কুয়াকাটায় দীর্ঘ ৮ কিলোমিটার সড়ক ভেঙ্গেচুড়ে বেহাল দশায় পরিনত, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী ॥

প্রকাশিত: ৬:১১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২

রাসেল কবির মুরাদ , কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি   :
সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের লীলাভূমি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ স্পট মিস্ত্রীপাড়ায় কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে ৩৬ফুট
উচু রাখাইন বৌদ্ধবিহার। এখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন দোকান-পাটসহ বিশাল
রাখাইন মার্কেট। কুয়াকাটা-জিরোপয়েন্ট থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পূর্ব
উত্তরে অবস্থিত এই মন্দিরটি। সেখানে প্রতিদিন যাতায়াত করছে হাজারো
পর্যটক। গত ২ বছর ধরে প্রধান এ সড়কটি চলাচলের জন্য একদম অনুপযোগী হয়ে
পড়ছে। পদ্মাসেতু চালুহওয়ার পরপরই ভ্রমন পিপাসুদের চাপ বেড়ে যাওয়ায়
মাইক্রোবাস কিম্বা প্রাইভেটকার ভাঙ্গাচুড়া এ রাস্তায় যাচ্ছেনা গেলেও তা
বিরুপ মন্তব্য করে চলে আসে। প্রতিদিন   ওই সড়ক দিয়ে অনেক কস্ট করে
অটোগাড়ী ও অটো ভ্যানে করে দর্শনীয় স্থানটি দেখতে গেলেও ভোগান্তির কোন শেষ
থাকে না। তাই দ্রুত সড়কটি প্রশস্তসহ সংস্কারের দাবী জানান পর্যটক ও
পর্যটন শিল্পেরসাথে থাকা সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, কুয়াকাটার  অন্যতম দর্শনীয় স্পট রাখাইন
বৌদ্ধবিহার মিস্ত্রিপাড়া প্রায় ১০ কিলো রাস্তা যাতায়েতের জন্য খুবই বেহাল
দশায় পরিনিত হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকরা এই ধংসযজ্ঞে  সড়কটি
দিয়ে আসা যাওয়া করছে। আর সংস্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপরে ব্যাপক দ¦ায়ীত্ব
নিয়ে অভিযোগ তুলেন। দেশের গ্রুত্বপূর্ন একটি পর্যটন কেন্দ্র এই ভাবে
দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি নাজুক হয়ে পড়ে আছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন আগত
পর্যটকরা।কুয়াকাটা মহাসড়ক সংযুক্ত বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাশ দিয়ে
বঙ্গবন্ধু রোড হয়ে মিস্ত্রিপাড়া পর্যন্ত তিনটি মাধ্যমিক ও ৩টি প্রাইমারী
স্কুল রয়েছে এই একটি মাত্র পাকা সড়ক দিয়ে চরম ভোগান্তিতে চলাচল করতে হয়
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।

রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক সাদ্দাম হোসেন বলেন, কুয়াকাটায় ঘুরতে এসে সাগরে
গোসল করার পরে অন্য স্পটগুলো দেখার জন্য বৌদ্ধবিহরের দিকে রাস্তায় যেতে
চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়, সুন্দর একটি জায়গা শুধু ভাঙ্গা রাস্তার কারণে
পর্যটকরা আসছেনা, খারাপ লাগছে সড়কটি অনেকাংশেই ভাঙ্গা তাই প্রচুর
কষ্টকরে আসতে হয়েছে এ নিদর্শনগুলো দেখতে, দ্রুত এ রাস্তাটা সংস্কার ও
প্রশস্ত করা দরকার।

ইতালী প্রবাসী পিংকি মো: সেলিম সিকদার জানান, ফ্যামিলিসহ কুয়াকাটা এসে
২দিন রাখাইনদেও প্রাচীর  বৌদ্ধবিহারের নাম শুনে আসলাম আসতে যে কষ্ট হয়েছে
প্রাইভেট গাড়ী রেখে ভ্যানে যেতে হয়েছে, চরম ভোগান্তি হয়েছে, দর্শণীয়
স্থান রাখাইন মার্কেট ও শুটকী পল্লী রয়েছে, যা খারাপ যোগাযোগ ব্যবস্থার
কারনে যাওয়া যাচ্ছেনা।

মিস্ত্রীাড়ার বড় ব্যবসায়ী সিকান্দার হাওলাদার বলেন, কুয়াকাটার
গুরুত্বপূর্ন স্পট দেখে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি ব্যবসা
প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু মহামারি দুর্যোগ করোনার কারণে গত ২ বছরে যে ক্ষতি
হয়েছে তা  এখনো পুষিয়ে উঠতে পারিনি। এখন রাস্তা খারাপ হওয়ায় ট্যুরিস্ট
আসতে পারছেনা। এজন্য দিন খুব খারাপ যাচ্ছে।

কুয়াকাটার সমাজসেবক মো: মতিউর রহমান বলেন, গত ৬ বছর হলো এই রাস্থার
কার্পেটিং করছে স্থানীয় সরকার  বিভাগ এখন এ রাস্তা এতটাই নাজুক তা ভাষায়
প্রকাশ করতে পারছি না, পর্যটক তো দুরের কথা স্থানীয়রাও চলতে পারছে না ।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট আ্যাসোসিয়েশন কুটুমের যুগ্ন-সম্পাদক
জাকারীয়া জাহিদ বলেন, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা এখানে এসে বেশী ট্যুর করেন
মিস্ত্রীপাড়া বৌদ্ধবিহারে প্রতিদিন শতশত পর্যটক আর শুক্র শনীবার হাজার
হাজার বলাচলে কিন্ত আজ ২ বছর যাবৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন  অন্য দিকে এই
সড়কটাকে প্রশস্ত করা ও রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে ২টি মাইক্রোবাস
ক্রোসিং করতে পারছেনা,  তাই জরুরী ভিত্তিতে এ ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেতে
চাই।

কলাপাড়া উপজেলার নিবার্হী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোহর আলী দৈনিক মানবজমিনকে
জানান, আমরা দেখেছি ওই রাস্তা ভেঙ্গে গেছে যাতায়েত করতে খুবই সমস্যা
হচ্ছে, তাই আমরা পিডি মহাদ্বয়ের কাছে একটি প্রোপজল পাঠিয়েছি আশা করছি খুব
শীঘ্রই রাস্তার কাজটি শুরু হবে।




error: Content is protected !!