে গ্যাসের উদগীরণ হচ্ছে। স্থানীয় মানুষ লোকায়ত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে পাইপ দিয়ে গ্যাসের চুলার সাথে সংযোগ ঘটিয়ে রান্নাবান্না করছে। সরকারেরর কাছে গ্যাস অনুসন্ধানের দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স’র মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরীক্ষানিরীক্ষার পর করনীয় প্রদান করে এলাকার মানুষের উদ্বেগ-উৎকন্ঠার অবসান ঘটানোর দাবি জানাই।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, আপনার মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার জানিয়েছেন, ঘটনা তিনি শুনেছেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, বিষয়টি তিনি দেখবেন।