এবার কিছুটা স্বস্তিতে কলাপাড়াবাসী সরকারনির্ধারিত ভাড়া আদায় বালিয়াতলী খেয়ায় ॥
রাসেল কবির মুরাদ,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি; কলাপাড়া থেকে সাগর কন্যা কুয়াকাটা যাওয়ার বিকল্প সড়ক হিসাবে পরিচিত বালিয়াতলী খেয়াঘাটে এবার
অনেকদিন পর সরকার নির্ধারিত চার্টের ভাড়া অনুযায়ী চলছে। কিছুদিন ধরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও অভিযোগ সংবাদ মাধ্যম ও সোস্যাল
মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এখন চার্টের নির্ধারিত ভাড়ায় পারাপার হচ্ছে যাত্রীরা। কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে খেয়া পারাপারের সাধারন যাত্রীদের মাঝে। বর্তমান দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি ও সময়ের সাথে
তালমিলিয়ে চলতে কয়েক বছর আগে নির্ধারন করা চার্টের ভাড়া বৃদ্ধিকরনসহ ভাড়ার তালিকা পরিবর্তনের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন খেয়া ইজারাদার।
ইজারাদার জানান, খেয়া পারাপারের বর্তমান মূল্য তালিকা পরিবর্তন না করলে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছেন ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, খেয়া
পারাপারের বর্তমান মূল্য তালিকাটি ২০১৫-১৬ সালে করা হয়েছে। তখনকার সময়ে খেয়া পরিচালনা খরচ আর এখনকার খরচের মধ্যে অনেক ব্যবধান রয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বালিয়াতলী খেয়া বাবদ ইজারাদারকে ভ্যাট ও আইডিসহ সরকারী কোষাগারে
প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা জমা দিতে হয়েছে। খেয়া পারাপারের জন্য ২ টি বোর্ড ও লোকবলসহ বছরে প্রায় ১ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা খরচ হয়। এসব মূলধন হিসাব করার
পরে ব্যবসায়ের হিসাব কষতে হয় ইজারাদারকে। তদুপরি, নভেল করোনা প্রাদুর্ভাবের কারনে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতির ঘানি টানতে হয়েছে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও বাজার চাহিদার সাথে তালমিলিয়ে চলতে ভাড়ার
তালিকাটি পরিবর্তন করা প্রয়োজন বলে তারা মনে করছেন।
স্থানীয় ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, বালিয়াতলী, লালুয়া, মিঠাগঞ্জ,ধুলাসার ও ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ এ খেয়া দিয়ে প্রতিদিন
উপজেলা শহরে যাতায়াত করে।এ পথ দিয়ে সাধারন যাত্রীদের যাতায়তের জন্য সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা রয়েছে। সে মূল্য তালিকার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি গনমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়ায় উঠে আসলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। প্রশাসনের তদারকি ও তোপের মুখে সরকার নির্ধারিত ভাড়াতেই চলছে বালিয়াতলীর খেয়া। ন্যায্য ভাড়ায় খেয়া পারাপার করায় সাধারন যাত্রীরা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বালিয়াতলী ইউনিয়নের এক যাত্রী তুহিন জানান, প্রায় প্রতিদিনই এ খেয়া দিয়ে কলাপাড়া শহরে যাতায়ত করি। আগে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়
করত তবে এখন ন্যায্য ভাড়া নেয়ায় আমরা অত্যানÍ খুশি। ধুলাসার থেকে আশা যাত্রী আসমা ও আনোয়ারা বেগম বলেন, এখনতো ভাড়া ঠিকমত নিচ্ছে তবে এটা যেনো সবসময় বহাল থাকে আমরা এটা আশা করছি।
ইজারাদারের পক্ষে বালিয়াতলী খেয়া পরিচালনাকারী গাজী মো: মুছা বলেন, আমরা এখন সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ভাড়া আদায় করছি। কিন্তু বর্তমান
বাজার মূল্যের সাথে মিল রেখে আমরা চলতে পারছি না। কর্তৃপক্ষ ভাড়ার তালিকাটি সংষ্কার করে আমাদের চলার মত ব্যবস্থা করে দিবেন বলে আমরা আশা করছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন,সরকার নির্ধারিত বর্তমান চার্টের ভাড়ার বিষয়টি জেনেই তারা খেয়া ইজারা
নিয়েছে, তাই নির্ধারিত এ ভাড়াতেই তাদের লোক পারাপার করতে হবে। খেয়া পারাপারের ভাড়া বৃদ্ধি করার কোন পরিকল্পনা আপাতত আমাদের নেই। তবে,
উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে তিনি জানান।