আজমিরীগঞ্জে দরিদ্রের প্রণোদনা বিতরণে কমিশনারের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ
অপরাধ ডেস্কঃ
আজমিরীগঞ্জে পৌর এলাকায় প্রাণঘাতী করোনায় ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র পরিবারে ২ হাজার ৫’শ টাকা প্যাকেজ প্রণোদনা বিতরণে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে ৯ নং ওয়ার্ড কমিশনার প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে ৷
জানা যায়,
প্রাণঘাতী করোনার ভাইরাসের কারণে সারাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারকে এককালীন ২৫০০ টাকা করে দেয়ার জন্য ১ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা ছাড় দিয়েছিল অর্থমন্ত্রণালয়। এতে নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য অর্থমন্ত্রণালয় থেকে প্রদত্ত তালিকা মোতাবেক জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর যাচাইপূর্বক হিসাব খোলা এবং মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্টানগুলোকে নগদ সহায়তা যাতে যথাযথভাবে সুবিধাভোগীর হিসাবে পৌঁছায় সে ব্যবস্থা নিতে ব্যাংক গুলোকে বলা হয়। এ ছাড়া বলা হয়, নির্মাণ, গণপরিবহণ শ্রমিক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, রেলওয়ে কুলি, মুজুর, ঘাট শ্রমিক, নরসুন্দর, রিক্সা- ভ্যান, গাড়ি চালক, সহ নিম্নআয়ের মানুষ যারা দৈনন্দিন কাজ করে খায়, তাদের জন্য নগদ সহায়তা দেয়ার এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু আজমিরীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৯নং ওয়ার্ডে দেখা যায়, ওইসব নীতি-নিয়ম উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ মনগড়া ভাবে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে এ প্যাকেজ প্রণোদনা বিতরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৬ সদস্য বিশিষ্ট অর্থাৎ কাউন্সিলর, সরকারি প্রাঃবিঃ সহ, শিক্ষক, মৎস্য বা সমবায় কর্মকর্তা, আনসার সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের একজন মুরুব্বী সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে ওই তালিকা তৈরির কথা থাকলেও ওয়ার্ড কমিশনার প্রদীপ সম্পূর্ণ মনগড়া ভাবে তালিকা তৈরি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাসিন্দা নয় এমন লোকেদের তালিকাভুক্ত করা হয়। চলতি সনের ৬ মে কমিশনার প্রদীপ রায় কর্তৃক সরবরাহকৃত তালিকায় দেখা যায়, সুবিধাভোগীর তালিকায় ৪১ জন পুরুষ ও ১৩ জন মহিলা সহ মোট ৫৪ জন। এরমধ্যে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ১৭, কাঠমিস্ত্রি ৩, ব্যবসায়ী ৩, গৃহিণী ১৩, দিনমজুর ৫, শ্রমজীবী ৪, কৃষক ৮ ও পুরোহিত ১ জন। জনপ্রতি সরকারের ২৫০০ টাকা করে মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ বিতরণ করা হয়েছে। তালিকানুসারে, ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দীপক রায়ের পুত্র ধীমান রায়, (মুদীদোকানদার ও কাউন্সিলর প্রদীপ রায়ের ভাতিজা), দীনেশ রায়ের পুত্র ধীরেন্দ্র রায় ( সুনামগঞ্জে ফ্লাইং ব্যবসায়ী ও কাউন্সিলরের ভাই) নারায়ণ রায়ের স্ত্রী রত্না রায় ( কাউন্সিলরের কাকী) পতাকী রায়ের পুত্র সুশংকর রায় ( বাজারের ব্যবসায়ী ও কাউন্সিলরের বউয়ের বড় ভাই ) বিনয় রায়ের পুত্র বিধান রায় ( মাষ্টার টেইলার ও সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তার পিতা) বিনয় রায়ের পুত্র বিপ্লব রায় ( মুদীদোকান, হোল সেলস্) তোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী মোছাঃ সহিদা বেগম ( সরকারি কর্মচারীর স্ত্রী- টি এন্ড টি) হরেন্দ্র পালের পুত্র চন্দন পাল ( ব্যবসায়ী ও সরকারি প্রাঃবিঃশিক্ষিকার স্বামী) বিশ্ব রায়ের স্ত্রী সতী রানী রায় ( পুলিশ কনস্টেবলের মাতা) প্রসেন সূত্রধরের স্ত্রী শান্তি রানী সূত্রধর ( পৌরসভা কর্মচারীর স্ত্রী) দীনেশ দেবের পুত্র দিলীপ দেব ( ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নয় সে ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা) তারা শীলের স্ত্রী মায়ারানী শীল ( ৯ নং নয় সে ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা) কিরণ মোদকের পুত্র তপন মোদক ( ৯ নং ওয়ার্ড নয় সে ১ নং সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও মাষ্টার টেইলার ) জিতু নন্দীর পুত্র সুমন নন্দী ( ডিড রাইটার জলসুখা সাব-রেজিষ্টার অফিস) দুলাল দাসের স্ত্রী শিপ্রা দাস ( প্রবাসীর স্ত্রী) পিযুষ রায়ের পুত্র পিনাক রায় ( ব্যবসায়ী ও কোম্পানিতে চাকুরীরত) পিযুষ রায়ের পুত্র কৌশিক রায় ( ডিলারসীপ ও কোম্পানিতে চাকুরিরত) তোতা মিয়ার পুত্র লতু মিয়া ( বীজ ও কীটনাশক ডিলারসীপ) প্রাণকান্ত রায়ের পুত্র প্রবীর রায় ( ডিস্ট্রিবিউটর, কমিশন এজেন্ট ও ৯নং ওয়ার্ড আ,লীগের সভাপতি) স্বরবিন্দু রায়ের পুত্র সুজিত রায় ( ডিলারসীপ ও কমিশন এজেন্ট) মনু রায়ের পুত্র মিঠু রায় ( কোম্পানিতে চাকুরিরত) জহরলাল কুন্ডের পুত্র জগন্নাথ কুন্ড ( ফার্মেসি ব্যবসায়ী) এ ছাড়া আম্বরালীর পুত্র মনিরুল ইসলাম ও শিমূল রায়ের পুত্র বাপন রায় ব্যবসায়ী, তাদের পেশা’র স্হলে কৃষক লিখা হয়েছে। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত অনেকের পেশা-ই বিতর্কিত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা যায়। এভাবেই স্বজনপ্রীতি মাধ্যমে প্রণোদনা প্যাকেজের আড়াই হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলে ৯ নং ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কমিশনার প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে কমিশনার প্রদীপ রায় জানান– আমি এবং আমার ভাই এবং ভাতিজারা আলাদা আলাদা বসবাস করি, করেনার জন্য তাদের ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ থাকায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে তাই আমি কয়েকটা নাম দিয়েছি ৷
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মতিউর রহমান খাঁন এবিষয়ে আমি কোনো অভিযেগ পাইনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে ৷