কলাপাড়ায় ধানখালী ইউনিয়নে আবাসনের দাবীতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মানববন্ধন পালন ॥
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : কলাপাড়ায় আবাসনের দাবীতে মানববন্ধন
করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ধানখালী
ইউনিয়নের উত্তর নিশান বাড়িয়া গ্রামে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পায়রা
বন্দর কর্তৃপক্ষ কয়লা সংরক্ষনের কোল্ড টার্মিনাল নির্মানের জন্য ভূমি
অধিগ্রহন করেন। এতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে পার্শ্ববর্তী লতাচাপলি
ইউনিয়নে আবাসন দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা
তাদের নিজ ইউনিয়ন ধানখালীতে আবাসন ব্যবস্থার দাবী করেন।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ভুক্তভোগীরা বলেন, সরকারের উন্নয়নের সাথে আমরা একমত
রয়েছি। আমাদের বাপ-দাদার পৈত্রিক ভিটে বাড়ি ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু আমরা
যাতে সবাই একসাথে এ ইউনিয়নেই থাকতে পারি সে ব্যবস্থা করার জোড় দাবী
জানাচ্ছি। ধানখালী ইউনিয়নে একটি আবাসন রয়েছে আমাদের সেখানে ঘর বরাদ্ধ
দেওয়া হোক এ অনুরোধ করেন তারা।
ক্ষতিগ্রস্থ বাসিন্দা অতিশয় বৃদ্ধা বেগম আনোয়ারা বলেন, জমি-জমা,বাড়ি-ঘর
সব নদীতে ভেঙ্গে গেছে এখন ব্যারাকের দেওয়া এই জায়গাটুকুও পায়রা বন্দর
নিয়ে গেছে। সারাটাজীবন এই পরিবারগুলোর সাথে কাটিয়েছি বাকি সময়টা তাদের
সাথেই কাটাতে চাই। আমাদেরকে এই ইউনিয়নে আবাসন দেওয়ার অনুরোধ করি সরকারের
কাছে।
ভুক্তভোগী ইসলাম খা, শিউলি, শিল্পি, শাহ আলম আকন ও হনুফা বেগমসহ আরো
অনেকে বলেন, আমাদের শেষ সহায়-স¤¦ল সবই সরকার নিয়ে গেছে। এখন নিজ ইউনিয়নের
পরিচয়টুকু থেকেও বঞ্চিত করার কথা শুনছি। সরকারের কাছে একটাই দাবী যেখানে
বাব-দাদার কবর রয়েছে অন্তত সেই এলাকায় থাকার ব্যবস্থাটা করে দিক।
সাবেক ইউপি সদস্য নাসির তালুকদার ও ভুক্তভোগী হাবলু প্যাদা বলেন, ২০০৭
সালের সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার হিসাবে জাপানী ব্যারাক হাউজ আমাদের
এখানে বসবাসের ব্যবস্থা করে দেন। সরকারের উন্নয়নের জন্য আমরা তা ছেড়ে
দিচ্ছি। কিন্তু কোন একটি কুচক্রি মহল আমাদের নিজ ইউনিয়নের অধিকারটুকু
ছিনিয়ে নিতে চাচ্ছে। তারা মহিপুর থানাধীন লতা চাপলী ইউনিয়নের ধূলাচর
এলাকায় নির্মানাধিন আবাসন প্রকল্পে ঘর বরাদ্ধ দেয়ার জন্য জোর পায়তারা
চালাচ্ছে। আমরা ধানখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা এখানেই থাকতে চাই।
বৃহত্তর ধানখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আ: লতিফ গাজীর পুত্র
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী গাজী রাইসুল ইসলাম
রাজীব বলেন, অসহায় এই পরিবারগুলো জন্ম থেকে এখানে রয়েছে। তারা সুখে-দু:খে
একসাথে বসবাস করে অসছে। তাদের এ ইউনিয়নে আবাসন ব্যবস্থা করে দিলে ভালো
হয়।
ধানখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রিয়াজ তালুকদার বলেন, ধানখালীতে
পায়রা বন্দরের একটি আবাসন রয়েছে। তাদের সেখানে ঘর বরাদ্ধ দিয়ে এ ইউনিয়নেই
রাখা যায়।
পটুয়াখালী জেলা প্রসাশক মো. কামাল হোসেন বলেন, মানবিক এ বিষয়টি আমরা
আলোচনা সাপেক্ষে খতিয়ে দেখব, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো যাতে সুন্দরভাবে
থাকতে পারে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।