জীবন বাজি রেখে দেশকে স্বাধীন করে উপহার স্বরূপ মুক্তিযোদ্ধা পিতা ইয়াবা তকমা লাগানো সন্তানের লাশ।
উখিয়া প্রতিনিধি
“ইয়াবা” সমাজ, রাষ্ট্র এবং ধর্মীয় দৃষ্টিতে সবচেয়ে ঘৃণিত নাম। শিশু থেকে শুরু করে যুব সমাজ এমনকি বৃদ্ধ মানুষও এর ভয়ানক চোবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। একটি সমাজ তথা পরিবারকে ধ্বংস করতে এই ইয়াবাই যথেষ্ট।
ইয়াবা বন্ধে প্রশাসন অতি কঠোর হয়েছে। ক্রস ফায়ার দিয়ে গুটিকয়েক ইয়াবা ব্যাবসায়ী, পরিবহনকারী ও জড়িতদের ক্রস ফায়ার দেওয়া হয়েছে। ইয়াবা প্রতিরোধ করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। সরকারের চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে কিছুটা সাফল্য লাভ করলেও ইয়াবা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমান সরকার প্রশাসনের প্রতি শতভাগ আস্থাশীল হয়ে দেশকে মাদকমুক্ত রাখতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়েছে।
দেশ ও সমাজকে ইয়াবা ও সন্ত্রাস মুক্ত রাখতে প্রশাসনের অনেক নীতিবান কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্ছে। তারা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। অনেকে দেশকে রক্ষা করতে নিজের জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছে।
কিন্তু তারপরও এই ইয়াবাকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না । কারণ ইয়াবা প্রতিকারের জন্য তেমন কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না৷ ইয়াবা সীমান্ত পথ দিয়ে আসা বন্ধ করা, গড ফাদারদের ধরা সহ প্রশাসন যে ইয়াবাগুলো জব্দ করে তার সঠিক তথ্য না দিয়ে গুটিকয়েক অসাধু কর্মকর্তারা সেগুলো পুনরায় বাজারজাত করা বন্ধ করতে না পারলে কোনদিনও ইয়াবা বন্ধ করা সম্ভব নয়। অসাধু, দূর্নীতিবাজ এসব কর্মকর্তাদের কারণে আজ পুরো প্রশাসনের গায়ে কলঙ্কের কালিমা লেপন হচ্ছে।
বর্তমান সময়ে ইয়াবা বন্ধ করতে প্রশাসনের নানা কর্মকাণ্ড নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এই ব্যাপারে কিছু বলতে ভয় হয় কারণ যেখানে প্রশাসনের গুটিকয়েক কতিপয় কিছু অসাধু কর্তারা ইয়াবা বন্ধ করার নামে রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে। তাদের কাজ-কর্ম, আচার-আচরণ বর্তমান সময়ে রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিদের মত। তাদের সাথে তাল মিলিয়ে, দালালি করে কতিপয় রাজনীতিবীদ, সুশীল সমাজ ও গুটিকয়েক হলুদ সাংবাদিকরা বর্তমানে প্রশাসনকে রাজনীতি শুরু করতে সুযোগ করে দিচ্ছে। কোন অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেই ইয়াবার তকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিছু কিছু প্রশাসনের লোক মনে করছে দেশটা যেন তাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি। যা ইচ্ছা তাই করছে। তাদের এত বড় ক্ষমতা কে দিয়েছে? কোথায় পেয়েছে?
আজকের এই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর হয়তো প্রশাসনের এসব দূর্নীতিবাজ ও অসাধু কর্মকর্তাদের কাছে আমি চক্ষুশূল হয়ে যাব। আমার নামের পাশেও হয়তো একটা কলঙ্কিত তকমা লাগিয়ে দিবে। তারপরও দেশ ও দেশের মানুষের জন্য একটা দায়বদ্ধতা থেকে আজকে আমার লেখা।
প্রশাসনের কাজ হচ্ছে দেশকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত রাখা, রাজনীতি করা নয়। তাদের আচার ও কাজকর্ম দেখলে মনে হয় তারা কেউ এমপি, কেউ মেয়র আর কেউ চেয়ারম্যান। আর আমাদের সমাজে রাজাকারের মত কতিপয় কিছু দালাল আছে যারা তাদের এই কর্মকাণ্ডে হাততালি দিয়ে নিজেদের সুবিদা আদায় করে নিচ্ছে।
তাদের এই স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে আজকে আমরা মেজর সিনহার মত একজন মেজর হারিয়েছি। আমি লজ্বিত, আমি দুঃখিত যার বাবা নিজের জীবন বাজি রেখে দেশকে স্বাধীন করে লিয়াকতের মত অসাধু, উগ্রপন্থী, দেশটাকে যারা নিজের বাপ-দাদার সম্পত্তি মনে করে এরকম লাখো এস আই হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে আজ তাদেরই হাতে নিজের সন্তানকে জীবন দিতে হল।
দেশের জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে লড়াই সংগ্রাম করে প্রয়াত মেজর সিনহার বাবা দেশ স্বাধীন করেছিল যার উপহার হিসেবে পেল ইয়াবার উপাধি পাওয়া নিজের সন্তানের লাশ।
বাহ! বাহ! চমৎকার। প্রয়াত মেজর সিনহার কাছ থেকে ৫০ টি ইয়াবা পেয়েছে, মদ পেয়েছে। দারুন প্লান করেছে। যদি প্রয়াত মেজর সিনহা ইয়াবা আসক্ত হত তাহলে তিনি কীভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা কর্মী ও সেনাবাহিনীর মেজর হয়েছেন? ঘুষ দিয়ে, দূর্নীতি করে আজ এস আই লিয়াকত হয়ে যা ইচ্ছে তাই করছে অতচ একবারও কি ভেবে দেখে নাই সিনহার বাবারা নিজের জীবনকে কোরবানি দিতে প্রস্তুত ছিল বলেই আজ কুলংগার লিয়াকতরা এস আই হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার বাবার ডাকে মেজর সিনহার বাবারা জীবনের তোয়াক্কা না করে দেশের জন্য লড়েছিল তেমনি আপনার ও দেশের মানুষের জন্য সিনহারা জীবন বাজি রাখতে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ডালিম -রশিদের মত লিয়াকতরা আপনার ও দেশের জন্য জীবন বাজি রাখা সাহসী বীর সেনানীদের হত্যা করে দিচ্ছে।
ডালিম-রশীদ-ফারুকের মত হাজারো লিয়াকত ইয়াবার অপবাদ দিয়ে নিরীহ মানুষদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করছে, যারা কর্তা বাবুর দাবী অনুযায়ী টাকা দিতে পারে না তাদের ক্রস ফায়ার দেওয়া হয়। হাজারো মানুষ এদের অত্যাচার – নির্যাতনে অতিষ্ঠ। তারাই এখন দেশের হর্তাকর্তা হয়ে গিয়েছে। তাদের বাইরে গিয়ে কারো কোন কিছু বলার উপায় নাই।
আমরাও চাই দেশ মাদকমুক্ত হওক, সন্ত্রাসমুক্ত হওক। কিন্তু কোন নিরপরাধ মেজর সিনহার মত নিরঅপরাধ কাউকে খুন করে নয়। দেশ মাদকমুক্ত -সন্ত্রাসমুক্ত হবে প্রশাসনের সততা, আদর্শ আর কর্তব্যপরায়নতার মাধ্যমে। প্রশাসন যদি রাজনীতি শুরু করে তাহলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা কখনো সম্ভব নয়।
চলমান মাদক বিরোধী অভিযানকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে সু পরিকল্পিতভাবে লিয়াকতের মত ডালিম -রশীদরা রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে ও মেজর সিনহাকে হত্যা করা হয়েছে।
প্রয়াত মেজর সিনহা হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত পূর্বক সুষ্ঠু বিচার চাই।
মাদক বিরোধী অভিযানে যাদের ক্রস ফায়ার দেওয়া হয়েছে এবং যাদের নামে মামলা হয়েছে তাদের সবার জন্য সঠিক তদন্ত করলেও অনেক নিরপরাধ মানুষের তথ্য চলে আসবে।