কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : কলাপাড়ায় ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েও নিয়োগ দেয়নি। এরপর টাকা ফেরত দেয়াসহ নিয়োগ সংক্রান্ত গুরুতর অনিয়মের অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে নিয়োগ প্রার্থী ৫ সদস্য। কলাপাড়া প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার তৈহিদুর রহমান লিনায়তনে বুধবার দুপুরের দিকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মো হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে পূর্ব মধুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আয়া পদে নিয়োগ প্রার্থী মোসা সোনিয়া বেগম। এসময় লিখিত বক্তব্যে সোনিয়া বলেন, পূর্ব মধুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী এই তিনটি পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এ বিঞ্জপ্তির পর তারা আবেদন করে। এ নিয়োগ পরীক্ষা হবার কথা ছিলো গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো আলাম হোসেন প্রতি পদের জন্য তিন থেকে তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে। প্রার্থীরা এ টাকা না দেয়ায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে। এরফলে কিছু পরীক্ষার্থী নিয়োগ পরিচালনা কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলা নম্বর ১১৭/২৩। পরে পুন:রায় গত ২১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারন করে। পরীক্ষার এক দিন আগে প্রধান শিক্ষক পরীক্ষার্থীদের জন প্রতি পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে। ওই সময় সোনিয়া বেগম চার লক্ষ টাকা দিলেও তাকে নিয়োগ দেয়নি। নিয়োগ দেয়া হয়েছে সভাপতি মো বশির আহম্মেদ ও প্রধান শিক্ষক মো আলাম হোসেনের মনোনীত প্রার্থীদের। তবে পরে তাকে ঘুষের তিন লক্ষ টাকা ফেরত দিলেও বাকি এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা আর ফেরত দেয়নি। এদিকে পূর্ব মধুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে নালিশি মামলা আমলে নিয়ে ওসি, কলাপাড়াকে এজাহার গন্যে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গত রবিবার কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো গোলাম মোস্তফা’র নালিশি মামলা দায়েরের পর কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশীষ রায়ের আদালত এ আদেশ প্রদান করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো কাইয়ুম এ আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করে। মামলায় পূর্ব মধুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো বশির আহম্মেদ (৫৭), প্রধান শিক্ষক মো আলাম হোসেন (৫৫), সহকারী প্রধান শিক্ষক মো আক্তার হোসেন (৪৫), মো শাহিন হাওলাদার (৪২), মো হাসান (৪০), মো সাইদুর রহমান (৩৫)সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা যায়, পূর্ব মধূখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিছন্নতা কর্মীর পদ খালী হওয়ায় নিয়োগের জন্য আসামীরা তাদের মনগড়া বিজ্ঞপ্তি দিয়া বাদীর অগোচরে বিগত ২১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করেন। পরে ২১ ডিসেম্বর দুপুরে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে প্রবেশ করে উল্লেখিত নিয়োগ পরীক্ষায় জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে তৈরীকৃত ফলাফল ও রেজুলেশনে বাদীকে স্বাক্ষর করতে বললে বাদী স্বাক্ষর করিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে আসামীরা অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করে জাল নিয়োগপত্র সৃজন করে পূর্ব মধূখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী, আয়া, পরিছন্নতাকর্মী নিয়োগ প্রদান করে। এবিষয় কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো আলী আহম্মেদ বলেন, মামলার বিষয়ে জেনেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ও আইন ানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।