কলাপাড়ায় লালুয়া ইউনিয়নে দফায় দফায় জোয়ারের পানিতে বাড়ি-ঘর প্লাবিত, ৩ টি বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে ॥
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের রাবনাবাদ নদী
পাড়ের গ্রামের মানুষেরা প্রতিদিন দফায় দফায় জোয়ারের পানিতে ভেসে বেড়ালেও
তাদের আর্তনাদ কেউ শুনছে না। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে এস এস সি ও সমমান
পরীক্ষা। পরীক্ষায় লালুয়া, ইউনিয়নের জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এস কে জি বি
মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও উত্তর লালুয়া ইউসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক
এস এস সি পরীক্ষার্থীরা চরম দূর্ভোগ পড়েছে। বৃষ্টি হলে ওরা কাঁদে, জোয়ার
হলে ভাসে। সাগর মোহনা ঘেঁষা রাবনাবাঁধ নদীর অস্বাভাবিক উচ্চতার জোয়ারে
ভাঙন কবলিত অংশ দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। প্রতি ঝড়-জলোচ্ছাসে ভেসে
যায় তাদের স্বপ্ন। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর।
মঙ্গলবার এসব দুর্গত এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এস এস সি
পরীক্ষার্থীরা যারা নিজেদের বাড়িতে অবস্থান করে কলাপাড়া পৌর শহরের
খেপুপাড়া সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এস এস সি পরীক্ষার্থী
দিচ্ছেন তারা বাড়ি থেকে অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে মটরসাইকেল, অটোরিক্সায়
পরীক্ষাকেন্দ্র যাচ্ছেন। পরীক্ষা শেষে আবার একইভাবে বাড়ি ফিরছেন। এজন্য
তাদের জনপ্রতি ২০০/৩০০টাকা গুনতে হচ্ছে।
লালুয়া ইউনিয়নের হাসনাপাড়া গ্রামের জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এস এস সি
পরীক্ষার্থী শিরিন হোসেন জানান, জোয়ারের সময় আমাদের বাড়ি ঘর পানিতে তলিয়ে
যায়। জোয়ারে সময় আমার স্কুলে ক্লাশ ঠিক মত করতে পারিনাই। গত দুই তিন আগে
জোয়ারের পানিতে বাড়ি-ঘর-রাস্তা তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় হয়তো পরীক্ষার হলে
যেতে দূর্ভোগে পরতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, রাস্তা ঘাট খারাপ থাকার কারনে
কলাপাড়া পৌর শহরের খেপুপাড়া সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র
যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে খুব সকালেই বের হতে হচ্ছে। তার সহপাঠিরা অনেকে
পরীক্ষার জন্য কলাপাড়া পৌর শহরে বাসা ভাড়া করে সেখান থেকে পরীক্ষা
দিচ্ছেন বলে জানান।
আরেক এস এস সি পরীক্ষার্থী মশিউর রহমান জানান, তাদের বাড়ি লালুয়ার ভাঙ্গন
কবলীত এলাকা চাড়িপাড়া গ্রামে বসত বাড়ি জোয়ারে তলিয়ে যাওয়ার কারনে তারা ২০
জন পরীক্ষার্থী লালুয়ার বানাতি বাজারে বাসা ভাড়া করে থাকেন। সেখান থেকে
তারা মটরসাইকেল ভাড়া কওে উপজেলা শহরের কেন্দ্রে আসা যাওয়া করে।
উত্তর লালুয়া ইউসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরাক্ষীর্থী সজীব রায়হানের পিতা
ইকবালুর রায়হান জানান, লালুয়ার চিংগড়িয়া গ্রামের বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলো
কাদাঁ রাস্তা পায়ে হেটে এসে ইটের রাস্তা হয়ে কলাপাড়া শহরের পরীক্ষা
কেন্দ্রে দিতে যেতে আসতে তাকে ৫০০ টাকার খরচ করতে হয়। উত্তর লালুয়া ইউসি
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল লতিফ জানান, আমাদের স্কুল
থেকে এবছর ৪৩ জন শিক্ষার্থী এস এস সি পরীক্ষায় অংশ নেয়। অর্ধেক
পরীক্ষার্থী শহরে আত্মীয় স্বজনদের বাসা ও অনেকে বাসা ভাড়া করে থেকে
পরীক্ষা দিচ্ছে। আর যারা লালুয়ার বিভিন্ন গ্রাম থেকে গিযে পরীক্ষা দিচ্ছে
তাদেরকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
খেপুপাড়া সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব আব্দুর রহিম জানান,
তাদের কেন্দ্রে ৩৬০ জন পরীক্ষার্থী মধ্যে প্রথম দিনে ৩৫৩ জন উপস্থিত
রয়েছে আর বিভিন্ন দুভোগের কারনে ৭ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে।