ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে রাস্তার বেহাল দশা দেখার কেহ নাই, অবশেষে রাস্তার সংস্কার শুরু করল শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ১২:৫২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৬, ২০২০

মোঃ শহিদুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার সাধুহাটি থেকে তৈলটুপী সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে মেরামতের অভাবে ছোট বড় খানা খন্দে বেহাল অবস্থা হয়ে পড়েছে । যেন দেখার কেউ নেই। এরই মধ্যে সড়কটির প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশের বিটুমিন ও খোয়া উঠে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে শহরের দোয়েল চত্তর থেকে তৈলটুপী পর্যন্ত সড়কটি ১৬ কিলোমিটার। ২০০০ সালে সড়কটির কার্পেটিং কাজ করা হয়েছে। এর মধ্যে এলজিইডি’র অর্থায়নে ভবানিপুর বটতলা থেকে জোড়াদহ বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলামিটার রাস্তা পাঁচ বছর পূর্বে সংস্কার করা হয়েছিল। স্থানীয়রা জানান বিগত প্রায় ৩/৪ বছর ধরে রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষাকালে অল্প পানিতেই সড়কটি প্রায় সম্পূর্ন পানির নিচে তলিয়ে যায়। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে প্রায় হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। উপজেলার জোড়াদহ, ভায়না, তাহেরহুদা ও কুষ্টিয়া জেলার কিছু অংশের কয়েক হাজার মানুষের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার সাথে যোগাযোগের প্রধান সড়ক এটি। এছাড়াও এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ চিকিৎসা, ব্যবসাসহ নানা প্রয়োজনে পাশ্ববর্তী কুষ্টিয়া, চুয়াডাংগা ও ঝিনাইদহে শহরে যাতায়াত করে। চলাচল করে প্রতিদিন শত শত যানবাহন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তাটির প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার অংশের এতই বেহাল দশা গাড়ি থেকে যাত্রী নামিয়ে তাদের দ্বারা গাড়িতে ধাক্কা দিয়ে খানাখন্দ পার করা হচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেছে ভারী যান চলাচল। ছোট খাটো দু-একটি যান চলাচল করলেও তা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। মাঝে মধ্যেই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বাধ্য হয়ে মানুষ বিকল্প রাস্তা হিসাবে বেছে নিচ্ছে গ্রামীণ সড়কগুলো এতে যেমন তাদের সময় ও বাড়তি ব্যয় বেড়েছে, নষ্ট হচ্ছে গ্রামের রাস্তাগুলো। এরই মধ্যে রাস্তাটির জোড়াদহ-ভোড়াখালী অংশের বেশকিছু জায়গা সংস্কাররে জন্য এগিয়ে এসেছে কয়েক জন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্র, তারা সকলে ভেড়খালী যুব উন্নয়ন সংঘের সদস্য। এই ভাঙ্গা রাস্তা সংস্কারের জন্য বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ২০ থেকে ২৫ জন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ও যুবক সকাল থেকে বিকাল পযর্ন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। তারা জানিয়েছে, গ্রামের রাস্তার বেহাল অবস্থা দেখে আমরা নিজ উদ্যোগেই রাস্তা সংস্কারের কাজ করছি। রাস্তায় প্রায় ২০ টলি ইটের টুকরা ও ৫টলি বালি ব্যবহার করা হয়েছে। অনেকদুর থেকে এ কাজের মালামাল নিজেদের অর্থে নিয়ে এসে খানাখন্দ ভরাট করেছি। স্বেচ্ছাশ্রমে যুবকেরা মালামাল উঠানো, নামানোসহ সব কাজই করেছে। রাস্তায় চলাচলকারী কয়েকজন গাড়ী চালক জানিয়েছে, রাস্তার ভাঙ্গা অংশগুলো খুবই ঝুকিপূর্ণ ছিল। এ রাস্তা সংস্কারে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি। ঢাকা কলেজের ছাত্র মোঃ মঞ্জুর রশীদ বলেন, রাস্তায় যানবাহন যাতে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে পারে এ জন্য দেশের সচেতন নাগরিক হিসাবে আমরা এ সংস্কার কাজ করছি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইমুর রশীদ বলেন, শহর বা গ্রামের যে সব রাস্তা বৃষ্টির কারণে ভেঙ্গে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে সব স্থানে যুবকেরা নিজ দায়িত্বে কাজ করলে সাময়িক ভাবে হলেও দেশের মানুষের উপকৃত হবে। সংস্কার কাজের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইখতিয়ার উদ্দিন। তরুন সমাজের এই কাজকে স্বাগত জানিয়ে জোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা পলাশ বলেন, ওই সড়কটির প্রায় ৫ কিলোমিটার ভবানিপুর থেকে জোড়াদাহ ও বাকচুয়া কালীমন্দির পর্যন্ত রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। এতে জোড়াদহ, ভায়না ও তাহেরহুদাসহ তিন ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে। তিনি সড়কটির দ্রুত সংস্কারের দাবী জানান। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, আমরা ইতিমধ্যে সড়কটির ওই এলাকার ৫ কিলোমিটার অংশের সংস্কারের জন্য এলজিইডির ফ্লাড প্রকল্পে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যাবে।




error: Content is protected !!