মিঠুন গোস্বামী রাজবাড়ীঃ
কোন প্রকার ট্রেন্ডার, কোটেশন ছাড়াই রাস্তার লাখ লাখ টাকার শত শত সরকারি গাছ কাটা হচ্ছে প্রকাশে। অন্যদিকে কতৃপক্ষ রয়েছে নির্বিকার।
যেন ‘সরকারি মাল দারিয়ামে ঢাল’ অবস্থা। গত কয়েক দিনে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মূল্যবান মেহগনি, কড়াই, আমসহ রাস্তার ধারের সব তাজা গাছ কেটে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও ইউপি চেয়ারম্যান।
গাছ কেনা বেচার ধুম পড়েছে, নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন স’মিলে। এ দৃশ্য রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা সরিষা ইউনিয়নে। ইউনিয়নের কুদ্দুসের মোড় থেকে বাগলি বাজার সড়কটির প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তার গাছে গত ১৫ দিন ধরে কাটা হচ্ছে। এখনো গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রতিদিন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাংশা উপজেলা সরিষা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের কুদ্দুস মোড় থেকে বাগলি বাজারের দীর্ঘ ৫ কিলোমিটারের পাকা সড়কের দুই পাশের মূল্যবান মেহগনি, কড়াই, আমসহ অন্যান্য গাছ কাটা হয়েছে। কিছু কিছু গাছের গুড়ি রাস্তার পাশে পড়ে আছে। বেশিরভাগ গাছের গুড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবার কিছু কিছু গাছ কাটা হচ্ছে।
স্থানীয় আব্দুল বারিক বিশ্বাস বলেন, চেয়ারম্যানের নিদ্দেশে আমরা যার যার রাস্তার মাথার জমির উপর থেকে গাছ বিক্রি করে দিছি। শুনেছি রাস্তা আরও বড় হবে এজন্য চেয়ারম্যান বলছে গাছ কেটে নিতে। আমি ১৪ টি আম গাছ বিক্রি করছি ৫০ হাজার টাকায়।
বাগলি গ্রামের ভ্যান চালক নজরুল ইসলামের স্ত্রী বলেন, রাস্তার পাশে আমার জমির মাথা থেকে গাছ কাটা হচ্ছে তবে আমরা বিক্রি করি নাই। এটা চেয়ারম্যান বিক্রি করছে। আমি শুধু একটা বেলগাছ বিক্রি করছি ১হাজার টাকায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী বলেন, শুনেছি চেয়ারম্যান এই সব গাছ বিক্রি করছে। এগুলো না কি সরকারি গাছ,এগুলো আর আমাদের নাই। এই গাছ বিক্রির টাকা সরকারের কাছে চলে যাবে।
সরিষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমল আল বাহার বিশ্বাস বলেন, আমি রাস্তা আরও বড় করা হবে। এজন্য রাস্তার পাশে যাদের জমি তাদের গাছ কেটে নিতে বলছি। তবে আমি নিজে কোন গাছ বিক্রি করি নাই। এমনকি কারো কাছ থেকে ১ কাপ চাও খাই নাই। আমার বিরুদ্ধে যদি কেউ কিছু বলে থাকে তবে তা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে বলছে।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, রাস্তার গাছ কাটা হছে এ বিষয়ে আমাকে কেউ অভিযোগ করে নাই। চেয়ারম্যান গাছ কাটার অনুমতি দিতে পারেন কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন চেয়ারম্যান গাছ কাটার অনুমতি দিতে পারেন না। রাস্তার পাশের ৩ ফিটের মধ্যে কোন গাছ থাকলে সেটা সরকারি গাছ হয়ে যায়। এটা কেউ চাইলেই কাটতে পারে না। আমাকে গাছ কাটার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।