নবীগঞ্জের ফয়েজ অপহরণের ২ মাস পর আসামী সামছুল হক কারাগারে। বন্ধু জাকির সহ অন্যান্যরা গা ঢাকা দিয়েছে৷
নবীগঞ্জ ( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ফয়েজ আহমদ নামের এক ব্যবসায়ী যুবক অপহরণের ২ মাস পর অন্যতম আসামী সামছুল হক কারাগারে। এদিকে ফয়েজকে অপহরণকারী তার বন্ধু জাকির গা ঢাকা দেওয়ায় ২ মাসেও
উদ্ধার না হয়নি ফয়েজ৷ তার পরিবারে চলছে অজানা আতংক৷ তার সঙ্গীয় বন্ধু প্রধান আসামী জাকির সহ অন্যান্য আসামীরা দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর অবশেষে গত ২৮ নভেম্বর সোমবার মামলার ২নং আসামী বানিয়াচং থানার নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত মজর উল্লার পুত্র সামছুল হক (৩২), বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল আদালত বাহুবল হবিগঞ্জে স্বেচ্ছায় হাজিরা দিলে বিজ্ঞ বিচারক জনাব আব্দুল হালিম, আসামীর জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন৷
ফয়েজ আহমেদ অপহরণ মামলার আসামী ফয়েজের বন্ধু জাকির হোসেন সহ অন্যান্যরা দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছেন৷
উল্লেখ্যঃ হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামের মৃত আরজু মিয়ার ছেলে ব্যবসায়ী মোঃ ফয়েজ আহমদ (২৩) নামের যুবককে তারই বন্ধু একই এলাকার বাদে রায়ঘর গ্রামের আতা মিয়ার ছেলে, জাকির হোসেন (২৫) গত ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ী থেকে মার্কুলি বাজারে আসামী জাকির হোসেন এর বোনের বাড়ী বিয়ের অনুষ্ঠানে নিয়ে যাবার কথা বলে নিয়ে যায়। এর পর থেকেই ফয়েজ আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই তার বন্ধু জাকির মাঝেমধ্যে মোবাইল ফোনে কথা বলে আবার ফোন বন্ধ করে নানা অজুহাত দেখিয়ে গা ঢাকা দেয়৷ এদিকে অপহৃত ফয়েজের মাতা খাদেজা বেগম তার ছেলে উদ্ধারের জন্য গত ২৪ অক্টোবর ২০২২ ইং তারিখে
হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কগ-৫ আদালতে ফয়েজের বন্ধু জাকির সহ ৪জনের নাম উল্লেখ করে গং ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে উক্ত মামলাটি আমলে নিয়ে এফ,আই,আর৷ গন্যে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে৷ মামলার আসামীরা হলেন, ফয়েজ আহমেদের বন্ধু ১। জাকির হোসেন (২৮), পিতা- আতাউর রহমান, সাং- বাদে রায়ঘর, উপজেলা- নবীগঞ্জ, জেলা- হবিগঞ্জ। ২। সামছুল হক (৪২), পিতা- মৃত মজর উল্লা, সাং- নোয়াগাঁও, উপজেলা- বানিয়াচং, জেলা- হবিগঞ্জ। ৩। নিকেশ বৈষ্ণব, পিতা- জগিন্দ্র বৈষ্ণব, সাং- কবিরপুর, উপজেলা- বানিয়াচং, জেলা- হবিগঞ্জ। ও নিখোঁজ ফয়েজের মুক্তিপণ দাবী করে ৪০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া অপহরণকারী যুবক দিনাজপুর জেলার বিরল থানার আকড় গ্রামের সাইদুর রহমানের পুত্র মোঃ সুমন রানা( ৩৫) সহ গং ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে৷ এদিকে মামলার এজাহারে ও অপহৃত ফয়েজের মাতা খাদেজা বেগম বলেন তার ছেলেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাত অনুমান সাড়ে ৮টায় জাকিরের আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে নিয়ে যাবার কথা বলে তার ছেলে ফয়েজের বন্ধু জাকির তাকে মার্কুলি নিয়ে অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায় তার ছেলেকে অপহরণ, অথবা ঘুম হত্যা করেছে৷ এর পর থেকেই জাকির গা ঢাকা দেয়ার পূর্বে
জাকিরের দেয়া তথ্যমতে মারকুলিতে পৌঁছে ফয়েজের বড় ভাই কয়েছ আলী ইমন সহ তার আত্মীয় স্বজনেরা ফয়েজের সন্ধানে সেখানে গেলে এক জোড়া৷ জুতা ও মোটর সাইকেল উদ্ধার করেন বানিয়াচং থানা পুলিশের সহযোগিতায়৷
এদিকে জাকিরের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য ও লুকোচুরি খেলায় ফয়েজের পরিবার সন্দেহ করছেন টাকা অথবা অদৃশ্য কোনো কারণে ফয়েজকে জাকির ও তার লোকজনের সহযোগিতায় অপহরণ করে গুম হত্যা করতে পারে দুষ্কৃতিকারীরা৷ এদিকে নবীগঞ্জ থানায় ফয়েজের ভাই কয়েছ আলী ইমন একটি জিডি করেন তাৎক্ষণিক সময়ে৷ এঘটনায় অনেক জল্পনা কল্পনা ও অজানা আতংকের একপর্যায়ে গত ২৪ অক্টোবর নিখোঁজ ফয়েজ আহমেদ (২৩) এর মাতা ও জিয়াপুর গ্রামের মৃত আরজু মিয়ার স্ত্রী খাদেজা বেগম বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত- কগ- ৫, মামলা দায়ের করলে
নবীগঞ্জ থানার রেকর্ডকৃত মামলা নং ১৩,তাং ২৯/১০/২০২২ ইং৷ উক্ত মামলাটি নবীগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত করে আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং নিখোঁজ ফয়েজ আহমেদকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা এস,আই গৌতম সরকার৷
ফয়েজের ভাই,কয়েছ আলী ইমন ও তার মামা সাহিদ আলী বলেন, ফয়েজ নিখোঁজের পর থেকে তাদের পরিবার/পরিজন তার তার গর্ভধারিনী মা’সহ পরিবারের সবারই আহার নিদ্রা নেই,সবাই নিখোঁজ ফয়েজের জন্য অজানা আতংকে দিনাতিপাত করছেন৷ তাই নিখোঁজ ফয়েজের বন্ধু জাকির সহ অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করলে এবং সামছুল হককে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হবে এবং ফয়েজের সন্ধান অথবা তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে তারা আশাবাদী৷
এ ব্যাপারে প্রশানের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তার পরিবার৷