কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় শিক্ষকের বাড়িতে ছাত্রীর অবস্থান

প্রকাশিত: ৫:১৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিয়ের প্রলোভনে শিক্ষকের ধর্ষণের শিকার এক কলেজ ছাত্রী বিয়ের দাবিতে বিষের বোতল হাতে শিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি গত ছয় দিন ধরে ওই শিক্ষকের ঘরে ঢুকে অবস্থান করছেন।

বিয়ের দাবি বাস্তবায়ন না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে উপজেলার চরতেরটেকিয়া গ্রামের ওই শিক্ষকের ঘরে অবস্থান নেওয়া শুরু করেন তিনি।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাকুন্দিয়া থানা পুলিশ ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেও তাঁকে বুঝাতে পারেননি।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম এমএ কাইয়ূম। তিনি উপজেলার চরতেরটেকিয়া গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে। চরতেরটেকিয়া মৌজা বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তিনি।

ছাত্রীর পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে ছাত্রীটি ওই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। বর্তমানে তিনি একটি কলেজে ডিগ্রি ২য় বর্ষে মানবিক শাখায় অধ্যয়নরত।

৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় বিদ্যালয়টির সহাকরী শিক্ষক এমএ কাইয়ূমের কাছে প্রাইভেট পড়তেন তিনি। তখন থেকেই ছাত্রীটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন ওই শিক্ষক। পরে কাইয়ূম বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন।

বিষয়টি টের পেয়ে তিন বছর আগে ছাত্রীটিকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেন তাঁর পরিবার। কিন্তু এতেও ছাত্রীটির পিছু ছাড়েননি কাইয়ূম। ছাত্রীর মুঠোফোনে তাঁর যোগাযোগ অব্যাহত থাকে।

পুনরায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর ছাত্রীটিকে ফুঁসলিয়ে ও তোষামোদ করে ওই শিক্ষক তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে ফের রাত্রি যাপন করেন তিনি।

সকালে ছাত্রীটি বিয়ের জন্য শিক্ষককে চাপ দিলে কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান কাইয়ূম। কোন উপায়ান্তর না দেখে ছাত্রীটি ওই দিন থেকেই বিয়ের দাবিতে বিষের বোতল হাতে শিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

খবর পেয়ে ছাত্রীটির বাবা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে কাইয়ূমের বাড়িতে উপস্থিত হন। কাইয়ূমের বাবা নুরুজ্জামানকে চাপ দিলেও তিনি ওই ছাত্রীকে বিয়ে করাতে রাজি হচ্ছেন না।

ওই ছাত্রীর বাবা জানান, আমার মেয়ে ওই বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় কাইয়ূমের কাছে প্রাইভেট পড়তো। এই সুযোগে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন কাইয়ূম। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন। মেয়েকে আমরা অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেই।

কিন্তু সেখানেও মেয়েটিকে সুখে থাকতে দেয়নি কাইয়ূম। ফুসলিয়ে একটি সংসার ভেঙ্গে মেয়েটিকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে মেয়েকে বাড়িতে রেখেই সে পালিয়ে যায়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কাইয়ূমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।




error: Content is protected !!