নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
যশোরের শার্শা বেলতলা বাজারে মিলন মেডিকেল হল এর মালিক দুই ভাই মিলন ও তুহিনের বিরুদ্ধে একাধিক এনজিও ও বিভিন্ন পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ঔষধ ফার্মেসির ব্যবসা, ফ্লেক্সিলোড, বিকাশ, ও হুন্ডির ব্যবসার কথা বলে এ সকল পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সু’কৌশলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
জানা গেছে, একাধিক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে টাকা না দেওয়ার অভিযোগে দুটি এনজিও সংস্থা তাদের নামে চেক ডিজঅনারের মামলা করেছে, মামলা দুটি যশোর কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়াও শার্শা উপজেলার বাগুড়ী গ্রাম থেকে ৯ টি পরিবার ও পার্শ্ববর্তী কলারোয়া থানার কিসমত ইলিশপুর গ্রামের ৬ টি পরিবারের কাছ থেকে মোট ১৭ লক্ষ ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ভুক্তভোগী একাধিক পরিবার জানান, দীর্ঘ পাঁচ ছয় বছর আগে তাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কারও টাকা দিচ্ছে না। তারা আরও বলেন, টাকা চাইলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ১৪ টি পরিবার সাংবাদিকদের কাছে তথ্য দিলে, সাংবাদিকরা নিউজ প্রকাশ করলে ভুক্তভোগী ৪/ ৫ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো সহ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে, এতে করে ওই সকল পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতার সাথে জীবন যাপন করছে।
স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছেন, মিলন ও তুহিন আগেও অন্যের ঔষধ ফার্মেসীতে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতো। এরপর দুই ভাই বাগুড়ী বেলতলা বাজারে একটি ওষধ ফার্মেসীর দোকান দেয়। সেখান থেকে রাতারাতি দুই ভাই বনে যায় নামিদামি ডাক্তার। আর এই ঔষধ ফার্মেসীর ব্যবসা ও (ডাক্তার) নাম ব্যবহার করে চলে তাদের অন্যের অর্থ আত্মসাতের মূল পরিকল্পনা। অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে, অধিক টাকা বিল করে, পরে তাদের দাবি অনুযায়ী বিল না দিলে জোরপূর্বক টাকা আদায় করে। এছাড়াও রয়েছে মাদক সেবন ও অন্যের জমি, দোকান ঘর (মার্কেট) দখলের অভিযোগ।
এবিষয়ে মিলন মেডিকেল হল এর মালিক মিলনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেছে ঘটনা সব মিথ্যা। আমি কারোও কাছ থেকে টাকা ধার নেই নাই, আমি ১ লক্ষ টাকায় বছরে ২০ হাজার টাকা লাভ হিসাবে নিয়েছি। যদি দুই এক জন টাকা পায় তাহলে পরে দিয়ে দেবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেলতলা বাজারের এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জানান, কিছুদিন আগে বেলতলা বাজারে নুরে আলমের মার্কেট নিয়ে রফিকুলের সাথে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি নুরে আলম এবং রফিকুলের ওই বিষয়টি নিয়ে মিলন ও তুহিন রফিকুলের পক্ষ নিয়ে জমি, ও মার্কেট দখল, দোকানে তালা মেরে দোকান বন্ধ করা, এবং মার্কেটের শাটার কুড়াল দিযে কুপিয়ে নষ্ট করে ভূমিদস্যুদের মত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালায়। এতে তাদের কোনো লাভ হয়নি, যার পক্ষ নিয়ে কাজ করেছিল সে সর্বশেষ বিচারে হেরে গিয়েছিল। এতে করে তাদের অনেক টাকা খরচ হয়েছিলো। এছাড়াও একাধিক বার ফেন্সিডিলসহ ধরা খেয়ে বড় অংকের টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আসেছে, এ সমস্ত খারাপ কর্মকাণ্ডের কারণে ওদের পতন হয়েছে বলে তিনি জানান।
বেলতলা বাজার কমিটির একাধিক সদস্য জানান, ইতিমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় যে নিউজ প্রকাশ হয়েছে তা সবই সত্য, আমরা জানি তাদের দুই ভাইয়ের কাছে এলাকার অনেক মানুষ টাকা পায়, আর এ নিয়ে কলারোয়া থানাসহ স্থানীয় ভাবে অনেক বার সালিশ বিচার করা হয়েছে, কিন্তু তারা কারোর টাকা দেয় না। আর এটা আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্য লজ্জার বিষয়, আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে এ সকল মাদক সেবক, দুর্নীতিবাজ, ও অন্যের অর্থ আত্মসাৎকারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা স্বার্থে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ মুজিবর রহমান মজুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগের খবর পাওয়া গেছে সব সত্য। এবং তাদের দুই ভায়ের কাছে এলাকার অনেক মানুষ টাকা পায় কিন্তু তারা কারোও টাকা দেয় না।