নবীগঞ্জে শিশু কন্যাকে ধর্ষনের মামলায় আসামী পক্ষে শালিসনামা দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান॥ সর্বত্র তীব্র প্রতিক্রিয়া৷ পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের৷
নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের গাড়ি চালকের শিশু কন্যাকে ধর্ষনের মামলায় আসামী পক্ষে তথাকথিত শালিশনামা দিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে সর্বত্র ও সুশীল সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ অভিযোগে উল্লেখ ও ধর্ষিতার পিতা জানান, নবীগঞ্জ শহরের শিবপাশা এলাকার গৌছ মিয়ার পুত্র শেফন মিয়া পুলিশ সুপার বরাবরে একটি অভিযোগে উল্লেখ করেন এবং স্থানীয় সংবাদকর্মীদের বলেন,তার একটি কন্যা সন্তান বয়স অনুমান (৮)। উক্ত কন্যা সন্তান জন্মের পরপরেই এক বছর পর তার স্ত্রী কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি অনেক কষ্ট করে কন্যা সন্তানকে লালন পালন করেন।
তিনি সংসার জীবন ও শিশু মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ২য় বিবাহ করেন। তিনি পেশায় একজন গাড়ি চালক হওয়ায় বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে ড্রাইভিংয়ে কর্মরত ছিলেন এবং চাকুরির সুবাধে তিনি স্থী সন্তান নিয়ে কুর্শি ইউনিয়নের কল্যাণ পুর বাজারে ভাড়াটে বাসায় থাকতেন, গত ৩০/০৮/২০২৩ ইং তারিখে ঘটনার সময় তার মেয়ে ভিকটিমকে কল্যাণ পুর গ্রামের গ্রামের আবু বকর(২০) নামের যুবক ধর্ষণ করে। এসময় ভিকটিমের সুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন সেখানে যাইয়া দেখিতে পায় যে, ধর্ষক আবু বকর মিয়া তার মেয়ে ভিকটিমকে ধর্ষনের ফলে তার গোপনাঙ্গ দিয়া রক্তক্ষরণ হইতে থাকে। স্থানীয় লোকজন আসার সাথে সাথেই সে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনাটি তার স্ত্রী মোবাইল ফোনে জানালে বাড়িতে আসিয়া মেয়েকে গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করান। উক্ত ঘটনা নিয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে নবীগঞ্জ থানা কর্তৃপক্ষ তাকে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন।
প্রভাবশালী ধর্ষকের আত্মীয় ১নং বিবাদী ফজলুল হক চৌধুরী সেলিমের উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে তাকে নানা ভাবে হুমকী ধামকী দেন। এমনকি মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে বিষয়টি আপোষে মিমাংসা করার প্রস্তাবে দেন। কিন্তু শেফন মিয়া তার মেয়ের ভবিষৎ চিন্তা করে ও ঘটনার সুবিচার প্রার্থী হয়ে বিবাদীদের প্রস্তাবে রাজি হননি৷ পরবর্তীতে বিগত ১৩/০৯/২০২৩ইং তারিখে হবিগঞ্জ মাননীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ আদালতে তিনি মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে বিবাদীগণ তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে নানাভাবে তাকর প্রাণনাশের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞ আদালতে দায়েরকৃত
মামলার অভিযুক্ত আসামী আবু বক্করকে বাচাঁতে উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম অবৈধ ফায়দা হাসিল করিয়া উক্ত ধর্ষনের ঘটনায় গত ১০/১২/২০২৩ইং তারিখ এবং স্মারক নং ৪৯ মূলে একটি তথাকতিত সালিশনামা দিয়ে আসামী বাঁচানোর চেষ্টা করেন। বাদী কর্তৃক বিজ্ঞ আদালতে দায়েরকৃত মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন পিবিআই হবিগঞ্জ তদন্ত করছেন।
এ ঘটনার জের ধরে গত ২৭/০৪/২০২৪ তারিখে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আউশকান্দিতে ১নং বিবাদী সেলিম গং আসামীরা তাকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করার হুমকী দেয় । সচেতন নাগরিক মহলে এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা অনেকেই বলেন, শিশু ধর্ষন মামলায় ভিন্নপথ অবলম্বন করে কিভাবে সেলিম চেয়ারম্যান বাদীর স্বাক্ষর ও মতামত ছাড়াই তথাকথিত শালিসনামা দিলেন