কলাপাড়ায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির  ব্যাপক অভিযোগ ॥

প্রকাশিত: ৬:০৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২২

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি ঃ কলাপাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরত
আছেন মো: নজরুল ইসলাম ১৯৯৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে এমএলএসএস
হিসেবে চাকুরীতে যোগ দেন, ২০০৫ সালে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার
মুদ্রাক্ষরিক পদে পদোন্নতি পান, অথচ কম্পিউটার বিষয়ক কোন জ্ঞান নেই তার,
সেই থেকে ১৮ বছর এরমধ্যে কয়েকবার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তার বদলীর
গুঞ্জন শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। এভাবে সরকারী চাকুরী বিধি
বহির্ভূত ভাবে একই কর্মস্থলে দেড় যুগ কর্মরত থেকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের
গুঞ্জন উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরনসহ
ঘুষ-বানিজ্যের অভিযোগে, তার বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত
অভিযোগ দিয়েও অদ্যবধি প্রতিকার মেলেনি বলে জানান একাধিক শিক্ষক।

তথ্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী নজরুল
ইসলাম শিক্ষকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা আদায় করছেন। টাকা
না দিলে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস তার টেবিলে ফাইল আটকে থাকে।
শিক্ষকদের পেনশন ফাইল, মাতৃত্বকালীন ছুটি, মেডিকেল ছুটি, শিক্ষক লোন,
বকেয়া বিল, ক্ষুদ্র মেরামত, স্লিপ, ওয়াশ ব্লক, শ্রান্তি বিনোদন, গ্রেড
যুক্ত করন সহ রুটিন মেইনটেন্যান্সের ফাইল অফিস থেকে ছাড় করতে তাকে এক
থেকে দেড় হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে, এটা এখন ওপেন সিক্রেট। ফাইল জমা
দেয়ার সময় শিক্ষকরা নির্ধারিত পরিমান টাকা শিক্ষা অফিসের করনিক নজরুল
ইসলামের হাতে গুঁজে দেন। যারা টাকা দেয় না অথবা নির্ধারিত পরিমানের কম
টাকা দেয় তাদের ফাইল ঘুরতে থাকে মাসের পর মাস।

১৩০ নং উত্তর টিয়াখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো:
রাকিবুল ইসলাম জানান, তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে নজরুলের
অসৌজন্যমূলক আচরন ও ঘুষ নেয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যার অনুলিপি
প্রাথমিকের ডিজি, ডিডি ও ডিপিইওকে দেয়া হয়েছে। যে আবেদনে একাধিক
ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক একাত্মতা ঘোষনা করে স্বাক্ষর
করেছেন। কিন্তু অদ্যবধি এর কোন প্রতিকার হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর
এক প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষা অফিসের করনিক নজরুল ইসলাম দীর্ঘ আঠারো বছর
সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কলাপাড়ায় চাকুরী করছেন। দীর্ঘদিন একই অফিসে
চাকুরি করার কারনে সকল শিক্ষক, কর্মচারীকে জিম্মি করে তিনি অবৈধভাবে অর্থ
উপার্জন করছেন। যা যথাযথ কর্তৃপক্ষ তার বিত্ত, সম্পদ অনুসন্ধান করলে
বেরিয়ে আসবে।

কলাপাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী নজরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার
করে বলেন, তিনি কোন দুর্নীতি, অনিয়মের সাথে জড়িত নন, এসব মিথ্যাও
বানোয়াট।

কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অচ্যুতানন্দ দাস বলেন, অফিস
সহকারী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আমি কোন অভিযোগ পাইনি। এছাড়া সরকারী
চাকুরী বিধি অনুযায়ী ৩য় শ্রেনীর কর্মচারী এক স্থানে তিন বছরের বেশী থাকতে
পারে না, এরকম কোন বিধান নাই।

পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোল্লা বখতিয়ার রহমান বলেন,
কর্মকর্তারা সাধারনত তিন বছরের বেশী এক জায়গায় থাকতে পারে না। কিন্তু
কর্মচারীদের বিষয়ে এরকম কোন বাধ্যবাধকতা নেই। এছাড়া অফিস সহকারী নজরুলের
বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।




error: Content is protected !!