মহিপুরে শিক্ষা অধিদপ্তরের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়া চলছে বিদ্যালয়, করছে পাঠদান, প্রতারিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা ॥

প্রকাশিত: ১২:১১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২৩

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি  :  মহিপুরে শিক্ষা অধিদপ্তরের কোন প্রকার
অনুমতি ছাড়াই পাঠদান চলছে আলহাজ্ব হাতেম আলী আইডিয়াল স্কুলে। যেখানে
বিদ্যালয় নেই কোন ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন, তারপরও অবৈধভাবে চলছে বছরের
পর বছর শিক্ষা কার্যক্রম। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এখন পর্যন্ত চলছে
বহাল তবিয়াতে। বিদ্যালয়টিকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ উপজেলা শিক্ষা অফিস
একটি সতর্ক বার্তা পাঠালেও কোন কর্ণপাত করেনি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আবু
সালেহ।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতি না থাকায়
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বিদ্যালয়টি নিজ শিক্ষার্থীদের অন্য
স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের মাধ্যমে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে আসছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের অনুমোতি ছাড়াই অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বই নিয়ে
বিতরন করছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানের নামে নেই কোন জমি,
নিজেস্ব স্থাপনা শিক্ষা কার্যক্রমের নামে ভাড়া বাসায় চলছে কোচিং বানিজ্য।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আবু সালেহ কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রী কলেজ, মহিপুর
মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ ও বর্তমানে ড.শহিদুল ইসলাম কলেজে
প্রভাষক হিসিবে কর্মরত আছেন। একই সাথে ৩/৪টি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করায়
ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

শিক্ষা অফিস ও স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বৈধভাবে
চালু ও স্বীকৃতি প্রদানের সরকারী নিতিমালা ২এর(১,২,৩) চরমভাবে লঙ্গন
করেছে। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের চার মাসের মধ্যে বিদ্যালয় চালুর
প্রাথমিক অনুমতি প্রাপ্তির বিধান থাকা সত্বেও কোনরূপ অনুমতি নেয়নি
প্রতিষ্ঠানটি। সরকারী নিতিমালা অনুযায়ী একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য
প্রতিষ্ঠানের নুন্যতম ৩কি: মি: দুরত্বের বিধান থাকলেও এই প্রতিষ্ঠানটি
মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে মাত্র আধা কিলোমিটার দুরত্বে
অবস্থিত। যা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ১৯৯৭ইং নিতিমালার পরিশিষ্ট-১-এর ক্রমিক
১নং স্পষ্ট লঙ্গন। শিক্ষা অফিস প্রতিষ্ঠানটিকে বারবার সতর্কবার্তা
পাঠালেও কোন ধরনের কর্ণপাত করছেনা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আবু সালেহ।

স্থানীয় বাসীন্দা মো. জলিল প্যাদা বলেন, বিদ্যালয়টি চালু হবার পর বিভিন্ন
প্রলোভন দেখিয়ে আমার ছেলেকে তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করতে বলে। এরপর আমি
খোজ নিয়ে জানতে পারি ওই স্কুলটিতে  অনেক বিষয়ে শিক্ষক নাই। পড়ালেখার মান
মোটেও ভালো না। ২/৩ জন শিক্ষক দিয়ে চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। কর্তৃপক্ষ
প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের উদ্যোগ না নিলে আমার মতো অনেক অভিভাবকের সন্তান
অকালে ঝরে পড়বে।

মহিপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাবিবুল্লাহ খান রাব্বী বলেন,
স্বনামধন্য মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশেই আলহাজ্ব হাতেম
আলী আইডিয়াল স্কুল নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এটি সরকারি নিতিমালা
বহির্ভূত কার্যক্রম সংগঠিত হচ্ছে। তিনি মনে করেন, উর্ধ্বতন কর্মকতাদের
সঠির তদারকি না থাকায় এটা হয়েছে যা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম
বলেন, আমাদের স্কুল থেকে মাত্র আধা কি: মি: দুরে বিদ্যালয়ের নামে কোচিং
বানিজ্য চালাচ্ছে। আমার বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বড় ধরনের প্রভাব
ফেলছে।

কলঅপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা আফিসার মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, মহিপুরে
একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে এ তথ্যের
ভিত্তিতে আমি জেলা শিক্ষা অফিসসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছি।




error: Content is protected !!