দীর্ঘ এক যুগ পর অনুষ্ঠিত হল জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ॥
দীর্ঘ ১ যুগ পর আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগ কুষ্টিয়া জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বেলা ৪টায় কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমীর মিলনায়তনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাবু ও পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) সেলিম রেজা।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি। উদ্ধোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু। বিশেষ অতিথি ছিলেন, কুষ্টিয়া-১ আসনের সাংসদ আঃ কাঃ মঃ সরওয়ার জাহান বাদশা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী। কেন্দ্রীয় আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি সৈয়দ নাসির উদ্দীন ও কাজী সাহানারা ইয়াসমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল সায়েম। শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. আ স ম আক্তারুজ্জামান মাসুম, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডাঃ আমিনুল হক রতন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ফারুকউজ্জামান, এ্যাড. শেখ হাসান মেহেদী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাযহারুল আলম সুমন সহ দলীয় অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলনে অংশ গ্রহনের আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি তারণ্যের সমাবেশ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের উদ্যেশে বলেন, ১২ জুলাই ঢাকায় বিএনপির বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে সমাবেশ করতেই পারে। আমাদের দেশে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করাই কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। আমাদের সরকার গণতান্ত্রিক সরকার সেই হিসেবে রাজনৈতিক কমৃসূচি পালনের সমান সুযোগ সবাই পাচ্ছে এবং এই সমাবেশের মধ্যেদিয়ে প্রমাণিত বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চা পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশে সফরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহনমূলক, অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করতে বদ্ধ পরিকর। আমাদের চাওয়া আর আমাদের বন্ধুদের চাওয়া তে তো কোন পার্থক্য নেই। এখানে কোন চাপের বিষয় বা অন্য প্রসঙ্গ আসতে পারেনা। কারন আমরা নির্বাচনটাকে অবাধ, সুষ্ট ও নিরপেক্ষ করতে বদ্ধ পরিকর। হানিফ বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দরিদ্র বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই উন্নয়নশীল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমাদের বিদেশী অনেক বন্ধুদের সহায়তা আমাদের প্রয়োজন হয়েছে। আমাদের এখানে উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে অনেক বিদেশী বন্ধু আছে। আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে তারা যদি মনে করেন নির্বাচনটা অবাধ ও সুষ্ঠ হলে ভালো হয় এটাতো দোষের কিছু নেই। তাদের মনে করাটা আর আমাদের প্রত্যয় দুইটা তো একই। অতএব এখানে কোন সমস্যতো দেখিনা। হানিফ বলেন, বিএনপি তো বরাবরই বিদেশী ষড়যন্ত্রের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের জনগণ যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনার পাশে আছেন ততদিন কোন ষড়যন্ত্রই কোন সফলতা লাভ করবে না। সমাবেশের নাম করে, রাজনৈতিক কর্মসূচির নাম করে কেউ যদি কোন বিশৃংখলা বা কোন নাশকতা কর্মকান্ড করে সেগুলোকে কঠোরভাবে দমন করা হবে বলেও হুশিয়ারী দেন হানিফ। এছাড়াও সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন মূলক কাজের কথা তুলে ধরে জনগনের কাছে যেয়ে নৌকায় ভোট চাইতে হবে।
সম্মেলনকে ঘিরে শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যানার ফেসটুনে সজ্জিত ছিলো। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে আগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ২য় অধিবেশনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জেলা কমিটিতে আসতে ইচ্ছুক, তাদেরকে নাম প্রস্তাবের কথা জানালে, এতে আগের কমিটির সভাপতি সহ ৮জনের নাম প্রস্তাবিত হয়। অপর দিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ জনের নাম প্রস্তাবিত হয়। দুটি পদের পেছনে দুই ডজন প্রার্থী হওয়ায় প্রার্থীদের একত্রিত হয়ে মত প্রকাশ করার আহব্বান করা হয়। প্রার্থীর মধ্যে কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়, এমন সিদ্ধান্তে কমিটি ঘোষণা বন্ধ রেখে সম্মেলন শেষ হয় এবং পরে আলোচনা সাপেক্ষে কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানান।