কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় সম্পদের লোভে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে মাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত ছেলে মুন্না বাবু ও তার দুই বন্ধুকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।আটকরা হলেন- মৃত ফজল বিশ্বাসের ছেলে মুন্না বাবু (৩২), ইয়াসিন মিস্ত্রির ছেলে হোসেন (২৭) ও মৃত ইনসার বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল কাদের (৫২)। তাদের সবার বাড়ি মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটদহ গ্রামে। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) তাদেরকে আটক করা হয়। আটকদের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় মামলা করা হয়েছে। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম অভিযানে চালিয়ে প্রথমে আব্দুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মমতাজ বেগমের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত বলেন, বন্ধুদের সহযোগিতায় মমতাজ বেগমকে (৫৪) শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ছেলে মুন্না বাবু। হত্যার পর তাকে বাড়ি থেকে ১০ গজ আগে মৃত নূর উদ্দিনের ছেলে রাজার পুকুরের কাদামাটিতে চাপা দেয়।তিনি আরও বলেন, মমতাজ বেগমের ছেলে মুন্না বাবু বন্ধুদের দিয়ে তার বড় দুলাভাই (মমতাজের বড় জামাই) সেকেন্দার আলীর মোবাইল ফোনে কল করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিলে মমতাজের খোঁজ দেওয়া হবে বলে জানায়। এরপর মমতাজ বেগমের বড় জামাই সেকেন্দার আলী জেলা গোয়েন্দা পুলিশে অভিযোগ করেন। ওই মোবাইল নম্বরটিকে ক্লু ধরে আব্দুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সুপার বলেন, মুন্না বাবু মাদকাসক্ত ও জুয়াড়ি। সম্পদের লোভে মাকে সে হত্যা করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুন্না বাবু মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রায় এক মাস আগে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এরপর অজ্ঞাত পরিচয় কোনো পুরুষের সঙ্গে তার মা চলে গেছেন বলেও গুজব ছড়ায় ছেলে মুন্না বাবু। এ ঘটনায় সে গত ২৫ জানুয়ারি মিরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। সেখানে বলা হয়েছিল ২১ জানুয়ারি সকাল থেকে তার মা নিখোঁজ।তিনি আরও বলেন, এর প্রেক্ষিতে সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মুন্নার বন্ধুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে খুনের দায় স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে মমতাজের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেন খাঁন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুষ্টিয়া সদর সার্কেল) মো. আতিকুল ইসলাম, মিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।